ড্রোন তুলে আনল ইউক্রেনের পুরোপুরি বিধ্বস্ত এক শহরের চিত্র
ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযানের এক বছর পার হয়েছে। এখন পর্যন্ত যুদ্ধ বন্ধের কোনো লক্ষণ নেই। ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে রাশিয়ান বাহিনীর হামলায় প্রাণহানি ঘটেছে, ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন অসংখ্য মানুষ। একসময়ের জনাকীর্ণ শহরের দৃষ্টিনন্দন ভবনগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে। বলতে গেলে একধরনের মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে ইউক্রেনের অনেক শহর। তেমনই একটি শহর দোনেৎস্ক অঞ্চলের মারিনকা।
রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধের শুরুতে ইউক্রেনের অনেকে নিজ শহরের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। মারাও গেছেন অসংখ্য মানুষ। অবকাঠামোর ক্ষতিও হয়েছে। যুদ্ধের এক বছর পর ইউক্রেনের একাধিক অঞ্চল কঙ্কালসার হয়ে যেন দাঁড়িয়ে আছে। যেমন ইউক্রেনের দোনেৎস্ক অঞ্চলে কোনো অবকাঠামো এখন চোখে পড়ে না। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দোনেৎস্ক এলাকার কিছু ছবি টুইটারে শেয়ার করেছে। ড্রোনে তোলা ছবিতে দেখা যাচ্ছে, দোনেৎস্কের মারিনকা শহর রীতিমতো ধ্বংসাবশেষে পরিণত হয়েছে। বারবার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় এখন সেখানে ঘরবাড়ির বদলে ধ্বংসাবশেষ পড়ে রয়েছে। এ শহরেই একসময় প্রায় ১০ হাজার মানুষের বাস ছিল। রাশিয়ান বাহিনীর হাতে ধ্বংস হওয়া দোনেৎস্কের এই শহরের চিত্র আঁতকে ওঠার মতোই।
ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় টুইটারে দোনেৎস্কের কিছু ছবি প্রকাশ করেছে। ড্রোনের মাধ্যমে তোলা ছবিতে মারিনকা শহরের ভয়াবহ চিত্র ফুটে উঠেছে। একের পর এক হামলায় ধ্বংসস্তূপের মধ্যে গুটিকয় ভবন দাঁড়িয়ে আছে।
ছবির ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, ‘ইউক্রেনের দোনেৎস্ক অঞ্চলের মারিনকা শহর। একসময় এখানে প্রায় ১০ হাজার মানুষের আবাস ছিল। এটি খুবই শান্তিপূর্ণ শহর ছিল। রাশিয়ার যুদ্ধাপরাধীরা শহরটিকে ধূলিসাৎ করার আগপর্যন্ত এ অবস্থাই ছিল। কিন্তু এখন শহরটির কী অবস্থা, তা জুম করে দেখুন, কিছুই অবশিষ্ট নেই।’
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ান বাহিনী ইউক্রেনে হামলা চালানের পর দনবাসের বিচ্ছিন্নতাবাদীরা শহরটির নিয়ন্ত্রণ নেয়। এর এক মাস পর ইউক্রেনের বাহিনী পুনরায় শহরটির নিয়ন্ত্রণ নেয়। কিন্তু ফেব্রুয়ারিতে হামলা শুরুর পর শহরের সব ভবন ও গাছপালা ধ্বংস হয়ে যায়। ফলে শান্তিপূর্ণ শহরটি বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ে।
মারিনকা শহরটি ‘পুরোপুরি’ ধ্বংস হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন সেখানকার পুলিশপ্রধান আরতেম স্কাস। হামলার পর সেনাবাহিনীর লোকজন ছাড়া সাধারণ মানুষ শহর ছেড়ে চলে যান। তিনি বলেন, ‘এর কারণ হলো, সাধারণ মানুষের পক্ষে সেখানে বসবাস করা কোনোভাবেই সম্ভব ছিল না। এমন কোনো ভবন নেই, যেটি ধ্বংস হয়নি। পুলিশ ও সামরিক প্রশাসন স্থানীয় লোকজনকে উচ্ছেদ করায় এখন আর সেখানে কোনো মানুষ অবশিষ্ট নেই।’