মানব পাচার সন্দেহে ভারতীয় যাত্রীসহ আটকে রাখা উড়োজাহাজটি ওড়ার ছাড়পত্র পেল

ফ্রান্সের ভাত্রি বিমানবন্দর, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৩ছবি: এএফপি

মানব পাচার সন্দেহে ফ্রান্সের ভাত্রি বিমানবন্দরে ৩০৩ ভারতীয় যাত্রীসহ আটকে রাখা উড়োজাহাজটিকে অবশেষে ওড়ার জন্য ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। গতকাল রোববার ফরাসি কৌঁসুলিরা এ ছাড়পত্র দিয়েছেন।

এয়ারবাস এ৩৪০ উড়োজাহাজটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) দুবাই থেকে নিকারাগুয়ার উদ্দেশে যাত্রা করেছিল। ২১ ডিসেম্বর জ্বালানি নিতে এটি ফ্রান্সের ভাত্রি বিমানবন্দরে অবতরণ করেছিল।

এ সময় অজ্ঞাত সূত্র থেকে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করে বলা হয়, উড়োজাহাজটিতে মানব পাচারের শিকার মানুষেরা থাকতে পারেন। এ খবর পাওয়ার পর যাত্রীসহ উড়োজাহাজটিকে বিমানবন্দরে আটকে রাখা হয়।

স্থানীয় প্রশাসকের কার্যালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, দুই দিন ধরে যাত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদ করার পর গতকাল ফরাসি কৌঁসুলিরা উড়োজাহাজটিকে বিমানবন্দর ছাড়ার অনুমতি দিয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, আজ সোমবার উড়োজাহাজটি গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা করতে পারে।

যদিও বিবৃতিতে কোনো গন্তব্যস্থলের নাম উল্লেখ করা হয়নি; তবে স্থানীয় বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান ফ্রান্সোয়া প্রোচুআয়া এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, যাত্রীরা ভারতে চলে যেতে পারেন।

তদন্তসংশ্লিষ্ট একটি সূত্র এএফপিকে বলেছে, উড়োজাহাজটিতে থাকা ভারতীয় যাত্রীরা সম্ভবত সংযুক্ত আরব আমিরাতে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। যুক্তরাষ্ট্র কিংবা কানাডায় পাড়ি জমানোর স্বপ্ন নিয়ে তাঁরা নিকারাগুয়ার উদ্দেশে যাত্রা করেছিলেন।

রোমানীয় কোম্পানি লিজেন্ড এয়ারলাইনস পরিচালিত উড়োজাহাজটি নিয়ে তদন্ত চলাকালে যাত্রীদের বিমানবন্দরে রাখা হয়েছিল।

স্থানীয় প্রশাসকের কার্যালয় থেকে বলা হয়েছে, বিমানবন্দরেই যাত্রীদের জন্য শয্যা, শৌচাগার ও গোসলের ব্যবস্থা করা হয়। গণমাধ্যমকর্মীসহ বহিরাগতদের বিমানবন্দরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।

প্যারিসের কৌঁসুলিদের তথ্য অনুযায়ী, উড়োজাহাজটিতে এমন ১১ শিশুকে পাওয়া গেছে, যাদের কোনো অভিভাবক বা সঙ্গী ছিল না।

উড়োজাহাজটি অবতরণের পরদিন ২২ ডিসেম্বর দুই যাত্রীকে আটক করা হয়। এ যাত্রায় তাঁদের ‘ভূমিকা’ খতিয়ে দেখতে তাঁদের আটক করা হয়।

এ ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র বলেছে, উড়োজাহাজের ৩০৩ যাত্রীর মধ্যে ১২ জন ফ্রান্সে আশ্রয় চেয়েছেন।

প্যারিসের ভারতীয় দূতাবাস থেকে গত শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলা হয়, আটক যাত্রীদের ব্যাপারে ফরাসি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করার জন্য দূতাবাসকর্মীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত আছেন। পরিস্থিতি দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করছেন তাঁরা।

উড়োজাহাজের ৩০ ক্রুর কাউকে আটক করা হয়নি।  

ফ্লাইট রাডার টোয়েন্টি ফোরের তথ্য অনুযায়ী, লিজেন্ড এয়ারলাইনসের মাত্র চারটি উড়োজাহাজ আছে।