ফ্রান্সে পার্লামেন্ট নির্বাচনের প্রথম দফার ভোট গ্রহণ চলছে, কট্টর ডানপন্থীদের জয়ের আভাস

ফ্রান্সে পার্লামেন্ট নির্বাচনের ভোট গ্রহণ চলছেছবি: এএফপি

ফ্রান্সে আগাম পার্লামেন্ট নির্বাচনের প্রথম দফার ভোট গ্রহণ চলছে। আজ রোববার ফ্রান্সের মূল ভূখণ্ডে স্থানীয় সময় সকাল আটটা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। বিভিন্ন জনমত জরিপের আভাস, মেরিন লে পেনের নেতৃত্বাধীন কট্টর ডানপন্থী দল আরএন এবার প্রথমবারের মতো ক্ষমতায় আসতে যাচ্ছে।

জ্বালানি ও খাদ্যদ্রব্যের দাম অনেক বেড়ে যাওয়ায় ফ্রান্সের জনগণের মধ্যে অসন্তোষ বেড়েছে। প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ঠেকানোর আশ্বাস দেওয়ার পরও দেশটিতে অভিবাসনবিরোধী এবং কট্টর ডানপন্থী ন্যাশনাল র‌্যালি (আরএন) দলের প্রতি জনগণের সমর্থন বাড়তে দেখা গেছে।

ফ্রান্সের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদে ৫৭৭টি আসন আছে। দুই দফায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আজ টানা ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলবে। এর পরপরই বিভিন্ন বুথফেরত জরিপ প্রকাশ শুরু হবে। ৭ জুলাই দ্বিতীয় দফার ভোটের পরই নতুন পার্লামেন্টের আকার সম্পর্কে জানা যাবে।

ফ্রান্সে প্রায় ৪ কোটি ৯০ লাখ ভোটার আছেন। এর মধ্যে বিদেশে বসবাসকারী নাগরিকেরা আগেই ভোট দিয়েছেন।

নির্বাচনের আগে পরিচালিত বিভিন্ন জনমত জরিপে দেখা গেছে, জাতীয় পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পেতে যাচ্ছে আরএন। তবে দলটি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে কি না, তা বলা যাচ্ছে না।

জরিপে আভাস দেওয়া হয়েছে, নির্বাচনে অনেক ভোটার উপস্থিতি থাকবেন। আরএন ৩৫ থেকে ৩৭ শতাংশ ভোট পাবে। আর বামপন্থী জোট নিউ পপুলার ফ্রন্ট সাড়ে ২৭ থেকে ২৯ শতাংশ এবং বর্তমান প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁর মধ্যপন্থী শিবির ২০ থেকে ২১ শতাংশ ভোট পাবে।

আরএন যদি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়, তবে দলের প্রধান জর্দান বার্দেলা ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন। তিনি ২৮ বছর ধরে লে পেনের সঙ্গে আছেন। যদিও তাঁর শাসনক্ষমতা চালানোর কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই।

সম্প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নির্বাচনে খারাপ ফলের জেরে পার্লামেন্ট ভেঙে দেন মাখোঁ। একই সঙ্গে দেশটিতে আগাম নির্বাচনের ঘোষণাও দেন। তাঁর এ ঘোষণায় দেশটির অনেকেই হতবাক হন। এ ছাড়া ইউরোপের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটিতে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা দেখা দেয়।

ইউরেশিয়া গ্রুপের ইউরোপ প্রধান মুজতবা রহমান বলেন, ফ্রান্স এক বছরের রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা এবং ঝুলন্ত পার্লামেন্টের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ফ্রান্সের সাম্প্রতিক রাজনীতিতে এ ধরনের অচলাবস্থার কোনো নজির নেই বলে উল্লেখ করেন তিনি।

ইতিমধ্যে মাখোঁ বলেছেন, যে দলই জিতুক না কেন, তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁর বাকি মেয়াদ শেষ করবেন। ২০২৭ সাল পর্যন্ত তাঁর মেয়াদ আছে। প্রেসিডেন্ট হিসেবে এটি তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদ।