ফ্রান্সে পুলিশের গুলিতে নিহত কিশোর নাহেল এমের মা আলজেরিয়ার বংশোদ্ভূত মোনিয়া বলেছেন, তিনি ছেলেকে ‘সেরা বন্ধু’ বলে মনে করতেন। ছেলেই ছিল তাঁর জীবন।
ছেলের মৃত্যুতে মাও বিদ্রোহী হয়ে উঠেছিলেন। তবে অনেকের মতো ঢালাওভাবে তিনি পুরো পুলিশ বাহিনীকে দোষারোপ করেননি। তিনি বলেন, ‘আমি শুধু একজনকেই দোষারোপ করি, যিনি আমার ছেলের জীবন নিয়েছেন।’
মা আলজেরিয়ার বংশোদ্ভূত হওয়ায় নাহেলের মৃত্যুর ঘটনায় ভূমধ্যসাগর পেরিয়ে আলজেরিয়া সরকার পর্যন্ত উদ্বিগ্ন হয়েছে। যদিও নাহেল দ্বৈত নাগরিক ছিল কি না, তা এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে জানা যায়নি।
আলজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক অনুষ্ঠানে নাহেলের মৃত্যুর ঘটনা ‘আতঙ্কের’ বলে মতামত প্রকাশ করেছে। তারা নাহেলকে আলজেরিয়ান বলে অভিহিত করে বলেছে, তার সুরক্ষা ফ্রান্সের হাতে ছিল।
গত মঙ্গলবার গাড়ি চালিয়ে যাওয়ার সময় এক তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হয় নাহেল। এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে দেশজুড়ে টানা বিক্ষোভ চলছে। এই বিক্ষোভ আজ রোববার পঞ্চম দিনে গড়াল। গতকাল শনিবার রাতে ৭১৯ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আর এর আগের রাতে প্রায় এক হাজার জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিক্ষোভ দমাতে দেশে ৪৫ হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
১৭ বছরের নাহেলের বেড়ে ওঠা প্যারিসের পশ্চিমে নতেঁ শহরের পাবলো পিকাসো নামের একটি এস্টেটে। এই এস্টেটটি অভিবাসীবহুল। একমাত্র সন্তান নাহেলকে বড় করেছেন মা। সে পণ্য ডেলিভারির কাজ করত। তার বাবার পরিচয় জানা যায়নি।
গত তিন বছর নাহেল পাইরেটস অব নতেঁ রাগবি ক্লাবে খেলেছে। ওভালে সিটিয়েন নামের একটি সমিতি স্কুলে মানিয়ে নিতে কষ্ট হচ্ছে এমন কিশোর-কিশোরীদের জন্য একটি কর্মসূচি পরিচালনা করে থাকে। নাহেলও ওই কর্মসূচিতে অংশ নিত।
নাহেলের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অপরাধের কোনো রেকর্ড নেই। নতেঁর কৌঁসুলি বলেছেন, তল্লাশিচৌকি পুলিশ থামতে বললে, সে তা করেনি। তাকে আগামী নাবালকদের জন্য একটি আদালতে হাজির হওয়ার জন্য তলব করা হয়েছিল।
গত মঙ্গলবার পুলিশ জানিয়েছে, বেপরোয়া গাড়ি চালানোর কারণে সে তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল।