মেগান আমাকে গোঁড়ামি থেকে মুক্ত করেছে, বললেন প্রিন্স হ্যারি
ব্রিটিশ রাজপরিবারের গোঁড়ামির নানা কথা প্রকাশ্যে এনে বিভিন্ন সময় আলোচনার জন্ম দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রিন্স হ্যারি ও তাঁর স্ত্রী মেগান মার্কেল। এবার প্রিন্স হ্যারি বলেছেন, মেগানের সঙ্গে পরিচয় হওয়ার আগে তিনি অনেক গোঁড়া ছিলেন। মেগানের সান্নিধ্য তাঁকে গোঁড়ামি থেকে মুক্ত করেছে। খবর বিবিসির।
যুক্তরাষ্ট্রের সম্প্রচারমাধ্যম সিবিএসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রিন্স হ্যারি এমন মন্তব্য করেছেন। মেগানকে বিয়ে করার পর রাজপরিবার ছেড়েছেন হ্যারি। বর্তমানে হ্যারি–মেগান দম্পতি সন্তানসহ যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন।
ডিউক অব সাসেক্স প্রিন্স হ্যারির আত্মজীবনী ‘স্পেয়ার’ আগামী ১০ জানুয়ারি প্রকাশিত হবে। তবে বিভিন্নভাবে আগেই হাতে আসা বইটির উদ্ধৃতি দিয়ে ইতিমধ্যেই ব্রিটিশ রাজপরিবারের অন্দরের অনেক চমকপ্রদ ঘটনা প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যমগুলো। এসব ঘটনা বিশ্বজুড়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
আত্মজীবনী প্রকাশের প্রাক্কালে সিবিএসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রিন্স হ্যারি বলেন, মেগানের বর্ণপরিচয় নিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের প্রচার–প্রচারণা তাঁদের সম্পর্ককেও প্রভাবিত করবে, এটা তিনি আগে বুঝতে পারেননি। হ্যারি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমি অকপট ছিলাম। তবে আমার ধারণা ছিল না, ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম এতটা গোঁড়া। তবে আমি এটা বলতে পারি, মেগানের সঙ্গে পরিচয় হওয়ার আগে আমিও হয়তো এমনই ছিলাম।’
হ্যারির সাক্ষাৎকার নেন অ্যান্ডারসন কুপার। তখন কুপার হ্যারিকে পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘তাহলে আপনি বলতে চাচ্ছেন, মেগানের সঙ্গে পরিচয় হওয়ার আগে আপনি গোঁড়া ছিলেন?’ জবাবে প্রিন্স হ্যারি বলেন, ‘আমি আসলে জানি না। তবে বলতে পারি, আমি এখন প্রতিটা বিষয় যেভাবে দেখি, আগে সেভাবে দেখতাম না।’
পারিবারিক বিরোধের জেরে ২০২০ সালে রাজপ্রাসাদ ছেড়ে স্ত্রী মেগানকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান প্রিন্স হ্যারি। বিবাদ মিটিয়ে রাজপ্রাসাদে ফেরার ইচ্ছা নেই বলেও জানিয়েছেন তিনি। সিংহাসনের উত্তরাধিকারী বড় ভাই প্রিন্স অব ওয়েলস উইলিয়ামের বিরুদ্ধে শারীরিকভাবে আঘাতেরও অভিযোগ এনেছেন হ্যারি।
আত্মজীবনীতে প্রিন্স হ্যারি লিখেছেন, অভিনেত্রী মেগানকে বিয়ে করায় দুই ভাইয়ের সম্পর্ক ভেঙে যায়। একপর্যায়ে দুজনের মধ্যে এ সংঘাত চরম আকার ধারণ করে। হ্যারি লিখেছেন, উইলিয়াম ‘আমার কলার চেপে ধরে, গলার চেইন ছিঁড়ে ফেলে এবং... মেঝেতে ছিটকে ফেলে দেয়’। এতে পিঠে জখম হয় হ্যারির।
এ ছাড়া আফগানিস্তানে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর অ্যাপাচি হেলিকপ্টারে পাইলট হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় ২৫ জনকে হত্যা করেছেন প্রিন্স হ্যারি। আত্মজীবনীতে এ কথা স্বীকার করেছেন তিনি। ৩৮ বছর বয়সী হ্যারি তালেবানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে আফগানিস্তানে দুই দফা দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রথমবার ২০০৭-০৮ মেয়াদে বিমান হামলার ফরওয়ার্ড এয়ার কন্ট্রোলার কলিংয়ে দায়িত্ব পালন করেনতিনি। পরে ২০১২-১৩ মেয়াদে অ্যাটাক হেলিকপ্টারের পাইলট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।