ইউক্রেনে হামলা যেভাবে বৈধ করতে চাইছেন পুতিন

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন
ফাইল ছবি: রয়টার্স

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে তাঁর একতরফা যুদ্ধ শুরু করার উদ্দেশ্য হিসেবে নিজ দেশের জনগণকে বলেছেন, তিনি দেশটির নিরস্ত্রীকরণ চান; পাশাপাশি চান এর সরকারকে নাৎসিবাদমুক্ত করতে।

প্রেসিডেন্ট পুতিনের দাবি, ইউক্রেন সরকার সেদিনের রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়ন্ত্রিত দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্কে ‘গণহত্যা’ চালাচ্ছে। এ দুই অঞ্চল একত্রে দনবাস নামে পরিচিত। ২০১৪ সাল থেকে এ অঞ্চলে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন ইউক্রেনের সেনারা।

দনবাসের কিছু অংশ রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীরা দখল করে নেওয়ার পরই মূলত শুরু রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যকার দ্বন্দ্ব-সংঘাতের। শুধু দখল করেই তাঁরা ক্ষান্ত থাকেননি; একপক্ষীয়ভাবে দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে গণপ্রজাতন্ত্র হিসেবেও ঘোষণা দিয়েছেন।

এর আগে কয়েক বছর ধরে ইউক্রেনের সেনাদের সঙ্গে এই বিচ্ছিন্নতাবাদীদের চলা লড়াই-সংঘাতে প্রায় ১৪ হাজার মানুষ প্রাণ হারান। তাঁদের মধ্যে যেমন রয়েছেন সেনাসদস্য ও বিদ্রোহী যোদ্ধা; তেমনি বেসামরিক লোকজনও।

ব্যাপক প্রাণহানির ওই ঘটনায় ২০১৫ সালেই প্রেসিডেন্ট পুতিন ‘গণহত্যার গন্ধ পাওয়ার’ কথা উল্লেখ করেন।

ওই বছরের শেষ দিকে প্রতিবেশী বেলারুশের রাজধানী মিনস্কে বিবদমান দুই পক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি সই হয়। তবে এর পর থেকে সাত বছর ধরেই বিভিন্ন সময় দনবাসের ইউক্রেনের সেনা ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এমনকি, সর্বশেষ গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার ‘শান্তিরক্ষা অভিযান’ শুরুর আগপর্যন্ত তা অব্যাহত ছিল।

রাশিয়া যুক্তি দেখিয়ে আসছিল, দনবাসের বাসিন্দাদের সঙ্গে যা হচ্ছে, তা আসলে গণহত্যা। এ অবস্থায় সেখানকার বাসিন্দাদের সহায়তা করতে পদক্ষেপ নেওয়া মস্কোর দায়িত্ব।

নিউজার্সির রটগার্স ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর দ্য স্টাডি অব জেনোসাইড অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের পরিচালক আলেকজান্ডার হিনটন বলেছেন, ‘বেসামরিক লোকজনের মধ্যে যেকোনো আকার বা ধরনেই ব্যাপক হত্যাকাণ্ড ঘটুক, তা আমাদের মনোযোগ পাওয়ার দাবি রাখে। গণহত্যা প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নৈতিক ও আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তাই বিশ্ববাসীর কাছে গণহত্যার আলাদা গুরুত্ব রয়েছে।’

গণহত্যার সংজ্ঞা

গণহত্যা শব্দটি গত শতকের চল্লিশের দশকে সামনে আনেন পোলিশ আইনজীবী রাফায়েল লেমকিন। গণহত্যাকে অপরাধ হিসেবে আখ্যায়িত করতে ১৯৪৮ সালে জাতিসংঘে তদবির করেন তিনি।

