ইইউয়ের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে জার্মান চ্যান্সেলরের সঙ্গে পুতিনের বৈঠক
বিয়ের অনুষ্ঠানে অস্ট্রিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে নেচে এরই মধ্যে বিশ্ব গণমাধ্যমে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রুশ প্রেসিডেন্ট। তবে শুধু বিয়ের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েই মস্কো ফিরে যাননি ভ্লাদিমির পুতিন; অস্ট্রিয়া থেকে গেছেন জার্মানি। সেখানে চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন পুতিন। আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।
২০১৪ সাল থেকেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না। ওই বছর ইউক্রেনের কাছ থেকে ক্রিমিয়া উপদ্বীপ দখল করে নিয়েছিল রাশিয়া। এ ছাড়া মালয়েশিয়ান এয়ারলাইনসের যাত্রীবাহী উড়োজাহাজে রকেট নিক্ষেপ করে ভূপাতিত করা, সিরিয়ায় রুশ যুদ্ধবিমানের বোমা বর্ষণ, সাইবার আক্রমণ ইত্যাদি বিষয়গুলো নিয়ে বিগত বছরগুলোয় ইইউয়ের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্কের টানাপোড়েন চলেছে।
ক্রিমিয়া উপদ্বীপ দখল করে নিজেদের অঞ্চল বলে ঘোষণা দেওয়ায় ইউরোপীয় কাউন্সিল রাশিয়ার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করে। ২০১৪ সাল থেকে শুরু হয়ে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে এই অবরোধ।
অস্ট্রিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বিয়ের আসর থেকে পুতিন সোজা এসেছেন জার্মানির মেসেবের্গে। রাজধানী বার্লিনের অনতিদূরে মেসেবের্গ। জার্মানির রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবনে দুই ঘণ্টা আলোচনা করেন পুতিন-ম্যার্কেল। কথিত আছে, ইইউয়ের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন থাকলেও জার্মানির চ্যান্সেলরের সঙ্গে ভ্লাদিমির পুতিনের বেশ সৌহ্যর্দতা রয়েছে। একদিকে রুশ ভাষায় পারদর্শী আঙ্গেলা ম্যার্কেল আর অন্যদিকে জার্মান ভাষায় পারদর্শী ভ্লাদিমির পুতিনের দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় কোনো দোভাষীর প্রয়োজন হয় না।
আলোচনার পর চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন বিষয় নিয়েই কথা বলেছি। নানা বিষয়ে মতপার্থক্য থাকলেও আলোচনা হয়েছে খুব আন্তরিক পরিবেশে। আলোচনাই অনেক সমস্যার সমাধানের দরজা খুলে দেয়।’
উল্লেখ্য, ১৭৮৩ থেকে ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত ক্রিমিয়া রাশিয়ারই অংশ ছিল। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রয়াত প্রেসিডেন্ট নিকিতা ক্রুশ্চেভ রুশ ভাষাভাষী ক্রিমিয়াকে ইউক্রেনের কাছে ছেড়ে দিয়েছিলেন ‘উপহার’ হিসেবে। ২০১৪ সালে ইউক্রেনের রুশপন্থী প্রেসিডেন্ট ইয়ানুকোভিচ ক্ষমতা ছেড়ে রাশিয়ায় পালিয়ে যাওয়ার কিছুদিন পরই ক্রিমিয়া দখলে নেয় রুশ সেনারা।