ভিডিও বার্তায় ভাগনারকে নতুন বার্তা দিলেন প্রিগোশিন
ভাড়াটে সেনা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ভাগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোশিন বলেছেন, ভাগনার সেনারা এখন আর ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নেবে না। তাঁদের নজর এখন আফ্রিকায়। সেখানে ‘নতুন যাত্রা’ শুরুর প্রস্তুতি নেবে সেনারা।
গত মাসে রাশিয়ার সেনা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার পর প্রিগোশিন কোথায় রয়েছেন, তা কেউ জানে না। অজ্ঞাত জায়গা থেকে ভাগনার সেনাদের উদ্দেশ্যে এক ভিডিও বার্তায় তিনি এসব কথা বলেন।
গতকাল বুধবার টেলিগ্রামে এই ভিডিও বার্তা পোস্ট করা হয়েছে। বিদ্রোহের পর এটাই প্রিগোশিনের প্রথম ভিডিও বার্তা।
ভিডিওর শুরুতে সেনাদের উদ্দেশ্যে প্রিগোশিন বলেন, ‘স্বাগতম ছেলেরা... বেলারুশের ভূখণ্ডে স্বাগতম।’ এ কারণে ধারণা করা হচ্ছে প্রিগোশিন এখন বেলারুশে রয়েছেন। বিদ্রোহের পর রুশ সরকারের সঙ্গে সমঝোতা অনুযায়ী, তাঁর বেলারুশে চলে যাওয়ার কথা ছিল। সেই মোতাবেক ভাগনার সেনাদেরও বেলারুশে স্থানান্তর করা হচ্ছে।
ভিডিও বার্তায় সেনাদের উদ্দেশ্যে প্রিগোশিন বলেন, ‘আমরা সম্মানের সঙ্গে যুদ্ধ করেছি। তুমি রাশিয়ার জন্য অনেক কিছু করেছো। এখন যা ঘটছে, তা অসম্মানজনক। আমাদের এর সঙ্গে জড়িত থাকার কোনো প্রয়োজন নেই।’
ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে দেশটিতে রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধ করছিল ভাগনার সেনারা। তবে রুশ সামরিক নেতৃত্বের প্রতি অসন্তোষ ছিল ভাগনারপ্রধান প্রিগোশিনের। এ অসন্তোষ থেকে গত ২৩ জুন বিদ্রোহ করে বসেন তিনি। রাশিয়ার সামরিক নেতৃত্বকে উৎখাতের জন্য ইউক্রেন সীমান্ত থেকে মস্কোর দিকে অভিযান শুরু করেন তিনি। পথে কয়েকটি শহর নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয় ভাগনার। ভাগনারের নিয়ন্ত্রণে যায় গুরুত্বপূর্ণ একটি সেনা দপ্তর।
প্রিগোশিনের বিদ্রোহের জেরে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েন। পরবর্তী সময়ে বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্দার লুকাশেঙ্কোর মধ্যস্থতায় অভিযান বন্ধের ঘোষণা দেন প্রিগোশিন। বলা হয়, প্রিগোশিনসহ ভাগনার সেনারা রাশিয়া ছেড়ে বেলারুশে চলে যাবেন। কিন্তু এর পর থেকে প্রিগোশিনের আর হদিশ মিলছিল না।
আলেক্সান্দার লুকাশেঙ্কো চলতি মাসের শুরুতে বলেছিলেন, প্রিগোশিন বেলারুশে এসেছিলেন। কিন্তু তিনি আবারও রাশিয়ায় ফিরে গেছেন। তখন থেকে প্রিগোশিনের অবস্থান নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়। তবে রুশ কর্তৃপক্ষের এক ভিডিওতে প্রিগোশিনকে বিদ্রোহের পর পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতেও দেখা গেছে।
এখন ভিডিও বার্তায় প্রিগোশিন তাঁর দলের সেনাদের বেলারুশের স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতে এবং আফ্রিকা মহাদেশে কাজের জন্য শক্তি সংগ্রহ করতে নির্দেশনা দিয়েছেন। ২০১৮ সাল থেকে মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, লিবিয়া এবং মালির অভ্যন্তরীণ সংঘাতে ভূমিকা রেখেছিল ভাগনার গ্রুপের সেনারা।
গত সোমবার মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রের সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ভাগনারের কিছু সেনা দেশটিতে এসে পৌঁছেছে। এসব সেনা ৩০ জুলাই দেশটিতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া সাংবিধানিক গণভোটের দিনে নিরাপত্তা রক্ষায় সহায়তা করবে।