এরদোয়ানের 'শত্রু' ফেতুল্লা গুলেন কে?

ফেতুল্লা গুলেন
ফেতুল্লা গুলেন

তুরস্কে গত শুক্রবার রাতের সেনা অভ্যুত্থানের পেছনে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী ধর্মীয় নেতা ফেতুল্লা গুলেনকে দায়ী করেছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ও প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদিরিম। যদিও গুলেন ও তাঁর সমর্থক যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংগঠন এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার নিন্দাও করেছেন।
স্বীকার-অস্বীকার যা-ই করুন, অভ্যুত্থানের ঘটনার পর ফেতুল্লা গুলেন আবার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। বিশ্বজুড়ে তাঁকে ঘিরে সৃষ্টি হয়েছে ঔৎসুক্য। এরদোয়ানের একসময়ের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ফেতুল্লা গুলেন একজন ইসলামপ্রচারক। তিনি এখন থাকেন যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের পোকোনো পার্বত্য এলাকার একটি ছোট শহরে। ১৯৯৯ সাল থেকে তিনি সেখানে আছেন। নিজ দেশ তুরস্কে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ ওঠার পর থেকেই তাঁর যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস।
সাম্প্রতিক সময়ে হিজমত নামে পরিচিত গুলেন সমর্থকদের আন্দোলন তুরস্কে বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠায় এরদোয়ান ও গুলেনের সম্পর্কের অবনতি ঘটে। তুরস্কের গণমাধ্যম, পুলিশ এবং বিচার বিভাগে এ আন্দোলন জনপ্রিয়তা পেয়েছে। আর এ বিষয়টি নিয়েই একসময়ের সহযোগী গুলেন পরিণত হয়েছেন এরদোয়ানের শত্রুতে।
২০১৩ সালে গুলেন-এরদোয়ান বৈরিতা একেবারে প্রকাশ্য হয়ে পড়ে। ওই বছর তুরস্কের বিচার বিভাগীয় কয়েকজন কর্মকর্তা প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের ছেলে বিলালসহ বেশ কয়েকজন ঘনিষ্ঠ ব্যক্তির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ধরেন। ওই বিচারিক কর্মকর্তারা গুলেন আন্দোলনের সমর্থক হিসেবে পরিচিত। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ এরদোয়ান পাল্টা আঘাত হানেন। তিনি সেনাবাহিনীর কয়েকজন উচ্চপদস্থ জেনারেল এবং বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করেন। এরদোয়ানের ‘শত্রুর’ প্রতি সহানুভূতিশীল হিসেবে পরিচিত কয়েকটি সংবাদপত্রও সরকারের রোষের শিকার হয়। এরদোয়ান সরকার ‘রাষ্ট্রের ভেতরে রাষ্ট্র’ প্রতিষ্ঠার অভিযোগ আনে হিজমতের বিরুদ্ধে। তবে হিজমতের নেতারা দাবি করেন, তাঁদের আন্দোলন গণতান্ত্রিক সংস্কার এবং আন্তধর্ম সংলাপে বিশ্বাস করে।

তুর্কি হিজমত শব্দের অর্থ সেবা। নেতাদের কথায়, সুফিবাদ এবং সব মানুষের সহাবস্থানের পক্ষে এ গোষ্ঠীর অবস্থান।