২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

ইউক্রেনে কারও মনে উচ্ছ্বাস, কারও মনে পাল্টা আক্রমণের শঙ্কা

শনিবার ইউরোপের সবচেয়ে দীর্ঘ এ সেতুতে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে
ছবি: রয়টার্স

রাশিয়ার সঙ্গে ক্রিমিয়াকে সংযোগকারী একমাত্র সেতুটি বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর এ নিয়ে ইউক্রেনীয়দের মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা গেছে। অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে পোস্ট দিচ্ছেন।  তবে এর মধ্যেও কারও কারও মনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। রাশিয়ার প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপের আশঙ্কায় আছেন কেউ কেউ। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে ইউক্রেনের এমন চিত্র উঠে এসেছে।

শনিবার ইউরোপের সবচেয়ে দীর্ঘ এ সেতুতে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। রুশ তদন্ত কর্মকর্তারা বলেছেন, একটি লরির বিস্ফোরণ ঘটলে কাছে থাকা একটি গাড়ির তিন আরোহী নিহত হয়েছেন। এ সেতুটিকে ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া উপদ্বীপকে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত করার প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই রেল ও সড়ক সংযোগ কার্চ সেতু হিসেবেও পরিচিত। সেতুটি ২০১৮ সালে চালু হয়। ইউক্রেনে রাশিয়ার চলমান সামরিক অভিযানে এটি মস্কোর প্রধান সরবরাহ রুট।

আরও পড়ুন

ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত সেতুটির ভিডিও দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়েছে। একে রুশ যুদ্ধজাহাজ মস্কভা ডুবে যাওয়ার ঘটনার সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে। এপ্রিলে যুদ্ধজাহাজটি ডুবে যায়।

ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক টুইটার পোস্টে বলেছে, ‘ইউক্রেনীয় ক্রিমিয়ায় রাশিয়ার শক্তিমত্তার দুই উল্লেখযোগ্য প্রতীক মস্কভা যুদ্ধজাহাজ এবং কার্চ সেতু ধ্বংস হয়ে গেছে। হে রুশ, পরবতী ধাপে কী ঘটতে যাচ্ছে?’

ইউক্রেনের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সেক্রেটারি ওলেকসি দানিলভ ক্ষতিগ্রস্ত সেতুটির একটি ভিডিও টুইটারে পোস্ট করেছেন। ইউক্রেনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীরা বিভিন্ন ক্যাপশন দিয়ে ছবি ও ভিডিও প্রকাশ করছেন। বিবিসিতে প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে, কার্চ সেতুতে আগুন জ্বলার দৃশ্যটিকে চিত্রকর্মের মধ্য দিয়ে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

ইউক্রেনের কিয়েভে ওই চিত্রকর্মের সামনে দাঁড়িয়ে আনন্দ করছে এবং পতাকা হাতে ছবি তুলছে মানুষ। ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম ব্যাংক মনোব্যাংক বলেছে, তারা ইতিমধ্যে বিধ্বস্ত সেতুর নকশায় নতুন একটি ডেবিট কার্ড তৈরি করেছে।

সম্প্রতি রাশিয়ার কাছ থেকে বেশ কিছু এলাকা দখলমুক্ত করেছে ইউক্রেন। এমন অবস্থায় রাশিয়ার সঙ্গে ক্রিমিয়াকে সংযোগকারী সেতুটিকে আগুনে জ্বলতে দেখার দৃশ্য ইউক্রেনীয়দের মনোবল আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে বলে উল্লেখ করেছে বিবিসি।

আগস্টে ক্রিমিয়ায় রুশ বিমানঘাঁটিতে রহস্যজনক হামলার ঘটনার পর ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা যে ধরনের আনন্দ পেয়েছিলেন, এখন অনেকটা সে ধরনের অনুভূতিই পাচ্ছেন তাঁরা।

রাশিয়ার সরবরাহ শৃঙ্খলের ক্ষেত্রে সড়ক ও রেলসেতুগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত। এগুলো ছাড়া খেরসনের উত্তরে সেনা ও সামরিক সরঞ্জাম পাঠাতে মস্কোকে আরও বেশি বেগ পেতে হবে।

এ ছাড়া কিয়েভও মস্কোকে বার্তা দিতে চাইছে, ‘ক্রিমিয়া আমাদের এবং ক্রমান্বয়ে আমরা এটি দখলমুক্ত করব।’

তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমজুড়ে এত সব উচ্ছ্বাসের পরও ইউক্রেনীয়দের কারও কারও মধ্যে উদ্বেগ দেখা গেছে। বৃহস্পতিবারের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ১৭ জন নিহত হওয়ার ধাক্কা এখনো সেখানকার মানুষ কাটিয়ে উঠতে পারেনি।

স্থানীয় মানুষের ধারণা, সম্প্রতি সামরিকভাবে ব্যর্থতার বদলা নিতে রাশিয়া তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নিচ্ছে। তাঁদের আশঙ্কা, ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আরও ঘটতে পারে।