জার্মানিতে ‘ক্রিসমাস মার্কেটে’ গাড়ি চালিয়ে হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪, আহত ২০০

ক্রিসমাস মার্কেটে হামলায় আহত ব্যক্তিদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। হামলার পর মাগডেবুর্গ জনশূন্য হয়ে পড়েছবি: এএফপি

জার্মানিতে ক্রিসমাস মার্কেটে (বড়দিন উপলক্ষে বসা বাজার) গাড়ি চালিয়ে হামলার ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে চারজনে পৌঁছেছে। আহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০০ জনে। দেশটির সাক্সেন-আনহাল্ট রাজ্যের রাজধানী মাগডেবুর্গে স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় এই হামলার ঘটনা ঘটেছে।

বিবিসির খবরে জার্মানির সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম এআরডির বরাতে হতাহতের এই সংখ্যা জানানো হয়েছে। তবে আহতদের অবস্থা গুরুতর কি না তা নিশ্চিত করে জানাতে পারেনি বিবিসি।

হামলার পর জার্মান পুলিশ সৌদি আরবের নাগরিককে আটক করেছে । পুলিশ বলছে, তিনি ২০০৬ সালে থেকে জার্মানিতে বসবাস করছিলেন। তিনি সম্প্রতি বার্নবার্গে একজন চিকিৎসক হিসাবে কাজ করেছিলেন। তাঁর বয়স ৫০ বছর। জার্মানির কয়েকটি গণমাধ্যমের বরাতে এএফপির খবর বলছে, সন্দেহভাজন হামলাকারীর নাম তালেব এ। তিনি মনোরোগ বিশেষজ্ঞ। রয়টার্সের খবর বলছে, এই হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে সৌদি আরব। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এই নিন্দা জানায়।

আগামী ২৫ ডিসেম্বর বড়দিনের আগে ইউরোপ জুড়ে ছোট বড় শহরে ‘ক্রিসমাস মার্কেট’ প্রাচীন ঐতিহ্য। বড়দিনের আগে উৎসব মুখর পরিবেশে এসব মার্কেটে হাতে তৈরি নানা সামগ্রী থেকে শুরু করে শীতকালীন বস্ত্র, কেক জাতীয় খাবার বা মিষ্টান্ন ও নানা ধরনের পানীয় পাওয়া যায়। এ ছাড়াও সংগীতানুষ্ঠান হয়ে থাকে।

গতকাল সন্ধ্যায় মাগডেবুর্গ শহরে ‘ক্রিসমাস মার্কেট’ জমজমাট হয়ে উঠেছিল। সন্ধ্যা সাতটার কিছু পরেই একজন গাড়িচালক অসংখ্য মানুষের মধ্য দিয়ে মার্কেটের ভেতরে প্রায় ৪০০ মিটার পথ গাড়ি চালিয়ে নিয়ে যায়। এরপর জার্মানির নানা শহরে ‘ক্রিসমাস মার্কেটগুলো’ আতঙ্কে বন্ধ করে দেওয়া হয়।

পুলিশ আরও বলেছে, এই হামলাকারী জঙ্গিবাদী কিনা সে বিষয়ে তাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। তবে তদন্ত চলছে।

হামলার ঘটনার পর ম্যাগডেবুর্গ পুলিশ এলাকাটি ঘেরাও করে রাখে। কারণ পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, ওই গাড়িতে বিস্ফোরক রয়েছে বলে সন্দেহ করা হয়ছে।

আরও পড়ুন

২০১৬ সালের ১৯ ডিসেম্বর বার্লিনে ‘ক্রিসমাস মার্কেটে’ তিউনিসিয়ার এক নাগরিক গাড়ি চালিয়ে হামলা করে। এতে ঘটনাস্থলে ১২ জন নিহত হয়েছিল। পরে আহত আরও একজন মারা যান। আইএস এই হামলার দায় স্বীকার করেছিল।

ম্যাগডেবুর্গ শহরের মেয়র সিমোন বোরিস বলেছেন, ‘আমি গভীরভাবে মর্মাহত। আমি কখনই ভাবতে পারিনি যে ম্যাগডেবুর্গ শহরে এমন একটি ঘটনা ঘটবে।’

ম্যাগডেবুর্গ শহরের ক্যাথলিক বিশপ গেরহার্ড ফেইজ হতাশা জানিয়েছেন। এই হামলা ভীতিকর বলে মন্তব্য করেন তিনি।

জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ হামলায় হতাহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। তিনি আগামীকাল ম্যাগডেবুর্গ শহরে যাবেন বলে জানিয়েছেন।