জার্মানির ক্ষমতাসীন জোট সরকারে ভাঙন দেখা দেওয়ার পর দেশটিতে দ্রুত পার্লামেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে মত বেশির ভাগ মানুষের। দুটি সমীক্ষায় এই মতামত উঠে এসেছে।
জার্মানিতে সবশেষ পার্লামেন্ট নির্বাচন হয় ২০২১ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর। নির্বাচনের পর সামাজিক গণতান্ত্রিক দল, পরিবেশবাদী সবুজ দল ও ও ফ্রি গণতান্ত্রিক দল চার বছরের জন্য জোট সরকার গঠন করে। কিন্তু মতপার্থক্যের জেরে তিন বছরের মাথায় জোট সরকারে ভাঙন দেখা দেয়।
গত বুধবার সন্ধ্যায় ফ্রি গণতান্ত্রিক দলের সভাপতি ও অর্থমন্ত্রী ক্রিশ্চিয়ান লিন্ডনারকে সরকার থেকে বহিষ্কার করেন চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ। ফলে এই সরকার সংখ্যালঘু হয়ে এখন পতনের ঝুঁকির মুখে। এখন বিরোধী কারও সমর্থন না পেলে এই সরকারের পক্ষে টিকে থাকা সম্ভব হবে না।
গতকাল বৃহস্পতিবার জার্মানির অন্যতম প্রভাবশালী এআরডি টেলিভিশন প্রচারিত এক সমীক্ষায় বলা হয়, এ মুহূর্তে ৬৫ শতাংশ মানুষ (জরিপে অংশগ্রহণকারী) দ্রুত পার্লামেন্ট নির্বাচনের পক্ষে। ৩৩ শতাংশ চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ প্রস্তাবিত মতের পক্ষে। তিনি আগামী বছরের ১৫ মার্চ নতুন পার্লামেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা বলেছেন।
অপর প্রভাবশালী জার্মান টেলিভিশন জেডিএফ প্রচারিত পৃথক এক সমীক্ষায় একই ধরনের মতামত উঠে এসেছে। এই সমীক্ষা অনুযায়ী, জরিপে অংশ নেওয়া ৫৯ শতাংশ মানুষ জোট সরকরের ভাঙনকে স্বাগত জানিয়েছেন। জোট সরকারের ব্যর্থতার জন্য ৪০ শতাংশ মানুষ ফ্রি গণতান্ত্রিক দলকে দায়ী করেছেন। ২৬ শতাংশ মানুষ পরিবেশবাদী সবুজ দল এবং ১৯ শতাংশ চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজের সামাজিক গণতান্ত্রিক দলকে দায়ী করেছেন।
বর্তমানে সংখ্যালঘু জোট সরকারে থাকা পরিবেশবাদী সবুজ দল ও সামাজিক গণতান্ত্রিক দল আগামী বছরের মার্চ মাসে নির্বাচন করতে চায়। কিন্তু বিরোধী দলগুলো দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠানের আহ্বান জানাচ্ছে। জরিপে অংশ নেওয়া বেশির ভাগ মানুষ এই মতের পক্ষেই অবস্থান ব্যক্ত করেছেন।
চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ ইতিমধ্যে ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি আগামী বছরের ১৫ জানুয়ারি পার্লামেন্টে তাঁর সরকারের প্রতি সমর্থনের বিষয়ে আস্থা ভোটের আয়োজন করবেন। আর মার্চের শেষে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা বলেছেন তিনি।
চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজের সরকার সংখ্যালঘু হয়ে পতনের ঝুঁকির মুখে। এখন তারা টিকে থাকার জন্য বিরোধী ক্রিশ্চিয়ান গণতান্ত্রিক দলের সমর্থন আশা করছে।
জার্মান পার্লামেন্টের প্রধান বিরোধী দল ক্রিশ্চিয়ান গণতান্ত্রিক দল। দলটির নেতা ফ্রেডরিখ মার্জ। তিনি আগামী নির্বাচনে চ্যান্সেলর প্রার্থী হবেন। ক্রিশ্চিয়ান গণতান্ত্রিক দলের সহযোগী ক্রিশ্চিয়ান ইউনিয়ন। এই দলের নেতা মার্কোস সোডার। উভয় নেতা বর্তমান জোট সরকারকে টিকিয়ে রাখতে সহায়তা করতে চান না। এই সহায়তা না করার অর্থ হলো, চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে, নতুন নির্বাচনের ঘোষণা দিতে হবে।