সম্ভাব্য ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ভোটের লড়াইয়ে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ওয়েইছ

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ওয়েইছ ইসলামছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টির প্রধান স্যার কিয়ার স্টারমারের বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ওয়েইছ ইসলাম। সেন্ট্রাল লন্ডনের হলবর্ন অ্যান্ড সেন্ট প্যানক্রাস আসন থেকে তিনি মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।

আসন্ন জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে বিভিন্ন জরিপে দেখা যাচ্ছে, লেবার পার্টি জয়ের সম্ভাবনা ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির চেয়ে বেশি। লেবার পার্টি জয়ী হলে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসবেন কিয়ার স্টারমার। এ ছাড়া ২০১৫ সাল থেকে হলবর্ন অ্যান্ড সেন্ট প্যানক্রাস সংসদীয় আসনের এমপি তিনি।

স্টারমারের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে যুক্তরাজ্যের রাজনীতির মূলধারাসহ বাংলাদেশি কমিউনিটিতে বেশ আলোচনায় রয়েছেন ওয়েইছ ইসলাম। ওয়েইছ প্রথম আলোকে বলেন, গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে স্টারমারের কোনো জোরালো ভূমিকা না রাখা এবং যুদ্ধবিরতির পক্ষে না থাকায় তাঁর বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছেন।

ওয়েইছ ইসলাম বলেন, হলবর্ন ও সেন্ট প্যানক্রাস আসনে মুসলিম ভোটার অনেক। এই সংসদীয় এলাকার ব্রিটিশ বাংলাদেশি ও ব্রিটিশ সোমালিয়দের দাবি ছিল তাদের আসনের সংসদ সদস্য গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য পার্লামেন্টে ভূমিকা পালন করুক। কিন্তু স্টারমার ভোটারদের আশা–আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে ব্যর্থ হয়েছেন বিধায় ভোটারদের সমর্থন হারিয়েছেন।

নিজের জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী ওয়েইচ। তিনি বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে আমাদের কমিউনিটির সবাই যদি এক হয়ে আমার পক্ষে কাজ করেন এবং ভোট দেন তাহলে আমার জিতে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এই আসনে প্রায় ৮৩ হাজার ভোটার রয়েছেন, যার মধ্যে প্রায় ৩২ হাজার ভোট মুসলিম। তাই আমরা যদি আমাদের ভোট মানবতার পক্ষে গাজার পক্ষে যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে দিতে পারি, তাহলে বিজয় সম্ভব।’

জিতে গেলে স্টারমার আবাসন সমস্যা সমাধান, স্বাস্থ্যসেবা বেগবান করা, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, জীবনযাত্রার ব্যায় কমিয়ে আনা, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণের মতো বিষয়গুলোয় অগ্রাধিকার দেবেন।

স্টারমার ও ওয়েইছ ইসলাম ছাড়াও এই আসনে কনজারভেটিভ পার্টি, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি, গ্রিন পার্টির প্রার্থী মোট ১২ জন প্রার্থী রয়েছেন।

ওয়েইছ ইসলামের জন্ম ও বেড়ে ওঠা পূর্ব লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটস এলাকায়। লন্ডন গিল্ডহল ইউনিভার্সিটি থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক করার পাশাপাশি লন্ডনের বিখ্যাত কুইনমেরী ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতোকত্তোর করেছেন। লেখাপড়া শেষে নেটওয়েস্ট ব্যাংকে পেশাগত জীবন শুরু করেন। পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আইন প্রয়োগকারী উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেন।

২০০৬ সালে ওয়েইছ ইসলাম টাওয়ার হ্যামলেটস বারার হোয়াইটচাপেলে ওয়ার্ড থেকে রেসপেক্ট পার্টির হয়ে কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। ২০০৭ সালে তিনি টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের পেনশন অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান মনোনীত হন। ২০০৮ সালে তিনি টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের পক্ষ থেকে অলিম্পিক দূত মনোনীত হন।

উল্লেখ্য, আগামী ৪ জুলাই যুক্তরাজ্যে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।