ফ্রান্সে নতুন অভিবাসন আইন নিয়ে তীব্র বিক্ষোভ
ফ্রান্সের অভিবাসন আইন পরিবর্তন করতে চান প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ। এর বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছেন অভিবাসনপ্রত্যাশী ও শরণার্থীরা।
নতুন এই বিলের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ শুরু হয়েছে ফ্রান্সের বিভিন্ন প্রান্তে। গতকাল রোববার দুপুরে দক্ষিণ প্যারিসে একটি বিশাল মিছিল বের করা হয়। আইনের বিরোধিতা করা হয় ওই মিছিল থেকে।
মিছিলের সামনে হাঁটছিলেন আহমেদ সিবি। মালি থেকে পাঁচ বছর আগে ফ্রান্সে আশ্রয় নিতে এসেছিলেন ৩৩ বছরের সিবি। দক্ষিণ প্যারিসে আন্দোলনের অন্যতম মুখ তিনি।
‘নোংরা কাজ করানো হচ্ছে’
আহমেদ সিবি জানান, ডাস্টবিন পরিষ্কার, অফিস–বাড়িতে পরিচারিকার কাজ ও বাসন মাজা—এই ধরনের কাজে অংশ নিতে হচ্ছে আশ্রয়প্রার্থীদের। অথচ বিমা থেকে শুরু করে কোনো রকম সুযোগ-সুবিধা তাঁরা পান না। তাঁদের কাগজ এখনো তৈরি হয়নি। ফরাসি নাগরিকদের স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য সব নোংরা কাজ করেও তাঁদের জীবন দুর্বিষহ। মিছিলের একাধিক প্ল্যাকার্ডে এ বিষয়ে লেখা ছিল।
আহমেদের ভাষ্য, আশ্রয়প্রার্থীদের দিয়ে আগামী বছরের প্যারিস অলিম্পিকের কাজও করানো হচ্ছে। স্টেডিয়াম তৈরি ও সংস্কারের কাজ করানো হচ্ছে। অথচ তাঁদের বৈধ কাগজপত্র দেওয়া হচ্ছে না।
পার্লামেন্টে আলোচনা
আজ সোমবার ফ্রান্সের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে বিলটি নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা। তবে আইন হওয়ার জন্য উচ্চকক্ষ ও প্রেসিডেন্টের সই প্রয়োজন। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, আগামী বছরের শুরুতে বিলটি আইনে পরিণত হতে পারে।
ফরাসি রাজনীতিকদের একাংশ বলছে, বাম ও ডানপন্থীদের সঙ্গে আপস–মীমাংসার মাধ্যমেই এই বিল তৈরি হয়েছে।
কী আছে বিলে
বিলে কী আছে, তা এখনো সম্পূর্ণ জানা যায়নি। তবে এখন পর্যন্ত পাওয়া কিছু তথ্য অনুযায়ী আইনে আশ্রয় আবেদনপ্রক্রিয়া দ্রুততর করা হচ্ছে। আবেদন প্রত্যাখ্যাত হলে আপিলের জন্য অপেক্ষার সময়ও কমিয়ে আনা হবে। সেই সঙ্গে ফ্যামিলি রিইউনিয়ন বা পারিবারিক পুনর্মিলন ভিসা প্রক্রিয়াও কঠিন করে তোলা হচ্ছে। অর্থাৎ ফ্রান্সে পরিবারের কোনো সদস্য থাকলে তাঁর পক্ষে অভিবাসন পাওয়া নতুন আইনে আগের চেয়ে জটিল হতে পারে।
এ ছাড়া ফ্রান্সে চিকিৎসার জন্য আসার রাস্তাও কঠিন করা হচ্ছে। আগে ১৩ বছরের কম বয়সীদের ফেরত পাঠানো হতো না। এবার সেই আইনেও পরিবর্তন আনার কথা বলা হয়েছে।
এসব নিয়মকে প্রতিবন্ধকতা হিসেবে মনে করছেন অভিবাসনপ্রত্যাশী ও শরণার্থীরা।