অবরুদ্ধ মারিউপোলে অস্ত্রবিরতি ঘোষণা রাশিয়ার

মারিউপোল শহরের বিধ্বস্ত একটি ভবনের সামনে রুশ-সমর্থিত বাহিনীর এক সেনাকে অবস্থান নিতে দেখা যাচ্ছে
ছবি: রয়টার্স

ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় অবরুদ্ধ বন্দরনগরী মারিউপোলে অস্ত্রবিরতি ঘোষণা করেছে রাশিয়া। বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে নিতে স্থানীয় সময় আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে এ অস্ত্রবিরতি শুরু হওয়ার কথা। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এ কথা জানিয়েছে। খবর বিবিসির।

‘এই মানবিক কাজটি সফল করতে শরণার্থী-বিষয়ক জাতিসংঘ হাইকমিশনারের দপ্তর এবং আন্তর্জাতিক রেডক্রস কমিটির সরাসরি অংশগ্রহণে এটি সম্পন্ন করার প্রস্তাব করেছি’—রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে উদ্ধৃত করে গতকাল বুধবার বার্তা সংস্থা এএফপি এ কথা জানিয়েছে। এদিকে মারিউপোল থেকে বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে নিতে আজ বৃহস্পতিবার ইউক্রেন সেখানে ৪৫টি বাস পাঠিয়েছে। ইউক্রেনের ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী ইরিনা ভেরেশচুক এ কথা জানান।

রুশ-নিয়ন্ত্রিত বন্দর বেরদিয়ানস্কের মধ্য দিয়ে মারিউপোল থেকে জাপোরিঝঝিয়ায় স্থানীয় সময় আজ সকাল ১০টায় এ মানবিক করিডর খুলে দেওয়া হবে। তবে এ ঘোষণার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি ইউক্রেন।

দুই পক্ষ থেকেই আস্থার সংকটের অভিযোগের মধ্যে মারিউপোলে অস্ত্রবিরতি কার্যকরের আগের উদ্যোগগুলো ভেস্তে যায়। হাজারো বেসামরিক নাগরিককে জোরপূর্বক রাশিয়া অথবা রাশিয়া-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে বলেও রাশিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে।

এমন সময় এ অস্ত্রবিরতির ঘোষণা এল, যখন স্যাটেলাইট থেকে তোলা নতুন ছবিতে গোলাবর্ষণে মারিউপোলে সৃষ্ট ধ্বংসযজ্ঞের চিত্র দেখা গেছে। মাক্সার প্রকাশিত এসব ছবিতে দেখা যায়, আবাসিক এলাকাগুলো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। শহরের উপকণ্ঠে রাশিয়ার গোলন্দাজ বাহিনীর কামানের অবস্থানও এতে দেখা যায়।

এদিকে সর্বশেষ গোয়েন্দা তথ্যের বরাত দিয়ে যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, চেরনিহিভ শহরের আশপাশে হামলা কমানোর পরিকল্পনার কথা জানালেও রুশ বাহিনীর গোলাবর্ষণ ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা লক্ষণীয়ভাবে অব্যাহত রয়েছে।

হালনাগাদ গোয়েন্দা তথ্যে সতর্ক করে বলা হয়, সামনের দিনগুলোতে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের উপকণ্ঠে ‘ব্যাপক লড়াই’ হতে পারে। কারণ, শহরের পূর্ব ও পশ্চিম দিকে এখনো রুশ বাহিনী তাদের অবস্থান ধরে রেখেছে, যদিও স্বল্পসংখ্যক ইউনিটকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। মারিউপোলে ব্যাপক লড়াই অব্যাহত রয়েছে। ইউক্রেনীয় বাহিনী এখনো শহরের নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছে।

গত মঙ্গলবার তুরস্কের ইস্তাম্বুলে ইউক্রেনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় কিয়েভ ও চেরনিহিভ শহরের আশপাশসহ কিছু এলাকায় সামরিক অভিযান ‘ব্যাপকভাবে কমানোর’ কথা বলেছিল রাশিয়া। তখন রাশিয়ার ওই ঘোষণাকে সতর্কতার সঙ্গে স্বাগত জানিয়েছিল ইউক্রেন।

ইউক্রেনের ন্যাটো সামরিক জোটে যোগদানের পদক্ষেপকে নিজেদের নিরাপত্তার জন্য হুমকি ঘোষণা দিয়ে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি দেশটিতে হামলা শুরু করে রাশিয়া। বৃহস্পতিবার এ যুদ্ধ ৩৬তম দিনে গড়িয়েছে। দুই দেশের কর্মকর্তারা দফায় দফায় বৈঠক করলেও সহসাই যুদ্ধ বন্ধের লক্ষণ দেখছেন না বিশ্লেষকেরা।