পুতিনের হুমকিকে গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া উচিত: ইইউ
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের যে হুমকি দিয়েছেন, তা ইউরোপীয় ইউনিয়নের গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া উচিত বলে মনে করেন ব্লকটির পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল। বিবিসির সংবাদদাতা লিস ডুসেটকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ এখন ‘বিপজ্জনক মুহূর্তে’ পৌঁছেছে।
বোরেল বলেন, ‘রুশ সেনারা কোণঠাসা হয়ে পড়ায় অবশ্যই পরিস্থিতি বিপজ্জনক দিকে মোড় নিয়েছে এবং এর প্রতিক্রিয়ায় পুতিন পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের যে হুমকি দিয়েছেন, তা খুবই খারাপ।’
ইউক্রেনে রুশ হামলা শুরুর সাত মাস পর বিশ্লেষকেরা একমত যে প্রেসিডেন্ট পুতিনের বাহিনী পিছিয়ে আছে। এ অবস্থায় বোরেল মনে করেন, এ সংকটের একটি ‘কূটনৈতিক সমাধানে’ পৌঁছাতে হবে; যা ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষা করে। না হলে যুদ্ধ হয়তো থামবে, কিন্তু শান্তি আসবে না এবং আবার যুদ্ধ বাধার হুমকি থেকে যাবে।
এ সপ্তাহের শুরুর দিকে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে পুতিন বলেছিলেন, তাঁর দেশের হাতে ‘বিধ্বংসী নানা ধরনের মারণাস্ত্র’ রয়েছে এবং ‘আমাদের হাতে যা আছে, তার সবই আমরা ব্যবহার করব।’ তিনি আরও বলেছিলেন, ‘আমি ধাপ্পাবাজি করছি না।’
বোরেল পুতিনের সেই ভাষণের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘কেউ যদি বলে তাঁর কথাটা ধাপ্পাবাজি নয়, তখন সেটা গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া উচিত।’
ইউক্রেনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অস্ত্র সরবরাহ কমে গেছে, এমন উদ্বেগকে খারিজ করে দিয়েছেন বোরেল। তিনি বলেন, ইইউ অবশ্যই ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা দিয়ে যাবে। পাশাপাশি প্রেসিডেন্ট পুতিন এবং তাঁর মিত্রদের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগ এবং কূটনৈতিক কার্যক্রম চালাতে হবে। তবে তিনি এটা স্বীকার করেছেন যে এ যুদ্ধের কারণে জ্বালানির দাম বৃদ্ধি একটি উদ্বেগের বিষয়।
স্পেনের রাজনীতিক বোরেল নিজ দেশের উদাহরণ টেনে বলেন, ‘আমার দেশের লোকেরা আমাকে জানিয়েছে, গ্যাসের দাম বাড়ায় তারা কাজ করতে পারছে না, ব্যবসা চালাতে পারছে না।’ একই ধরনের উদ্বেগের কথা তিনি আফ্রিকা, দক্ষিণ আমেরিকা ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর নেতাদের কাছেও শুনেছেন বলে জানান।
বোরেল আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে পৌঁছানোর জন্য রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনকে আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘যাঁরাই মস্কোতে, ক্রেমলিনে পুতিনের সঙ্গে কথা বলতে গেছেন, তাঁরা পুতিনের কাছ থেকে একই উত্তর নিয়ে ফিরে এসেছেন। পুতিন বলেছেন, “আমার সামরিক উদ্দেশ্য আছে, যতক্ষণ না এই সামরিক উদ্দেশ্যগুলো হাসিল হবে, ততক্ষণ আমি লড়াই চালিয়ে যাব।”’ এটি অবশ্যই উদ্বেগজনক উল্লেখ করে ইইউর পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল বলেন, তারপরও ইউক্রেনের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখতে হবে।