গণহত্যার একটি সংজ্ঞা দিয়েছে জাতিসংঘ। সেখানে বলা হচ্ছে, সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে একটি জাতি, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী বা ধর্মীয় গোষ্ঠীকে ধ্বংসের অভিপ্রায় নিয়ে করা কর্মকাণ্ডই গণহত্যা। এই সংজ্ঞায় শুধু ব্যাপক হারে লোকজনকে হত্যার বিষয়টিই তুলে ধরেনি জাতিসংঘ; পাশাপাশি তাদের জীবনযাত্রা ধ্বংস, মা–বাবার কাছ থেকে সন্তানকে বিচ্ছিন্ন ও আলাদাভাবে লালনপালন করা এবং গোষ্ঠীতে নতুন সদস্য জন্ম নেওয়ায় বাধা দেওয়ার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

গণহত্যাকে এক ব্যতিক্রমী জঘন্য ধরনের অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে; বিশেষ করে হলোকাস্টের পর। বিভিন্ন সময় বিরোধীপক্ষের বিরুদ্ধে এমন একটি শক্তিশালী অভিযোগ উঠতে দেখা গেলেও বিরল ক্ষেত্রে সেই পক্ষ জাতীয় সম্মানের বিষয় বিবেচনায় নিয়ে তা স্বীকার করে।

রাশিয়ার সেনাবাহিনীর হামলায় ইউক্রেনের সুমি শহরের একটি বিধ্বস্ত এলাকা
ছবি: রয়টার্স

রাশিয়ার তদন্ত

ইউক্রেনের দোনেৎস্ক ও লুহানস্কে চারটি গণকবর খুঁজে পাওয়ার ঘটনায় করা একটি ফৌজদারি মামলা গত ১৬ ফেব্রুয়ারি আবার সামনে আনে রাশিয়া। ওই দুই এলাকায় আদতে যা ঘটেছিল, তা গণহত্যা কি না, তা খতিয়ে দেখতে তদন্তের প্রতিশ্রুতি দেয় মস্কো।
এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত আনাতোলি আন্তোনভ ফেসবুকে প্রশ্ন রাখেন, ‘আবাসিক এলাকায় ইউক্রেনের সেনাদের গোলাবর্ষণ অথবা লুহানস্কের কাছে প্রায় ৩০০ বেসামরিক লোকের কয়েকটি গণকবরের সন্ধান পাওয়া; যাদের মাতৃভাষার কারণে রুশ মনে করে হত্যা করা হয়েছিল; এর ব্যাখ্যা কী হতে পারে?’

একই সঙ্গে ইউক্রেনের দনবাসের ‘গণহত্যায়’ ওয়াশিংটনের সমর্থন ছিল বলে অভিযোগ করেন আনাতোলি আন্তোনভ। এর আগে সেখানে ইউক্রেনীয় সেনাদের নৃশংসতার বিষয়টি জাতিসংঘে তুলেছিলেন রুশ রাষ্ট্রদূত। তবে রাশিয়ার এসব অভিযোগ বরাবর উড়িয়ে দিয়েছেন মার্কিন কর্মকর্তারা। তাঁদের দাবি, এগুলো মস্কোর মিথ্যা প্রচার প্রচারণা।

গণহত্যা বিষয়ে রাশিয়ার মানবাধিকার আইনজীবী নাতালিয়া সেকরেতারেভা আল-জাজিরাকে বলেন, কোনো সংঘাতে যদি ব্যাপকভাবে বেসামরিক লোকজন হতাহত হওয়ার ঘটনা না ঘটে, শুধু কিছু মানুষ হতাহত হয়, সে ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের অধীন তা মেনে নেওয়া যেতে পারে। এই সংজ্ঞার বাইরে প্রেক্ষাপট বিবেচনায় অন্য হামলাগুলোয় যুদ্ধাপরাধ, মানবতাবিরোধী অপরাধ অথবা গণহত্যার মতো ঘটনা ঘটতে পারে।

গণহত্যাকে কীভাবে সংজ্ঞায়িত করা যেতে পারে, সে বিষয়ে এই আইনজীবী জাতিসংঘের দেওয়া সংজ্ঞাটিই আবার তুলে ধরেছেন। তাঁর ভাষ্য, কোনো একটি গোষ্ঠীকে একেবারে নির্মূল করে দেওয়ার উদ্দেশ্যেই শুধু গণহত্যা চালানো হয়।

