আইএসে যোগ দেওয়া তিন ছাত্রীর 'সহায়তাকারী' গ্রেপ্তার
জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটে (আইএস) যোগ দেওয়া তিন তরুণীকে তুরস্কের সিরিয়া সীমান্ত পাড়ি দিতে সহায়তা করার অভিযোগে গত বৃহস্পতিবার এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে তুরস্ক কর্তৃপক্ষ।
তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত ক্যাভুসোগলু গতকাল শুক্রবার দাবি করেন, গ্রেপ্তার হওয়া যুবক সিরিয়ার নাগরিক এবং তিনি আইএসবিরোধী আমেরিকান জোটের পক্ষভুক্ত একটি দেশের গুপ্তচর।
তবে তুরস্কের অ্যা হাবির নিউজ চ্যানেল তিন ব্রিটিশ তরুণীর তুরস্ক সীমান্ত পাড়ি দেওয়ার একটি গোপন ভিডিওচিত্র প্রকাশ করে জানিয়েছে, গ্রেপ্তার যুবকের নাম মোহাম্মদ আল রাশেদ (২৮)। তিনি কানাডার গোয়েন্দা সংস্থার চর হয়ে কাজ করছিলেন। চ্যানেলটি আরও জানায়, পেশায় দন্ত চিকিৎসক রাশেদ যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়া ছেড়ে প্রথমে জর্ডানে আশ্রয় নেন। সেখান থেকে কানাডায় রাজনৈতিক আশ্রয় পান। কানাডায় গিয়ে কয়েক মাস অবস্থানের পর আবার তিনি জর্ডানে ফিরে যান।
অ্যা হাবির টিভির জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক কুবিলে গুলবেগ জানান, তিনি জর্ডানের কানাডিয়ান দূতাবাসে ‘ম্যাট’ নামে এক কর্মকর্তার সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করেছেন। তুরস্কের গোয়েন্দারা ‘ম্যাট’কে ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থার কর্মী বলে মনে করছে। জর্ডান থেকে ‘ম্যাট’-এর হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে পাঠানো তথ্যের ভিত্তিতে রাশেদ কাজ করতেন। রাশেদের ল্যাপটপ থেকে উদ্ধার করা তথ্যের বরাত দিয়ে গুলবেক আরও জানান, রাশেদ আরও ১৪০ জন ব্রিটিশ নাগরিককে সীমান্ত পাড়ি দিতে সহায়তা করেছেন। রাশেদ আইএসের যে কমান্ডারের হাতে এসব নবাগতকে পৌঁছে দেন, ওই কমান্ডারও একজন ব্রিটিশ নাগরিক বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিশেষ সূত্রের বরাত দিয়ে অ্যা হাবির টিভি আরও জানায়, বেথনাল গ্রিন একাডেমির চার তরুণীই এখন আইএসের মজবুত ঘাঁটি রাকা শহরে একসঙ্গে অবস্থান করছে। তারা কথিত আইএস জিহাদিদের বিয়ে করেছে।
পূর্ব লন্ডন থেকে গত ডিসেম্বরে যে স্কুলছাত্রী সিরিয়ার জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসে যোগ দিয়েছিল, সেও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত। ১৫ বছর বয়সী ওই তরুণীর নাম শারমিনা বেগম। সম্প্রতি সিরিয়ায় পাড়ি দেওয়া তিন স্কুলছাত্রী শারমিনার প্ররোচনার শিকার বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই তিন ছাত্রীর মধ্যে শামীমা বেগম (১৫) এবং খাদিজা সুলতানা (১৬) বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত। অপরজন আমিরা আবাসি (১৫) ইথিওপিয়ান। চারজনই স্থানীয় বেথনাল গ্রিন একাডেমির শিক্ষার্থী এবং পরস্পর বন্ধু ছিল।
শারমিনার বাবা মোহাম্মদ উদ্দিন জানান, শারমিনার মা ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার পর শারমিনাকে উগ্রবাদীরা ‘টার্গেট’ করে। এরপর তার চলাফেরায় পরিবর্তন দেখা যায়। গত ডিসেম্বরে নিখোঁজ হওয়ার দুই সপ্তাহ পর ফোন করে শারমিনা জানায়, সে আইএসে আছে এবং আর কখনো ফিরবে না।