ইতালির উপকূলে নৌকাডুবিতে ১১ অভিবাসনপ্রত্যাশীর মৃত্যু, নৌকায় ছিলেন বাংলাদেশিও
ভূমধ্যসাগর-সংলগ্ন ইতালির দক্ষিণ উপকূলে ইউরোপে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের নিয়ে দুটি নৌকা ডুবে গেছে। এতে অন্তত ১১ অভিবাসনপ্রত্যাশীর মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন শিশুসহ ৬০ জনের বেশি। গতকাল সোমবার সেখানকার উদ্ধারকর্মীরা এসব তথ্য জানান।
এ ঘটনায় জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) এবং জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ একটি যৌথ বিবৃতি দিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অভিবাসনপ্রত্যাশীদের নিয়ে নৌকাগুলো লিবিয়ার উপকূল থেকে এসেছিল। এতে সিরিয়া, মিসর, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের নাগরিকেরা ছিলেন।
জার্মানির দাতব্য প্রতিষ্ঠান রেসকিউশিপ জানায়, গতকাল সোমবার তারা ডুবতে বসা একটি কাঠের নৌকা থেকে ১০ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে। এ সময় ৫১ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। ভূমধ্যসাগরে ইতালির লামপেদুসা দ্বীপের উপকূলে এ ঘটনা ঘটে।
প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, জীবিত উদ্ধার করা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ইতালির কোস্টগার্ডের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
ভূমধ্যসাগরে গতকাল অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বহনকারী অন্য একটি নৌকা ডুবে গিয়ে ৬০ জনের বেশি মানুষের নিখোঁজ হওয়ার খবর দিয়েছে আন্তর্জাতিক চিকিৎসা-মানবিক সংস্থা ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস (এমএসএফ)। আশঙ্কা করা হচ্ছে, নিখোঁজ ব্যক্তিদের মধ্যে ২৬টি শিশু রয়েছে। ইতালির দক্ষিণাঞ্চলের ক্যালাব্রিয়া উপকূল থেকে প্রায় ১২৫ মাইল দূরে এ ঘটনা ঘটেছে।
জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর ভাষ্য, লিবিয়া ও তুরস্ক থেকে ইউরোপে আশ্রয় খুঁজতে আসা অভিবাসনপ্রত্যাশীরা এসব নৌকায় ছিলেন।
এমএসএফের শাকিলা মোহাম্মদী বলেন, উদ্ধার হওয়া অভিবাসনপ্রত্যাশীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২৬ শিশুসহ নিখোঁজ ৬৬ জনের কারও পরিচয় জানা নেই। এর মধ্যে কয়েক মাস বয়সী শিশুও আছে।
এক বিবৃতিতে শাকিলা জানান, এ ঘটনায় একটি আফগান পরিবারের সলিলসমাধি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আট দিন আগে পরিবারটি তুরস্ক ছেড়ে এসেছিল। তিন-চার দিন ধরে সাগরে অবস্থান করছিল।
জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে প্রতিবছর হাজারো অভিবাসনপ্রত্যাশী ইউরোপে ঢোকার চেষ্টা করেন। এ পথকে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের জন্য অন্যতম প্রাণঘাতী বিবেচনা করা হয়। জাতিসংঘ বলছে, ২০১৪ সালের পর থেকে ভূমধ্যসাগরে ২৩ হাজার ৫০০ জনের বেশি অভিবাসনপ্রত্যাশীর হয় মৃত্যু হয়েছে, নয়তো নিখোঁজ হয়েছেন।