চাপের মুখে বরিস জনসন

বরিস জনসন
ফাইল ছবি: রয়টার্স

ব্রিটিশ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের স্বামী ও ডিউক অব এডিনবরা প্রিন্স ফিলিপের শেষকৃত্যের আগের সন্ধ্যায় দুটি অনুষ্ঠান আয়োজনের ঘটনায় যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের ওপর চটেছেন তাঁর দলের এমপিরা। এর আগে এ ঘটনায় বুধবার রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের কাছে ক্ষমা চান তিনি। কিন্তু এরই মধ্যে নিজ দল ও বিরোধী দলের নেতারাও বরিসের এমন কাজে ক্ষুব্ধ। অনেকে মনে করছেন, এই মুহূর্তে বরিস জনসন পদে থাকারও যোগ্যতা হারিয়েছেন। খবর বিবিসির।

গত বছরের ১৭ এপ্রিল ফিলিপের শেষকৃত্য হয়। তার আগের সন্ধ্যায় বরিস জনসনের যোগাযোগবিষয়ক পরিচালক জেমস স্ল্যাকের বিদায় উপলক্ষে ওই আয়োজন করা হয়। যদিও ওই সময় যুক্তরাজ্যজুড়ে ফিলিপের মৃত্যুতে জাতীয় শোক চলছিল।

এ সময় প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠান আয়োজন নিয়ে যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন দল কনজারভেটিভ পার্টির এমপি এবং সাবেক মন্ত্রী টোবিয়াস এলউড বলেছেন, বরিস জনসনকে হয় নেতৃত্ব দিতে হবে, নয়তো সরে যেতে হবে। তিনি আরও বলছেন, তাঁদের এখন নেতৃত্ব প্রয়োজন। এ ঘটনায় শতাধিক স্থানীয় ভোটার এই এমপির সঙ্গে যোগাযোগ করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

এদিকে ওই ঘটনায় জ্যেষ্ঠ বিচারক স্যু গ্রের তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত রায় নিয়ে মন্তব্য না করতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ব্রিটিশ সরকার।

নর্থ-ওয়েস্ট লিস্টারশায়ারের কনজারভেটিভ পার্টির এমপি অ্যান্ড্রু ব্রাইজেন বলেছন, ‘স্যু গ্রে কী বলবে, তা আমার জানার দরকার নেই। আমি এতটুকু বলব যে বরিস জনসন দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্যতা হারিয়েছেন।’

অ্যান্ড্রু বাইজেন পঞ্চম কনজারভেটিভ এমপি, যিনি প্রকাশ্যে ‘১৯২২ কমিটির’ কাছে এই বিষয়ে সুষ্পষ্ট ঘোষণা দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। ১৯২২ কমিটি মূলত কনজারভেটিভ পার্টির নেতৃত্ব নির্বাচনে কাজ করে থাকে। এর আনুষ্ঠানিক নাম কনজারভেটিভ প্রাইভেট মেম্বারস কমিটি। এ কমিটির কাছে যদি দলটির ৫৪ জন আইনপ্রণেতা চিঠি লেখেন, তবে বরিসের নেতৃত্ব চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে।

টোবিয়াস এলউড বার্নিমাউথ ইস্টের এমপি এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী। তিনি এই ঘটনার জন্য জনসনকে অনুশোচনা প্রকাশ করতে বলেছেন। পাশপাশি তিনি এ-ও বলেছেন, এমন পরিস্থিতি মোকাবিলা করার দরকার ছিল বরিস জনসনের। আর এটা করতে না পারলে তাঁকে দায়িত্ব থেকে সরে যেতে হবে।

আরেক সাবেক মন্ত্রী বিবিসিকে বলেছেন, ‘বরিস জনসন ভয়াবহ পরিস্থিতিতে পড়েছেন। আপনি চিফ হুইপ হলে তাঁকে বলবেন, “তুমি এই কাজ কিংবা সরকারের যেকোনো কাজ করার উপযুক্ত নও।” আপনি তাঁকে একজন কনিষ্ঠ মন্ত্রী বানাতেও রাজি হবেন না। কারণ, তিনি ঠিকমতো কাজ করতে পারেন না।’

এদিকে জ্যেষ্ঠ এক এমপি বলেছেন, বরিস জনসনের দায়িত্ব অন্য কেউ নিতে পারেন, এমন অনেক কানাঘুষা চলছে। ডাউনিং স্ট্রিটের এ–সংক্রান্ত ই-মেইলে ইনবক্স ভরে উঠেছে বলে দাবি করেছেন টরি পার্টির বেশ কিছু এমপি।

কনজারভেটিভ পার্টির একজন জ্যেষ্ঠ এমপি বলেছেন, দলের ভেতর থেকে কমপক্ষে দুই শতাধিক ক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীর ই-মেইল পেয়েছেন তাঁরা, যার মধ্যে মাত্র পাঁচটি মেসেজ রয়েছে, যেখানে প্রধানমন্ত্রীকে সমর্থন করা হয়েছে। তিনি আরও বলেছেন, এখন দলের অনেকেই মনে করছেন, আগামী নির্বাচনে বরিস জনসন নেতা হতে পারবেন না। এটা তাঁদের অনেকের জন্যই হতাশাজনক।