রাশিয়া প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারিকে পুতিনসহ তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের প্রতি ‘সুস্পষ্ট বার্তা’ বলে মন্তব্য করেছে ইউক্রেন। পুতিন ও তাঁর এক সহযোগীর বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারির এক প্রতিক্রিয়ায় এ কথা বলেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির উপদেষ্টা মিখাইলো পোদোলিয়াক।
এ গ্রেপ্তারি পরোয়ানার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), পোল্যান্ড ও চেক প্রজাতন্ত্র। যদিও গ্রেপ্তারি পরোয়ানার কোনো ‘তাৎপর্য নেই’ বলে মন্তব্য করেছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা।
প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির উপদেষ্টা মিখাইলো পোদোলিয়াক বলেন, ‘বিশ্ব বদলে গেছে। আইসিসি “চতুর” পুতিনের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করেছে। এটা পুতিন ও তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের প্রতি সুস্পষ্ট বার্তা যে তাঁদের ভাগ্যে কী ঘটতে যাচ্ছে। এটা কেবল শুরু...এটা আইনি প্রক্রিয়া। অপেক্ষা করুন।’
ইইউর পররাষ্ট্রবিষয়ক দূত জোসেপ বোরেল বলেন, এই পরোয়ান রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিদের জন্য সংকট তৈরি করবে। তিনি কোনো দেশ ভ্রমণ করলে গ্রেপ্তার হওয়ার ঝুঁকি থাকবে। এই ঝুঁকি থেকে তিনি রেহাই পাবেন না।
পোল্যান্ড সরকারের মুখপাত্র পিয়র মুলার বলেন, এটা আইসিসির গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। ইউক্রেনে বর্বর হামলার সঙ্গে যারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত, এটা তাদের প্রতি বার্তা।
চেক প্রজাতন্ত্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিপাভস্কি বলেন, পুতিন নিঃসন্দেহে যুদ্ধাপরাধের জন্য দায়ী। তাঁকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
পুতিন কি গ্রেপ্তার হবেন?
পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর অনেকের প্রশ্ন, তিনি গ্রেপ্তার হবেন কি না। কিংবা আইসিসির পরোয়ানা কীভাবে কার্যকর হবে।
গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের মতো অপরাধের বিচার করতে আইসিসি গঠন করা হয়েছিল। বিশ্বব্যাপী বিচারকাজ পরিচালনা করার এখতিয়ার রয়েছে এই আদালতের। অভিযুক্ত কোনো ব্যক্তি বা পক্ষকে যখন একটি দেশের কর্তৃপক্ষ বিচারের আওতায় আনতে পারে না অথবা আনতে চায় না, তখনই শুধু হস্তক্ষেপ করে আইসিসি। আইসিসির হাতে বিচারিক ক্ষমতা থাকলেও কোনো অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করতে পারে না। আইসিসি বিচারিক ক্ষমতাও শুধু সেসব দেশে প্রয়োগ করতে পারে, যে দেশগুলো এই আদালত গঠন করতে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিল। রাশিয়া এই চুক্তিতে সই করেনি। তাই পুতিনকে আপাতত এই আদালতের হাতে সমর্পণের কোনো সুযোগ নেই।