জোট সরকার গঠনে জোর চেষ্টা মুসলিমবিদ্বেষী ভিল্ডার্সের
নেদারল্যান্ডসে নতুন জোট সরকার গঠনে আলোচনা শুরু হয়েছে আজ মঙ্গলবার। আলোচনার মাধ্যমে জোট গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোকে এক ছাতার নিচে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। এ জন্য লেবার পার্টির সাবেক মন্ত্রী রোনাল্ড প্লাসট্রেককে দায়িত্ব দিয়েছেন নির্বাচনে জয়ী দল পার্টি ফর ফ্রিডমের (পিভিভি) নেতা খেয়ার্ট ভিল্ডার্স।
২২ নভেম্বর নেদারল্যান্ডসে জাতীয় নির্বাচনে মাত্র ২৪ শতাংশ ভোট নিয়ে জয় পায় উগ্র ডানপন্থী রাজনীতিক ভিল্ডার্সের দল। ফলে সরকার গঠন করতে তাদের অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সমর্থন দরকার পড়বে। এরই মধ্যে সদ্যবিদায়ী প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটের রক্ষণশীল দল ভিভিডি পার্টি জানিয়ে দিয়েছে, তারা ভিল্ডার্সের অধীনে সরকার গঠন করবে না।
ভিভিডি পার্টির সরে দাঁড়ানোর পর মুসলিমবিদ্বেষী হিসেবে পরিচিত খেয়ার্ট ভিল্ডার্সের জন্য সরকার গঠনের পথ সংকুচিত হয়ে এসেছে। জোট গঠনে আরও ধাক্কা আসে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলোচনার জন্য প্রথমে ভিল্ডার্সের নিয়োগ দেওয়া গোম ফন স্ট্রিয়েনের পদত্যাগের পর। এরপরই রোনাল্ড প্লাসট্রেককে এ দায়িত্ব দেওয়া হয়।
২০০৭ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত লেবার পার্টির হয়ে স্বরাষ্ট্র ও শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন প্লাসট্রেক। তবে বিগত কয়েক বছরে নিজ দলের সমালোচনায় কলম ধরেছেন। এ নিয়ে নেদারল্যান্ডসের ডানঘেঁষা সংবাদপত্র টেলিগ্রাফে প্রায়ই লেখালেখি করেন তিনি।
গত সপ্তাহে নির্বাচনের পরের দিনই পত্রিকাটিতে একটি মতামত লিখেছিলেন প্লাসট্রেক। তাতে তিনি বলেছিলেন, নির্বাচনে ভোটাররা পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা পিভিভি, ভিভিডি ও এনএসসি দল নিয়ে একটি ডানপন্থী সরকার চায়। তাই সহজেই এই সরকার গঠন করা যেতে পারে।
তবে ভিভিডি পার্টি ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে, তারা ডানপন্থী সরকারের প্রস্তাবগুলোয় সমর্থন দিলেও খেয়ার্ট ভিল্ডার্সের মন্ত্রিসভায় থাকবে না। আর ভিল্ডার্সের মুসলিমবিদ্বেষী মনোভাবের কারণে তাঁর সঙ্গে এক ছাতার তলায় আসা কঠিন বলে মনে করছে এনএসসি।
মুসলমানদের নিয়ে খেয়ার্ট ভিল্ডার্সের নানা মন্তব্য ঘিরে নেদারল্যান্ডসে সমালোচনা দেখা দিয়েছে। দেশটিতে মসজিদ ও পবিত্র কোরআন পুরোপুরি নিষিদ্ধ করার কথা তুলেছিলেন তিনি, যা নেদারল্যান্ডসের সংবিধানে ধর্ম পালনের স্বাধীনতার ধারার বিরুদ্ধে যায়। একটি ভিডিওতে তাঁকে মুসলিমদের নেদারল্যান্ডস থেকে বের হয়ে যেতে বলতেও দেখা গেছে। তবে নির্বাচনে জয়ের পর খেয়ার্ট ভিল্ডার্স বলেন, তিনি দেশের সব মানুষের প্রধানমন্ত্রী হতে চান। আর অসাংবিধানিক হয়, এমন কোনো পদক্ষেপ নেবে না তাঁর সরকার।