নাতালিয়া সেকরেতারেভা মনে করেন, দনবাসের ইউক্রেন গণহত্যা চালিয়েছে—এমন দাবি করার আগে দেশটির সরকার যে ওই এলাকায় নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীকে (রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের) ধ্বংসের উদ্দেশ্যে কাজ করেছে, তা রাশিয়াকে প্রমাণ করতে হবে।

নাতালিয়ার প্রশ্ন, ‘সত্যটা হলো সশস্ত্র সংঘর্ষের সময় যে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে, তাকে গণহত্যা বলা যায় না। বিশেষ করে ওই এলাকা (দনবাস) ২০১৫ সাল থেকে ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণে নেই। একটি দেশ কীভাবে এমন এলাকায় গণহত্যা চালাতে পারে, যেখানে তারা ঢুকতে পারে না?’

কোনো সংঘাতে যদি ব্যাপকভাবে বেসামরিক লোকজন হতাহত হওয়ার ঘটনা না ঘটে, শুধু কিছু মানুষ হতাহত হয়, সে ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের অধীন তা মেনে নেওয়া যেতে পারে। এই সংজ্ঞার বাইরে প্রেক্ষাপট বিবেচনায় অন্য হামলাগুলোয় যুদ্ধাপরাধ, মানবতাবিরোধী অপরাধ অথবা গণহত্যার মতো ঘটনা ঘটতে পারে।
—নাতালিয়া সেকরেতারেভা, রাশিয়ার মানবাধিকার আইনজীবী

গণহত্যা নিয়ে রাশিয়ার প্রতিবেদন

ইউক্রেনে গণহত্যা নিয়ে একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করে রাশিয়ার রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম আরটি। দনবাসের চালানো নৃশংসতা নিয়ে জাতিসংঘে রুশ রাষ্ট্রদূতদের তোলা বিষয়গুলো রয়েছে সেখানে। এ ছাড়া প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ানে গোলাবর্ষণ, রকেট হামলা ও গোলাগুলিতে বেসামরিক লোকজনের হতাহত হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে।

প্রতিবেদনে উঠে আসা চিত্রের বেশির ভাগই ছিল ২০১৪ থেকে ২০১৫ সালের। সে সময় দনবাস নিয়ে সংঘাত চরম পর্যায়ে ছিল। তবে সাম্প্রতিক সময়ের কিছু বয়ানও প্রতিবেদনে রয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আরটির প্রতিবেদনে প্রত্যক্ষদর্শীদের দেওয়া তথ্যে দনবাসের বাসিন্দাদের মর্মান্তিক দুর্ভোগের চিত্র উঠে এসেছে। তবে সংঘাতে জড়িত দুই পক্ষেই বেসামরিক লোকজনের যে ক্ষতি হয়েছে, সে বিষয়ে প্রশ্ন তোলার তেমন সুযোগ নেই। এরপরও প্রতিবেদনে এমন চিত্র দেখা যায়নি, যাতে এই ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে রুশভাষীদের বিরুদ্ধে ইউক্রেন সেনাদের অভিযান ছিল তাদের নির্মূল করতে সংগঠিত প্রচারণার অংশ।

আরও পড়ুন

রটগার্স ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর দ্য স্টাডি অব জেনোসাইড অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের পরিচালক আলেকজান্ডার হিনটন বলেন, ২০১৪ সাল থেকে এটা বেশ পরিষ্কারভাবেই নথিভুক্ত হয়ে আছে, দনবাসের দুই পক্ষই (ইউক্রনের সেনাবাহিনী ও রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদী) মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। একই সঙ্গে নিরপরাধ লোকজনকে হত্যা ও নির্যাতন করা হয়েছে।

দনবাসের গণহত্যা চালানো হয়েছে—সে বিষয়ে কোনো শক্ত প্রমাণ নেই বলে মনে করেন আলেকজান্ডার হিনটন। তাঁর ভাষ্য, ‘গণকবর ও বেসামরিক লোকজনের ওপর হামলার বিষয়ে রাশিয়া অস্পষ্ট তথ্য দিয়েছে। তাদের কাছে যদি প্রমাণ থাকত, আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন, রাশিয়া তা অনেক আগেই সামনে আনত।’

