বাখমুত থেকে রুশ সেনারা পালাচ্ছেন: ভাগনারপ্রধান

ভাগনারপ্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোশিন
ছবি: রয়টার্স

রাশিয়ার বেসরকারি ভাড়াটে বাহিনী ভাগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোশিন বলেছেন, ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় শহর বাখমুতের কাছ থেকে রুশ সেনাবাহিনীর একটি দলের সদস্যরা পালিয়ে গেছেন। এর জন্য রাশিয়ার সামরিক নেতৃত্বকে দায়ী করেছেন তিনি।

ইয়েভজেনি প্রিগোশিন বলেন, ‘যুদ্ধের সম্মুখ সারিকে ভেঙে দিতে আজ সবকিছুই করা হচ্ছে। আমাদের সঙ্গে থাকা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি দলের সদস্যরা তাঁদের পদবি ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। সবাই পালাচ্ছেন।’

মেসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামে প্রকাশিত এক ভিডিওতে প্রিগোশিন বলেছেন, রুশ সামরিক কমান্ডারদের নির্বুদ্ধিতার কারণে সেনারা পালিয়ে যাচ্ছেন।

প্রিগোশিন মনে করেন, নেতাদের নির্বুদ্ধিতার কারণে কোনো সেনার মৃত্যু হতে পারে না। শীর্ষপর্যায় থেকে তাঁরা যে নির্দেশনা পেয়েছেন, তা পুরোপুরি বেআইনি।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘প্রতিপক্ষকে হামলায় নেতৃত্বদানকারী সেনারা’ বাখমুতের পশ্চিম অংশে ক্রমাগত লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। হামলায় নেতৃত্বদানকারী সেনা বলতে তারা সাধারণত ভাগনার গ্রুপকে ইঙ্গিত করে থাকে।

মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, রুশ ছত্রীসেনাদের তারা প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিয়েছে। তবে সেনারা তাঁদের পদবি ছাড়ছেন বলে প্রিগোশিন যে অভিযোগ করেছেন, সে সম্পর্কে মন্ত্রণালয় কোনো মন্তব্য করেনি।

ইউক্রেনের বিভিন্ন যুদ্ধক্ষেত্রের তুলনায় বাখমুত যুদ্ধ দীর্ঘমেয়াদি এবং এখানকার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেশি। যুদ্ধে দুই পক্ষই হাজারো সেনা হারিয়েছে।

বাখমুতে রাশিয়ার হয়ে লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছে ভাগনার। যুদ্ধ শুরুর আগে শহরটিতে প্রায় ৭০ হাজার মানুষের বসবাস ছিল। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ভাগনার এবং রুশ সামরিক বাহিনীর মধ্যকার দ্বন্দ্ব গভীর হয়ে উঠেছে। প্রিগোশিন বারবারই অভিযোগ করেছেন, রাশিয়া তার বাহিনীর সেনাদের জন্য যথেষ্ট পরিমাণ অস্ত্র সরবরাহ নিশ্চিত করতে পারছে না। প্রিগোশিন বলেছেন, রাশিয়ার কাছ থেকে প্রয়োজনীয় অস্ত্র সরবরাহ না পেলে আজ বুধবার (১০ মে) থেকে ভাগনার সেনাদের সরিয়ে নেওয়া হবে।

তবে গতকাল মঙ্গলবার প্রিগোশিন বলেছেন, তিনি এবং তাঁর বাহিনী যদি অবস্থান ছেড়ে চলে যায় তবে তাদের বিশ্বাসঘাতক হিসেবে বিবেচনা করা হবে। অস্ত্র সরবরাহ পাওয়ার জন্য আরও কয়েক দিন অপেক্ষা করবেন বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।

রাশিয়ার সামরিক নেতাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়ে এলেও প্রিগোশিন কখনো সরাসরি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সমালোচনা করেননি।

প্রিগোশিন পুতিনের পাচক হিসেবে পরিচিত। কারণ, খাবার সরবরাহের জন্য তাঁর কোম্পানির সঙ্গে ক্রেমলিনের চুক্তি হওয়ার পর এ খেতাব পান তিনি। ভাগনারপ্রধান প্রিগোশিনের বিরুদ্ধে পশ্চিমা দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞাও আছে।