পশ্চিমারা তেলের মূল্য বেঁধে দিলেও ক্ষতি হবে না: রাশিয়া
রাশিয়া থেকে আমদানি করা অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম বেঁধে দেওয়ার পশ্চিমা পদক্ষেপ আজ সোমবার থেকে কার্যকর হয়েছে। তবে রাশিয়া জানিয়েছে, এই পদক্ষেপ মানবে না মস্কো। এর মধ্য দিয়ে ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার অর্থনৈতিক সক্ষমতা কমানোর চেষ্টা সফল হবে না। খবর রয়টার্স ও এএফপির।
মস্কোয় আজ ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সাংবাদিকদের বলেন, ‘চলমান সামরিক অভিযান এগিয়ে নিতে সম্ভাব্য সব ধরনের প্রয়োজন মেটাতে সক্ষম রাশিয়ার অর্থনীতি। জ্বালানি তেলের দাম বেঁধে দিয়ে পশ্চিমারা আমাদের সক্ষমতায় প্রভাব ফেলবে না। এ পদক্ষেপ কার্যকর হবে না। রাশিয়া মানবেও না।’
এর আগে গত শুক্রবার রাশিয়ার অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম বেঁধে দেয় ধনী দেশগুলোর জোট জি-৭, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও অস্ট্রেলিয়া। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, রাশিয়া থেকে সমুদ্রপথে আমদানি করা প্রতি ব্যারেল তেল ৬০ ডলারের বেশি দামে কেনা যাবে না। ইউক্রেনে হামলার জেরে মস্কোকে চাপে ফেলার চেষ্টার অংশ হিসেবে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
এতে আরও বলা হয়, জি-৭ এবং ইইউর মালিকানাধীন কার্গো ব্যবহার করে তৃতীয় পক্ষের কাছে জ্বালানি তেল বেচতে পারবে মস্কো। এমনকি এসব দেশের বিমা কোম্পানিগুলো মস্কোর সঙ্গে ব্যবসা চালিয়ে যেতে পারবে। কিন্তু মানতে হবে ব্যারেলপ্রতি ৬০ ডলারের শর্ত।
রুশ জ্বালানি তেলের দাম বেঁধে দেওয়ার প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র গতকাল রোববার জানিয়েছে, এর ফলে দ্রুত রাশিয়ার আয় কমতে শুরু করবে। অচিরেই বড় ধাক্কা খাবেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। অন্যদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি গতকাল বলেছেন, রাশিয়া তেলের বাজারে অস্থিরতা ছড়িয়েছে। তাই দেশটির বিরুদ্ধে এটা বেশ ‘দুর্বল’ একটি পদক্ষেপ।
ইউরোপীয় কমিশনের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, প্রতি দুই মাস পরপর রুশ জ্বালানি তেলের এই দাম মূল্যায়ন করা হবে। এর ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে পশ্চিমারা।
ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চলছেই
ইউক্রেনজুড়ে আজও আরেক দফা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রুশ বাহিনী। এ বিষয়ে ইউক্রেনের বিমানবাহিনীর মুখপাত্র ইউরি ইহনাত বলেন, ধারাবাহিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জেরে নাগরিকদের নিরাপদ জায়গায় অবস্থান নিতে বলা হয়েছে।
অন্যদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের প্রধান সহযোগী আন্দ্রি ইয়েরমাক দেশটির বাসিন্দাদের সতর্ক করে বলেন, ‘রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বন্ধ হয়নি। এ-সংক্রান্ত অ্যালার্ম উপেক্ষা করবেন না।’
অন্যদিকে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ আজ বলেছেন, পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো রাশিয়াকে ‘গুরুতর হুমকি’ দিচ্ছে। তাঁর অভিযোগ, পশ্চিমারা রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে জড়াতে চাইছে। কিন্তু একটি পারমাণবিক অস্ত্রসমৃদ্ধ দেশের সঙ্গে এমন সংঘাত ভালো ফল বয়ে আনবে না।
মস্কো-বেইজিং ঐকমত্য
ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বিশ্ব রাজনীতিতে যেসব চ্যালেঞ্জ ও চাপ দেখা দিয়েছে, তা একযোগে মোকাবিলা করার বিষয়ে একমত হয়েছে রাশিয়া ও চীন। রুশ প্রধানমন্ত্রী মিখাইল মিশুস্তিন ও চীনা প্রধানমন্ত্রী লি কেছিয়াংয়ের অনলাইন বৈঠকের পর ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়েছে।