প্যারিসে বিক্ষোভে নিষেধাজ্ঞা আদালতের
পুলিশের গুলিতে কিশোর নাহেল (১৭) হত্যার প্রতিবাদে আয়োজিত একটি বিক্ষোভ আদালতের নিষেধাজ্ঞায় পণ্ড হয়েছে। গতকাল শনিবার প্যারিসে এ বিক্ষোভ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এর কয়েক ঘণ্টা আগে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত। এতে বিক্ষোভের আয়োজকেরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
গত ২৭ জুন প্যারিসে ট্রাফিক পুলিশের গুলিতে নাহেলের মৃত্যু হয়। গাড়ি চালিয়ে যাওয়ার সময় ট্রাফিক পুলিশ তাকে থামতে বলে। সে না থামলে পুলিশ তাকে গুলি করে। গুলিতে নাহেলের মৃত্যুর পর এর প্রতিবাদে এক সপ্তাহজুড়ে প্যারিসসহ ফ্রান্সের শহরগুলোয় বিক্ষোভ-সহিংসতা শুরু হয়।
এর আগে গত বুধবার ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড ডারমানিন ঘোষণা দেন, নাহেল হত্যার পর সংঘটিত দাঙ্গার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে এমন যেকোনো বিক্ষোভে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলো। সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া বিক্ষোভবিরোধী এমন নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখলেন প্যারিসের আদালত।
প্যারিসের ওই প্রশাসনিক আদালত বলেছেন, সম্প্রতি ঘটে যাওয়া দাঙ্গার গতিপ্রকৃতি, যথেষ্ট পুলিশ সদস্য না থাকা ও বিশৃঙ্খলার ঝুঁকি বিবেচনায় বিক্ষোভের ওপর এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলো।
তবে বিক্ষোভের আয়োজকদের একজন আইনজীবী লুসি সিমন অভিযোগ করেছেন, ন্যায্য দাবি আদায়ে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার লঙ্ঘন করে সব উপায়ে বাধাদানের চেষ্টা চালাচ্ছে কর্তৃপক্ষ।
ফরাসি মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস লিগের পিয়েরে ব্রুনিসো বলেন, ফ্রান্সের পরিস্থিতি দিন দিন আরও দমনমূলক হয়ে উঠছে। পুলিশের অনুমতি ছাড়া বিক্ষোভ করা যাচ্ছে না।
১৭ বছরের নাহেলের বেড়ে ওঠা প্যারিসের পশ্চিমে নতেঁ শহরে। সেখানে গত ২৭ জুন গাড়ি চালিয়ে যাওয়ার সময় এক তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হয় সে। মায়ের একমাত্র সন্তান ছিল নাহেল। সে পণ্য ডেলিভারির কাজ করত। খেলত রাগবি লিগে। অবশ্য নাহেলের পড়াশোনায় ছেদ ছিল। বৈদ্যুতিক মিস্ত্রি হতে চেয়েছিল সে। বাসার অদূরে সুরেসনেসের একটি কলেজে ভর্তি হয়েছিল।
নাহেল ও তার মা মোনিয়া আলজেরিয়ার বংশোদ্ভূত। তবে তার বাবার পরিচয় জানা যায়নি। যারা নাহেলকে চিনত, তাদের সবার একই কথা, নাহেল ছিল খুব লক্ষ্মী ছেলে। তার বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে কোনো অপরাধের রেকর্ড ছিল না।