পশ্চিমাদের কারণেই গ্যাসের সমস্যা : এরদোয়ান
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ইউরোপে গ্যাস সমস্যার জন্য ক্রেমলিনের সুরেই সুর মিলিয়েছেন। তিনি মঙ্গলবার ইউরোপের জ্বালানি-সংকটের জন্য রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞাকে দায়ী করেন।
এরদোয়ান রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক বজায় রেখেছেন। একই সঙ্গে তিনি সংঘাতে নিরপেক্ষ থাকার চেষ্টাও চালিয়ে যাচ্ছেন।
এরদোয়ান বলেন, ‘পুতিনের প্রতি ইউরোপের আচরণ, তাদের আরোপ করা নিষেধাজ্ঞা পুতিনকে ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় এটা বলতে বাধ্য করেছে যে তোমরা যদি এটা করো, তবে আমি ওইটা করব। পুতিন তাঁর সবকিছু ও অস্ত্র ব্যবহার করছেন। দুর্ভাগ্যজনকভাবে প্রাকৃতিক গ্যাসও তার একটি।’
এদিকে ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে রাশিয়া। মস্কোর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাদের ওপর দেওয়া নিষেধাজ্ঞা পুরোপুরি তুলে না নিলে ইউরোপে গ্যাস দেওয়া হবে না।
নর্ড স্ট্রিম-১ নামের পাইপলাইনের মাধ্যমে রাশিয়া থেকে ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ করা হয়। রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ওই পাইপলাইনে তিন দিন গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রেখেছিল রাশিয়া। মস্কো এখন পশ্চিমা দেশগুলোকে দায়ী করে বলছে, এসব দেশের জন্যই ইউরোপে পুরোপুরি গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করছে তারা। নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হলে রাশিয়া গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক করবে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে ক্রেমলিনের এক মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, ‘অবশ্যই’।
এদিকে রাশিয়ার গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় গত সোমবার থেকে ইউরোপে জ্বালানির দাম বেড়ে গেছে। সোমবার নেদারল্যান্ডসে গ্যাসের দাম ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে দেখা যায়। যুক্তরাজ্যে গ্যাসের দাম বাড়ে ৩৫ শতাংশ।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে গ্যাসের পাইকারি দাম ব্যাপক ওঠানামা করতে দেখা গেছে। গত সপ্তাহে জার্মানির পক্ষ থেকে তাদের গ্যাস সংরক্ষণাগারগুলো প্রত্যাশার চেয়ে দ্রুত পূর্ণ হয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়ায় গ্যাসের দাম কমে যায়।
ইউক্রেনে সংঘাতের কারণে ইউরোপের দেশগুলোকে ব্ল্যাকমেল করতে রাশিয়ার বিরুদ্ধে গ্যাসকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের অভিযোগ তুলেছে ইউরোপ।
গত সোমবার পেসকভ বলেন, রাশিয়া, জার্মানি, যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমা দেশগুলোর বেশ কয়েকটি কোম্পানির বিরুদ্ধে আরোপিত নিষেধাজ্ঞার কারণে গ্যাস সরবরাহে সমস্যা দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া গ্যাস সরবরাহে আর কোনো সমস্যা নেই। এর আগে রুশ কোম্পানি গাজপ্রম জানায়, নর্ড স্ট্রিম-১-এর পাইপলাইনের একটি টার্বাইনে তেল লিক হওয়ায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে।