ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার ইঙ্গিত অস্ট্রেলিয়ার
রাষ্ট্র হিসেবে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওং বলেছেন, শান্তি স্থাপনের লক্ষ্যে অস্ট্রেলিয়া ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিতে পারে। তবে সরকারে হামাসের কোনো ভূমিকা থাকবে না বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
অস্ট্রেলিয়ার বিরোধী দল ও জায়নবাদী ফেডারেশন দুই পক্ষই বলছে, এ ধরনের পদক্ষেপ অবিবেচনাপ্রসূত হবে।
দীর্ঘদিন থেকে ক্যানবেরা বলে আসছে, শুধু ইসরায়েলের সঙ্গে মধ্যস্থতা করে দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানের অংশ হিসেবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি আসতে পারে।
তবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওং চলতি বছরের শুরুর দিকে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের একটি বক্তব্যের সুরেই সুর মিলিয়েছেন। সে সময় ক্যামেরন ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, ইসরায়েলের সমর্থন ছাড়াই ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিতে পারে যুক্তরাজ্য।
ইসরায়েলি বিমান হামলায় গাজায় একজন অস্ট্রেলিয়ান ত্রাণকর্মী নিহত হওয়ার পরও অস্ট্রেলিয়া সরকার সাম্প্রতিক মাসগুলোতে গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
গতকাল মঙ্গলবার রাতে এক বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওং বলেছেন, একটি দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধান হলো ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিরা পৃথক দেশে পাশাপাশি বাস করবে। এটাই সহিংসতার অবিরাম চক্র ভাঙার একমাত্র আশা। তিনি বলেন, ‘দশকের পর দশক ধরে সব পক্ষই এই পদ্ধতিতে ব্যর্থ হয়েছে। সেই সঙ্গে নেতানিয়াহু সরকারের ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের প্রশ্নে অস্বীকৃতি ব্যাপক হতাশার সৃষ্টি করেছে। তাই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এখন ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রত্বের প্রশ্নটিকে দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানের দিকে গতি বাড়ানোর উপায় হিসেবে বিবেচনা করছে।’
দেশটির বিরোধী দলের পররাষ্ট্রবিষয়ক মুখপাত্র সাইমন বার্মিংহাম এক বিবৃতিতে বলেছেন, তাঁরা এ ধরনের পদক্ষেপকে সমর্থন করেন না। প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজের সরকার দশকের দশক ধরে ‘দ্বিদলীয় অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রনীতি ভেঙে দেওয়ার’ হুমকি দিচ্ছে।
এদিকে জায়োনবাদী ফেডারেশন অব অস্ট্রেলিয়ার প্রেসিডেন্ট জেরেমি লিবলার বলেছেন, ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির বিষয়ে যেকোনো আলোচনাই ‘অবিবেচনাপ্রসূত’। তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রের স্বীকৃতির বিষয়ে কোনো আলোচনা বিশ্বাসযোগ্য হওয়ার আগে, হামাসকে অবশ্যই অপসারণ করতে হবে। ফিলিস্তিনি নেতৃত্বের জন্য একটি নতুন প্রজন্মের উত্থান করতে হবে, যারা দুর্নীতিগ্রস্ত নয়, সহিংসতাকে প্রশ্রয় দেবে না এবং ইহুদি রাষ্ট্র হিসেবে ইসরায়েলের অস্তিত্বের অধিকারকে স্বীকৃতি দেবে।’
১৯৮৮ সাল থেকে জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্যরাষ্ট্রের মধ্যে ১৪০টি ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে আসছে। এদিকে চলতি বছর ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে সম্মত হয়েছে স্পেনসহ ইউরোপের চারটি দেশ। অন্য তিনটি দেশ হলো আয়ারল্যান্ড, মাল্টা ও স্লোভেনিয়া। ইতিমধ্যে তারা ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রাথমিক পদক্ষেপ নিয়েছে। এবার অস্ট্রেলিয়াও একই ইঙ্গিত দিল।
ফিলিস্তিন জাতিসংঘের ‘পর্যবেক্ষক রাষ্ট্র’ হিসেবে তালিকায় আছে। চলতি সপ্তাহে জাতিসংঘ ফিলিস্তিনকে সংস্থার পূর্ণ সদস্যপদ দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করবে।