বন্দরে হামলাকে বর্বরতা বললেন জেলেনস্কি, শস্য চুক্তি নিয়ে সন্দিহান যুক্তরাষ্ট্র
ইউক্রেনের বন্দরনগরী ওডেসায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জন্য রাশিয়াকে দায়ী করে একে ‘বর্বরতা’ বলে উল্লেখ করেছেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। স্থানীয় সময় গতকাল শনিবার এ কথা বলেন তিনি। এদিকে হামলার ঘটনায় ইউক্রেন-রাশিয়া শস্য চুক্তি বাস্তবায়ন নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। খবর বিবিসির।
শস্য রপ্তানির জন্য কৃষ্ণসাগরের বন্দরগুলো খুলে দিতে গত শুক্রবার জাতিসংঘ-সমর্থিত একটি চুক্তি করে রাশিয়া ও ইউক্রেন। এ চুক্তির পর ২৪ ঘণ্টা না যেতেই ওডেসা বন্দরে হামলা হয়।
এ হামলার ব্যাপারে মস্কো কোনো মন্তব্য করেনি। কিয়েভ বলছে, চুক্তি লঙ্ঘিত হওয়ার পরও শস্য রপ্তানি শুরুর প্রস্তুতি চলছে।
তবে গতকাল জেলেনস্কি বলেছেন, চুক্তিতে অটল থাকার ব্যাপারে মস্কোকে কেন বিশ্বাস করা যায় না—এ হামলাই তার প্রমাণ। ভবিষ্যতে এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করার জন্য আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা অর্জন করতে তিনি সম্ভাব্য সবকিছু করার অঙ্গীকার করেছেন।
ইউক্রেন হলো বড় ধরনের শস্য রপ্তানিকারক। তবে যুদ্ধের কারণে বন্দরগুলোয় প্রায় দুই কোটি টন শস্য আটকে পড়ে। এতে আফ্রিকাজুড়ে খাদ্যঘাটতি দেখা দেয় এবং দাম বেড়ে যায়। গমের জন্য আফ্রিকা অঞ্চলের দেশগুলো সাধারণত রাশিয়া ও ইউক্রেনের ওর নির্ভরশীল।
শুক্রবারের চুক্তি অনুযায়ী, শস্যের চালান প্রস্তুত করার সময় বন্দরগুলোকে হামলার লক্ষ্যবস্তু না করার ব্যাপারে সম্মত হয়েছিল রাশিয়া। তবে চুক্তিটি স্বাক্ষরের কয়েক ঘণ্টার মাথায় ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী দক্ষিণাঞ্চলীয় কমান্ড সেন্টার ওডেসা বন্দরে দুটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হওয়ার কথা জানায়। আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ব্যবহার করে আরও দুটি ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। কমান্ড সেন্টার আরও বলেছে, হামলায় কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
এ হামলার ঘটনায় ব্যাপক নিন্দা জানানো হয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন অভিযোগ করেছেন, রাশিয়া বৈশ্বিক খাদ্যসংকটকে বাড়িয়ে দিয়েছে। ওডেসা বন্দরে হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, চুক্তির ব্যাপারে রাশিয়া যে অঙ্গীকার করেছে, তার নির্ভরযোগ্যতাকে গুরুতর সন্দেহের মুখে ঠেলে দিয়েছে এ হামলা।
বন্দরে হামলার ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেনি ক্রেমলিন। তবে শস্য চুক্তির মধ্যস্থতাকারী তুর্কিয়ে (তুরস্কের নতুন নাম) সরকার বলেছে, রুশ কর্মকর্তারা হামলার দায় অস্বীকার করেছেন।
দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী হুলুসাই আকার বলেন, ‘রাশিয়ার সঙ্গে এ ব্যাপারে আমরা যোগাযোগ করেছিলাম। তারা আমাদের বলেছে, এ হামলার ব্যাপারে একেবারেই অবগত নয়। নিবিড়ভাবে ঘটনার বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছে তারা।’