বাংলাদেশে সহিংসতার প্রতিবাদে যুক্তরাজ্যে বিক্ষোভ

বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সৃষ্ট সহিংসতার প্রতিবাদে ট্রাফালগার স্কয়ারে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থী ও প্রবাসী বাংলাদেশীরা। গত সোমবারছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সৃষ্ট সহিংসতা, শিক্ষার্থী হত্যা ও হয়রানির প্রতিবাদে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন শহর ও বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থী ও প্রবাসী বাংলাদেশিরা। অনেক জায়গায় বিদেশিরাও অংশ নিয়েছেন বিক্ষোভে। এসব কর্মসূচি থেকে শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতন বন্ধ করাসহ বিভিন্ন দাবি জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংস পরিস্থিতি শুরু হওয়ার পর থেকে লন্ডনসহ যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন শহরে প্রতিদিন বিক্ষোভ কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। এসব বিক্ষোভ থেকে শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতন বন্ধ করা, হত্যা ও নির্যাতনের নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে আসছেন প্রবাসীরা।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে গত বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) কয়েক হাজার ব্রিটিশ বাংলাদেশি পূর্ব লন্ডনের আলতাব আলী পার্কে জড়ো হন। তাঁরা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতনের নিন্দা জানান এবং তাঁদের দাবি মেনে নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

পরদিন শুক্রবার (১৯ জুলাই) বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, গবেষক ও শিক্ষকেরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক শ্যালডনিয়ন থিয়েটারের সামনে আয়োজিত সমাবেশে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা বন্ধের দাবি জানান তাঁরা।

একই দিন যুক্তরাজ্যের বার্মিংহামে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে, পোর্টসমাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে, লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে, আলতাব আলী পার্কে, বিবিসির প্রধান কার্যালয়ের সামনে, লুটন, ম্যানচেস্টার, নিউক্যাসল, অক্সফোর্ড, এডিনবরা, ড্যান্ডি, কার্ডিফসহ বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ করেন প্রবাসীরা।

গত সোমবার (২২ জুলাই) ঐতিহাসিক ট্রাফালগার স্কয়ারে সবচেয়ে বড় প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ওই প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে পরে পার্লামেন্ট স্কয়ারের সামনেও বিক্ষোভ করেন প্রবাসীরা।

প্রতিবাদ সমাবেশে অংশগ্রহণকারী শাহনাজ শিমুল রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা প্রবাসীরা নিজের দেশের মানুষের জন্য কাজ করি। দেশের এই অবস্থায় আমরা চাই, যারা মারা গেছে, তাদের হত্যার বিচার হোক। দ্রুত আমার সোনার বাংলা স্বাভাবিক পর্যায়ে ফিরে আসুক।’

ইমতিয়াজ হোসাইন নামের একজন আইনজীবী বলেন, ‘সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে পুলিশের গুলির ঘটনায় আমরা প্রবাসীরা বিস্মিত। জনসমর্থন হারিয়ে সরকার শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে প্রতিহত করার চেষ্টা করছে। প্রত্যেকটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনার নিন্দা জানাই এবং সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।’

পোর্টসমাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সালমান বলেন, ‘আমাদের নিষ্পাপ ভাই-বোনদের মৃত্যুতে আজ আমরা ভাষাহীন, গভীর শোকাচ্ছন্ন। দেশের এই কঠিন সময়ে বাংলাদেশি স্টুডেন্ট কমিউনিটি ইউনিভার্সিটি অব পোর্টসমাউথের পক্ষ থেকে আমরা সব অন্যায়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছি। আমরা দেশের ভাই-বোনদের পাশে আছি, অধিকার আদায়ের পক্ষে রয়েছি।’