গুরুত্বপূর্ণ আভদিভকা শহর থেকে সেনা প্রত্যাহার করল ইউক্রেন
পূর্বাঞ্চলীয় আভদিভকা শহর থেকে সামরিক বাহিনী প্রত্যাহার করে নিয়েছে ইউক্রেন। সাম্প্রতিক সময়ে গুরুত্বপূর্ণ শহরটির সার্বিক পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি ঘটছিল। ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর জেনারেল ওলেকসান্দার তারনাভস্কি আজ শনিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের দ্বিতীয় বছর পূর্ণ হবে। এ পটভূমিতে আভদিভকা থেকে ইউক্রেনের পিছু হটাকে রাশিয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রতীকী বিজয় হিসেবে দেখা হচ্ছে। গত বছরের মে মাস থেকে বাখমুত দখল করে রেখেছে রুশ বাহিনী। এরপর আভদিভকার নিয়ন্ত্র্রণ পেল তারা।
জেনারেল তারনাভস্কি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে বলেছেন, ‘আভদিভকার আশপাশের পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করে, (রুশ বাহিনীর) ঘেরাও থেকে থেকে বাঁচতে এবং সেনাদের জীবন ও স্বাস্থ্য সুরক্ষায় শহরটি থেকে আমাদের ইউনিটগুলো প্রত্যাহারের এবং আরও অনুকূল পরিস্থিতিতে প্রতিরক্ষায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
৮ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী ওলেকসান্দর সিরস্কিকে নতুন প্রধান হিসেবে পেয়েছে। এরপর যুদ্ধক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো। তিনিও বলেছেন, সেনাদের জীবন রক্ষায় ও (রুশ বাহনীর) ঘিরে ফেলা ঠেকাতেই এ সিদ্ধান্ত। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এ কথা জানিয়েছেন।
ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর আগে আভদিভকায় প্রায় ৩৪ হাজার মানুষের বসবাস ছিল। এর আগে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, আভদিভকার নিয়ন্ত্রণ রুশ বাহিনী নিতে পারে বলে সতর্ক করে যুক্তরাষ্ট্র। দুই বছর ধরে চলা এই যুদ্ধে সাম্প্রতিক মাসগুলোয় যেসব জায়গায় দুই পক্ষের মধ্যে তীব্র লড়াই হয়েছে, সেগুলোর একটি আভদিভকা।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কারবি বলেন, ‘আভদিভকা রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে চলে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।’ ইউক্রেনের গোলাবারুদের ঘাটতির কথা তুলে ধরে এসব কথা বলেন তিনি।
রুশ সেনারা আভদিভকা লড়াইয়ে অগ্রগতি পেয়েছে। তারা শহরটি ঘিরে ফেলার মতো অবস্থায় পৌঁছে গেছে। এ পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ‘যত বেশি সম্ভব ইউক্রেনীয়দের প্রাণ বাঁচানোর’ জন্য যা যা করা দরকার, তার সবই করার কথা জানান।
রুশ হামলায় আভদিভকা শহরটি প্রায় পুরোপুরি ধ্বংস হয়েছে। এই শহরকে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের দোনেৎস্কে প্রবেশের দ্বার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। দোনেৎস্ক অঞ্চলের রাজধানী শহর দোনেৎস্কের ২০১৪ সালে নিয়ন্ত্রণে নেন রুশপন্থী যোদ্ধারা। পরে গণভোটের মাধ্যমে এই অঞ্চলকে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত করেছে মস্কো।