২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

স্বজনেরা বলছেন, অন্তত লাশটা খুঁজে দিন

তুরস্কের একটি কবরস্থানে হাজার হাজার নতুন কবর দেখা যায়
ছবি: রয়টার্স

ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত ভবনের ধ্বংসস্তূপ বুলডোজার দিয়ে সরাচ্ছিলেন আকিন বোজকার্ট। তুরস্কের এই বুলডোজারচালক বলছিলেন, ধ্বংসস্তূপের নিচে লাশ খুঁজে পেলে পরিবারের জীবিত সদস্যদের কাছে বুঝিয়ে দেবেন তিনি। যাতে স্বজনেরা জানাজা পড়তে পারেন, লাশ দাফন করতে পারেন। প্রিয়জনের একটা কবর তো অন্তত থাকল!

৬ ফেব্রুয়ারি ভোরে তুরস্ক ও সিরিয়ার সীমান্তবর্তী এলাকায় শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৮। এই ভূমিকম্পে উভয় দেশে নিহতের সংখ্যা ৪৬ হাজার ছাড়িয়েছে। এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

ভূমিকম্পে উভয় দেশে এখনো অনেক মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। নিখোঁজ মানুষের সংখ্যা কত, তা নির্দিষ্ট করে বলছে না তুরস্ক বা সিরিয়ার কর্তৃপক্ষ। নিখোঁজ ব্যক্তিদের আশায় এখনো প্রতীক্ষার প্রহর গুনছেন স্বজনেরা। তাঁদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। প্রিয়জনকে জীবিত না পেলেও তাঁরা অন্তত লাশটা চান।

৪২ বছর বয়সী আকিন বলেন, ‘আপনি কি একটি লাশ খুঁজে পাওয়ার জন্য প্রার্থনা করবেন? পরিবারের কাছে লাশ পৌঁছে দিতে আমরা তা করি।’

আকিনের বাড়ি তুরস্কের কায়সেরি শহরে। ভূমিকম্পের পর বিধ্বস্ত ভবনের ধ্বংসাবশেষ সরাতে সাহায্য করার জন্য তিনি দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় কাহরামানমারাস শহরে গিয়েছিলেন। ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলের সবচেয়ে কাছের শহর কাহরামানমারাস। ভূমিকম্পে শহরটিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

আকিন বলেন, ধ্বংসস্তূপ সরানোর সময় নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিবারগুলো আশা নিয়ে অপেক্ষা করছিল। প্রিয়জনের লাশটা অন্তত তারা চায়। তারা প্রিয়জনকে দাফন করতে চায়। তারা একটি কবর চায়।

কাহরামানমারাস শহরের একটি কবরস্থানে হাজার হাজার নতুন কবর দেখা যায়, যা এই ভয়াবহ ভূমিকম্পের বিপর্যয়ের মাত্রাকে নির্দেশ করে।

আকিন বলেন, তিনি যখন তাঁর বুলডোজার নিয়ে কাজ করছিলেন, তখন এক ব্যক্তি তাঁর বিধ্বস্ত বাড়ির ধ্বংসাবশেষে বসে আগুন জ্বেলে নিজেকে উষ্ণ করছিলেন। এই বাবা তাঁর নিখোঁজ মেয়েকে খুঁজে দেওয়ার জন্য তাঁদের অনুরোধ করেছিলেন।

আকিন বলেন, সেই বাবা তাঁদের বলেছিলেন, তাঁরা যাতে দয়া করে তাঁর মেয়ের দেহাবশেষ খুঁজে বের করেন। যাতে তিনি মেয়েকে দাফন করতে পারেন।

নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের এমন আকুতি সম্পর্কে আকিন বলেন, তাঁরা এই মানুষগুলোর জীবনের সবচেয়ে দুঃখজনক সময়ে কিছুটা সান্ত্বনা এনে দেওয়া চেষ্টা করছেন।