নাভালনির মৃত্যুতে ৬ কারা কর্মকর্তার ওপর যুক্তরাজ্যের নিষেধাজ্ঞা
রাশিয়ার আর্কটিক পেনাল কলোনির শীর্ষ পর্যায়ে ছয় কারা কর্মকর্তার সম্পদ জব্দ করেছে যুক্তরাজ্য। এমনকি তাঁদের যুক্তরাজ্য ভ্রমণেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এই কারাগারে নাভালনির মারা গেছেন।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন বলেন, যারা অ্যালেক্সি নাভালনির সঙ্গে নির্মম আচরণের জন্য দায়ী, তাদের জবাবদিহির আওতায় আনা হবে, এ নিয়ে তাদের দ্বিধা থাকা উচিত নয়।
পররাষ্ট্র দপ্তর জানায়, নাভালনির মৃত্যুর ঘটনায় এই প্রথম কোনো দেশ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করল।
যাদের ওপর এ নিষেধাজ্ঞা তাঁরা হলেন প্যানাল কোলোনির প্রধান কর্নেল ভাদিম কনস্টান্টিনোভিচ কালিনিন এবং উপপ্রধান লে. কর্নেল সের্গেই নিকোলাভিচ করজভ, ভ্যাসিলি আলেকজান্দ্রোভিচ ভিড্রিন, ভ্লাদিমির ইভানোভিচ পিলিপচিক, আলেকজান্ডার ভ্লাদিমিরোভিচ গোলিয়াকভ ও কর্নেল আলেকজান্ডার ভ্যালেরিভিচ ওব্রাজতসভ।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কঠোর সমালোচক ছিলেন ৪৭ বছর বয়সী নাভালনি। গত এক দশকে রাশিয়ায় বিরোধী নেতা হিসেবে বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে বেশি পরিচিত মুখ হয়ে উঠেছিলেন তিনি।
২০২১ সাল থেকে কারাগারে বন্দী ছিলেন নাভালনি। গত বছরের শেষ দিক থেকে উত্তর সাইবেরিয়ার একটি কারাগারে (পেনাল কলোনি) নির্জন প্রকোষ্ঠে কারাভোগ করছিলেন এই বিরোধী নেতা। গত শুক্রবার কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, কারাগারে মারা গেছেন ৪৭ বছর বয়সী নাভালনি।
যে কারাগারে নাভালনি মারা যান, তার বাইরে এক ভিডিও বার্তায় তাঁর মা লিউডমিলা বলেন, তিনি পাঁচ দিন ধরে ছেলের মুখটি দেখার সুযোগ চাইছেন, কিন্তু তাঁকে সেই সুযোগ দেওয়া হয়নি। এমনকি ছেলের মরদেহ কোথায়, সেটিও জানানো হচ্ছে না।
যুক্তরাজ্য সরকার অবিলম্বে নাভালনির মরদেহ তাঁর পরিবারের কাছে তুলে দিতে আহ্বান জানিয়েছে। একই সঙ্গে এ ঘটনার পূর্ণ ও স্বচ্ছ তদন্তেরও দাবি জানিয়েছে।
এ নিষেধাজ্ঞা ঘোষণার সময় ডেভিড ক্যামেরন বলেন, ‘এটি স্পষ্ট যে রুশ কর্তৃপক্ষ নাভালনিকে নিজেদের জন্য হুমকি হিসেবে দেখেছে এবং তারা বারবার তাকে চুপ করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। রাশিয়ার নিপীড়নমূলক আচরণ নিয়ে কারও সন্দেহ থাকা উচিত নয়। এ কারণে আমরা পেনাল কলোনিতে নাভালনির হেফাজতের দায়িত্বে থাকা কারাগারে শীর্ষ পর্যায়ের এই কর্মকর্তাদের ওপর আমরা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছি।’
ইতিমধ্যে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেছেন, যুক্তরাজ্য ও তার মিত্ররা রাশিয়া ও পুতিনকে জবাবদিহির আওতায় আনতে সম্ভাব্য সব বিকল্প বিবেচনা করছে।
যুক্তরাষ্ট্রও জানিয়েছে, তারাও নাভালনির মৃত্যুকে ও ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধকে কেন্দ্র করে রাশিয়ার ওপর একগাদা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে।