ট্রাম্প-পুতিনের ফোনালাপের পরও রাতভর রাশিয়া ও ইউক্রেনে হামলা
রাশিয়া ও ইউক্রেন একে অপরের ওপর গতকাল রোববার রাতভর ড্রোন হামলা চালিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে সদ্য নির্বাচিত ডোনাল্ড ট্রাম্প সংঘাত না বাড়াতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে আহ্বান জানিয়েছেন বলে মার্কিন সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশ হওয়া সত্ত্বেও এমন হামলা হয়েছে।
গত ৫ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন রিপাবলিকান নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর জয়ের মধ্য দিয়ে তিন বছর ধরে চলা ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটবে বলে আশা করা হচ্ছে। কিয়েভের প্রতিরক্ষা খাতের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের শত শত কোটি ডলার সহায়তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচার প্রচারণায় বলেছিলেন, কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তিনি যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটাতে পারেন। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সরাসরি কথা বলারও ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তিনি। তাঁর এ অবস্থান বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের অবস্থানের চেয়ে ভিন্ন।
গতকাল ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, বৃহস্পতিবার ট্রাম্পের সঙ্গে পুতিনের ফোনালাপ হয়েছে। ওই ফোনালাপে যুদ্ধের বিস্তার না ঘটাতে পুতিনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ট্রাম্প।
ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের জন্য আগামী জানুয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে। তবে এ মুহূর্তে যুদ্ধক্ষেত্র এবং যুদ্ধাঞ্চলের আকাশসীমার যে অবস্থা, তাতে সংঘাত বন্ধ হওয়ার কোনো ইঙ্গিত নেই।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়া রাতভর ইউক্রেনে ১৪৫টি ড্রোন হামলা চালিয়েছে। চলমান ইউক্রেন যুদ্ধে এক রাতে এত বেশিসংখ্যক হামলার ঘটনা আগে ঘটেনি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া পোস্টে জেলেনস্কি লিখেছেন, গত রাতে ইউক্রেনে শাহেদ ড্রোন ও অন্য ড্রোন ব্যবহার করে ১৪৫টি হামলা চালিয়েছে রাশিয়া।
ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা খাতে সহযোগিতা করতে আরও বেশি করে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য কিয়েভের পশ্চিমা মিত্রদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
রাশিয়াও বলেছে, গতকাল মস্কোকে লক্ষ্য করে ইউক্রেনের ছোড়া ৩৪টি ড্রোন ভূপাতিত করেছে রাশিয়া। ২০২২ সালে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর এটি মস্কোকে লক্ষ্য করে ইউক্রেনের সবচেয়ে বড় হামলা প্রচেষ্টা।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান গতকাল বলেছেন, ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার আগে ইউক্রেনের জন্য বরাদ্দ থাকা অবশিষ্ট ৬০০ কোটি ডলার খরচ করতে যাচ্ছে হোয়াইট হাউস। ইউক্রেনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলেও সতর্ক করেছেন তিনি।
ধারণা করা হচ্ছে, ট্রাম্প আবারও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হন, তা চাইছিল রাশিয়া। ইউক্রেনে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা নিয়ে ট্রাম্প প্রশ্ন তোলায় তাঁকে নিয়ে আশাবাদী ক্রেমলিন।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ গতকাল রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘সংকেতগুলো ইতিবাচক।’
পেসকভ বলেছেন, ‘পরে কী ঘটবে, তা বলা কঠিন।’ কমলা হ্যারিস ও জো বাইডেনের তুলনায় ট্রাম্পের বিষয়ে আগে থেকে কমই ধারণা করা যায়।