ফ্রান্সে নতুন সরকার ঘোষণা, ডানপন্থীদের দখলে মন্ত্রিসভা

মিশেল বার্নিয়েফাইল ছবি: রয়টার্স

চলতি মাসের শুরুর দিকে ফ্রান্সের নতুন প্রধানমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করেছিলেন প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ। এবার নতুন সরকারের মন্ত্রীদের নাম সামনে আনলেন তিনি। প্রায় তিন মাস আগে অনুষ্ঠিত আগাম নির্বাচনে দেশটির পার্লামেন্টের জাতীয় পরিষদে বেশির ভাগ আসন পেয়েছিল বামপন্থীরা। তবে নতুন গঠন করা সরকারের অধিকাংশ সদস্যই ডানপন্থী।

পার্লামেন্টে বেশি আসন পাওয়া বামপন্থী দলগুলোর জোটকে টপকাতে ডানপন্থী রক্ষণশীল দলগুলোর হাত ধরেছিল মাখোঁর মধ্যপন্থী দল। তারপরও তাদের গঠন করা এই সরকার নতুন কোনো আইন পাসের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। তাই আইন পাসের জন্য মেরিন লা পেনের ন্যাশনাল র‍্যালির মতো দলগুলোর ওপর নির্ভর করতে হবে তাদের।

স্থানীয় সময় রোববার নতুন সরকার ঘোষণা করা হয়। মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রী মিশেল বার্নিয়ের নেতৃত্বে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদে থাকছেন ব্রুনো রোতাইয়ু। তিনি দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট নিকোলা সারকোজির গঠন করা রক্ষণশীল দল রিপাবলিকান পার্টির একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। এই দল থেকে মোট ১০ জন রাজনীতিক মন্ত্রিসভায় জায়গা পেয়েছেন।

বিদায়ী অনেক মন্ত্রীকেও নতুন মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ পদে রেখেছেন মাখোঁ। তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী সেবাস্টিয়ান লেকোর্নু প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন। ইউরোপবিষয়ক বিদায়ী মন্ত্রী জ্যঁ-নোয়েল বাহো আরও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পেয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েছেন। মাত্র একজন বামপন্থী রাজনীতিক মন্ত্রিসভায় স্থান পেয়েছেন। তিনি দিদিয়ে মিগু। তাঁকে বিচারবিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

নতুন প্রধানমন্ত্রী মিশেল বার্নিয়েও একজন রক্ষণশীল রাজনীতিক। ব্রেক্সিট নিয়ে আলোচনায় তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রধান মধ্যস্থতাকারী ছিলেন। ফ্রান্সের পার্লামেন্টের জাতীয় পরিষদ বর্তমানে যে বিভক্ত অবস্থায় রয়েছে, তাতে অন্তত টিকে থাকার মতো নতুন একটি সরকার গঠনের পেছনে কাজ করেছেন বার্নিয়ে।

এদিকে নতুন সরকার ডানপন্থীদের দখলে থাকায় ক্ষুব্ধ বামপন্থী জোট ন্যাশনাল পপুলার ফ্রন্টের (এনএফপি) সদস্যরা। এরই মধ্যে তাঁরা সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট আয়োজনের হুমকি দিয়েছেন। গত জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত আগাম নির্বাচনে জাতীয় পরিষদে সবচেয়ে বেশি আসন পেয়েছিল এই জোট। তবে সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি তারা।

আরও পড়ুন

শনিবার নতুন মন্ত্রিসভা ঘোষণার আগে রাজধানী প্যারিসে বিক্ষোভ করেছেন বামপন্থী দলগুলোর হাজার হাজার সমর্থক। মন্ত্রিসভার বিরোধিতা করে তাঁরা বলেছেন, নির্বাচনে বামপন্থীরা বেশির ভাগ আসন পেলেও সরকার গঠনের ক্ষেত্রে তাদের বিষয়টি বিবেচনা করা হয়নি।