ইউক্রেনের বিভিন্ন এলাকা বিদ্যুৎ–বিচ্ছিন্ন, রাশিয়াকে দায়ী করল কিয়েভ

খারকিভের একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর আগুন ধরে যায়।
খবর: রয়টার্স

ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের একটা বড় অংশ বিদ্যুৎ–বিচ্ছিন্ন অবস্থায় আছে। এসব এলাকায় পানি সরবরাহব্যবস্থাও বন্ধ। এর জন্য জ্বালানি অবকাঠামোসহ বিভিন্ন বেসামরিক স্থাপনায় রাশিয়ার হামলাকে দায়ী করেছে ইউক্রেন। বিভিন্ন এলাকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মস্কো এসব হামলা চালাচ্ছে বলে উল্লেখ করেছে কিয়েভ। খবর আল–জাজিরা ও বিবিসির

ইউক্রেনের সেনাদের পাল্টা হামলায় কয়েকটি এলাকা থেকে রুশ সেনারা সরে যাওয়ার এক দিন পর গতকাল রোববার দেশটির পূর্বাঞ্চলে বড় অংশজুড়ে বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে খারকিভ অঞ্চলের গভর্নর ওলেগ সিনেগুবভ বলেন, বেশ কয়েকটি এলাকায় কোনো বিদ্যুৎ–সংযোগ কিংবা পানি সরবরাহব্যবস্থা সচল নেই। যেসব জায়গায় হামলা হয়েছে, সেখানকার আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে জরুরি সেবা বিভাগ কাজ করছে।

আরও পড়ুন

গতকাল সুমি, দিনিপ্রপেত্রভস্ক, পোলতাভা, জাপোরিঝঝিয়া ও ওদেসা এলাকায়ও একই পরিস্থিতি দেখা দেয় বলে খবর পাওয়া গেছে। অবশ্য সুমি, দিনিপ্রপেত্রভস্ক ও পোলতাভা অঞ্চলের কর্মকর্তারা বলেছেন, বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার ঘোষণা দেওয়ার কিছুক্ষণ পরই সংযোগ পুনঃস্থাপন করা হয়েছে।

ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওলেগ নিকোলেঙ্কো বলেন, পূর্বাঞ্চলীয় ইউক্রেনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার পর হতাশা থেকে রাশিয়া হামলা চালিয়েছে।

অনলাইনে দেওয়া এক বিবৃতিতে দিনিপ্রপেত্রভস্ক অঞ্চলের প্রধান দিমিত্র রেজনিচেঙ্কো বলেন, রুশ সেনারা জ্বালানি অবকাঠামোগুলোয় হামলা করেছেন। যুদ্ধক্ষেত্রে পরাজয় মেনে নিতে পারছেন না তাঁরা।

খারকিভের মেয়র ইহোর তেরেখোব বলেছেন, বেসামরিক স্থাপনায় রাশিয়ার হামলার কারণে শহরের বেশির ভাগ অংশ বিদ্যুৎ ও পানিহীন হয়ে পড়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে জেলেনস্কি বলেন, খারকিভ ও দোনেৎস্ক অঞ্চল পুরোপুরি এবং জাপোরিঝঝিয়া, দিনিপ্রপেত্রভস্ক ও সুমি অঞ্চল আংশিক বিদ্যুৎ–বিচ্ছিন্ন অবস্থায় আছে।

আরও পড়ুন

মস্কো ইচ্ছাকৃতভাবে ইউক্রেনের বেসামরিক স্থাপনায় হামলা চালাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। জেলেনস্কি আরও বলেন, এর জন্য ‘রুশ সন্ত্রাসীরা’ দায়ী। আলো ও তাপ থেকে মানুষকে বঞ্চিত করাই এর উদ্দেশ্য।

রাশিয়ার পূর্বাঞ্চলে রুশ হামলার কারণে রেল যোগাযোগব্যবস্থাও ব্যাহত হচ্ছে। খারকিভসহ পুরো পূর্বাঞ্চলে ট্রেন চলাচল বিলম্বিত হবে বলে ইউক্রেনের জাতীয় ট্রেনসেবা ব্যবস্থার পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে।

এদিকে পূর্বাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ শহর ইজিয়ুম ও খারকিভ অঞ্চলকে দখলমুক্ত করায় গতকাল ইউক্রেনীয় সেনাদের প্রশংসা করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। রুশ অভিযান শুরুর ২০০তম দিনে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বালাকলিয়া, ইজিয়ুম, কুপিয়ানস্কসহ কয়েক শ শহর ও গ্রাম দখলমুক্ত করার জন্য সেনাদের প্রতি ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।

জেলেনস্কি বলেছেন, ইউক্রেনের সেনারা গত বৃহস্পতিবার থেকে গতকাল সন্ধ্যা নাগাদ তিন হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা দখলমুক্ত করতে পেরেছেন।