এরদোয়ানের সমালোচক কাভালার যাবজ্জীবন সাজা

ব্যবসায়ী ওসমান কাভালাকে ২০১৭ সালের অক্টোবরে গ্রেপ্তার করা হয়
ফাইল ছবি এএফপি

তুরস্কের শীর্ষস্থানীয় অধিকারকর্মী (অ্যাকটিভিস্ট) ওসমান কাভালাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির একটি আদালত। রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের সরকারকে উৎখাতচেষ্টার বিতর্কিত মামলায় গতকাল সোমবার তাঁকে এ সাজা দেওয়া হয়। এ মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আগেই চার বছরের বেশি সময় ধরে কারাগারে আছেন তিনি। খবর এএফপির।

তিন বিচারকের প্যানেল আরও সাত আসামির প্রত্যেককে ১৮ বছর করে কারাদণ্ড দেন। ২০১৩ সালে বড় ধরনের বিক্ষোভের সময় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী এরদোয়ানের সরকার উৎখাতচেষ্টায় সহযোগিতার দায়ে তাঁদের এ সাজা দেওয়া হয়।

তুরস্কের প্রধান মিত্রদেশগুলোর কয়েকটির পাশাপাশি অধিকারকর্মীরা তাৎক্ষণিক এই রায়ের নিন্দা জানিয়েছে। ইস্তাম্বুলের জনাকীর্ণ আদালতকক্ষে কয়েকজনকে অশ্রুসিক্তও দেখা যায়।

ওয়াশিংটন বলেছে, অন্যায়ভাবে দোষী সাব্যস্ত করে দেওয়া রায়ে তারা খুবই বিব্রত। এক বিবৃতিতে পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেন, ‘আদালতের রায়ে যুক্তরাষ্ট্র খুবই বিব্রত ও হতাশ।’

জার্মানি বলেছে, ৬৪ বছর বয়সী এই বুদ্ধিজীবী ও ক্যাম্পেইনারকে অবশ্যই অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। আঙ্কারার সঙ্গে সমন্বয়ের দায়িত্বে থাকা শীর্ষস্থানীয় দুই ইউরোপীয় পার্লামেন্টারিয়ান বলেছেন, দুঃখজনক এই রায় দেখিয়েছে বর্তমান তুরস্কের ইউরোপীয় দৃষ্টিভঙ্গি সামান্যই আছে।

কাভালাকে মুক্তি দিতে ইউরোপীয় মানবাধিকার আদালতের আদেশ আমলে না নিয়ে এই সাজা প্রদানের নিন্দা জানিয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ কূটনীতিক জোসেপ বোরেল। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ইউরোপের পরিচালক নিলস মুইজনিয়েকস বলেছেন, ‘আজ আমরা বিচারের নামে প্রহসনের প্রদর্শনী দেখলাম।’

ইস্তাম্বুলের পাশে একটি হাই সিকিউরিটি কারাগার থেকে ভার্চ্যুয়ালি আদালতের সঙ্গে যুক্ত হন কাভালা। তিনি পুরো প্রক্রিয়াকে ‘বিচারিক হত্যাকাণ্ড’ বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, রাজনৈতিক ও আদর্শিক কারণে এই ষড়যন্ত্রতত্ত্ব দাঁড় করানো হয়েছে।

নম্রভাষী ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত কাভালাকে ২০১৭ সালের অক্টোবরে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁকে হাঙ্গেরি বংশোদ্ভূত মার্কিন ধনকুবের জর্জ সোরোসের বামপন্থী চর আখ্যা দেন এরদোয়ান। সরকার উৎখাতে কাভালার বিরুদ্ধে বিদেশি অর্থ ব্যবহারের অভিযোগ আনেন তিনি।