দনবাসের ইউক্রেনের সেনাবাহিনী ও জাতীয়তাবাদী বাহিনীগুলো যুদ্ধাপরাধ করেছে—এমন অভিযোগ এনে ২০২১ সালে ইউরোপের মানবাধিকার আদালতে একটি মামলা করে রাশিয়া। ঘটনা তদন্তে দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক গণপ্রজাতন্ত্রে বিশেষ কমিটিও গঠন করে দেশটি। এসব অঞ্চলে গণকবর থেকে ২৯২টি মরদেহ উদ্ধার করা হয় বলে জানায় কমিটিগুলো।

তবে বিষয়টি নিয়ে ইউক্রেনের সংস্থা ট্রুথ হাউন্ডস বলছে, শুধু একটি সাক্ষাৎকারে এক ব্যক্তি দাবি করেছিলেন, তাঁর ভাইয়ের কবর সেখানে দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে অন্য কারও পরিবারের সদস্যদের কোনো বয়ান স্বাধীন গণমাধ্যম, তদন্ত কিংবা সাক্ষাৎকারে উঠে আসেনি।

গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও জাতিগত নিধন বন্ধ করতে ২০০৫ সালে রেসপনসিবিলিটি টু প্রটেক্ট (পিটুপি) নীতি গ্রহণে একমত হয় জাতিসংঘের সব দেশ। ২০১১ সালে লিবিয়ায় পিটুপি জারি করা হয়। সে সময় দেশটিতে স্বৈরশাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ চলছিল। পিটুপির আওতায় লিবিয়ার আকাশকে উড্ডয়ননিষিদ্ধ এলাকা (নো-ফ্লাই জোন) ঘোষণা করে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো।
আরও পড়ুন

সুরক্ষা দেওয়ার দায়িত্ব

গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও জাতিগত নিধন বন্ধ করতে ২০০৫ সালে রেসপনসিবিলিটি টু প্রটেক্ট (পিটুপি) নীতি গ্রহণে একমত হয় জাতিসংঘের সব দেশ। ২০১১ সালে লিবিয়ায় পিটুপি জারি করা হয়। সে সময় দেশটিতে স্বৈরশাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ চলছিল। পিটুপির আওতায় লিবিয়ার আকাশকে উড্ডয়ননিষিদ্ধ এলাকা (নো-ফ্লাই জোন) ঘোষণা করে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো।

লিবিয়ায় পিটুপি নীতি বেসামরিক লোকজনকে রক্ষায় জারি করা হয়। পরে তা মূল উদ্দেশ্যকে পাশ কাটিয়ে দেশটিতে ক্ষমতার পরিবর্তনকে সহজ করেছিল। ইউক্রেনেও পুতিনের লক্ষ্য ক্ষমতার বদল ঘটানো। দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে গদিচ্যুত করতে এরই মধ্যে ইউক্রেন সেনাদের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

রাশিয়ার হাতে যদি গণহত্যার সপক্ষে প্রমাণ থাকে, তাহলে দেশটি কেন তাদের দাবি জাতিসংঘে পাকাপাকিভাবে তোলেনি? রাশিয়ার এমনটিই করা উচিত ছিল বলে মনে করেন আলেকজান্ডার হিনটন।

হিনটনের ভাষ্য, রুশ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও ভাষাভাষীদের ওপর ইউক্রেন হামলা করছে বলে দাবি করছে রাশিয়া। এদের রক্ষা করার বাধ্যবাধকতা রাশিয়ার রয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটি। মস্কোর এ বক্তব্য যৌক্তিক বলে মনে হতে পারে। কিন্তু আবারও বলতে হয়, নিজেদের দাবির পক্ষে শক্ত প্রমাণ দেয়নি তারা। এর কারণ মস্কোর উদ্দেশ্য জীবন বাঁচানো না; বরং ইউক্রেন দখল করা।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন
আরও পড়ুন