ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোয় রুশ হামলা, নিহত ৮

রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন কিয়েভের আকাশ
ছবি: রয়টার্স

মস্কো গতকাল সোমবার ইউক্রেনের বিভিন্ন এলাকায় ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। এতে আটজন নিহত হয়েছে। জ্বালানি অবকাঠামোয় হামলা চালানোয় দেশটির রাজধানী কিয়েভের অনেক এলাকা বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। খবর এএফপির।

এএফপির প্রতিবেদন বলছে, রাশিয়ার জঙ্গি বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ১৩ জন নিহত হওয়ার পরে এই হামলা চালিয়েছে দেশটি। রাশিয়ার  জঙ্গি বিমান গতকাল সোমবার উড্ডয়নের কিছু পরেই আবাসিক ভবনে বিধ্বস্ত হয়। রাশিয়া বলছে সেটি প্রশিক্ষণ বিমান ছিল।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ আট মাসে গড়িয়েছে। এএফপির প্রতিবেদন বলছে, যুদ্ধে ইউক্রেনের প্রতিরোধের পাল্টা  হিসেবে মস্কো শীতের আগে জ্বালানি অবকাঠামোগুলোতে ক্ষতিসাধনের চেষ্টা করছে। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ভাবছেন এতে ইউক্রেনের প্রতিরোধ দুর্বল হতে পারে।

আরও পড়ুন

ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ডেনিস শ্যামিগল বলেছেন, রাশিয়া কিয়েভে পাঁচটি হামলা চালিয়েছে। এ ছাড়া সুমি ও দিনিপ্রোপেত্রভস্ক অঞ্চলে জ্বালানি অবকাঠামোতে হামলা চালিয়েছে। এখান থেকে ইউক্রেনের কয়েক শ শহর ও গ্রামে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়।

ইউক্রেন বলেছে,  কিয়েভে হামলায় চারজন নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে একজন দম্পতি ছিলেন। কিছুদিন পরেই তাদের সন্তান হওয়ার কথা ছিল। সুমি শহরের উত্তর পূর্বাঞ্চলে হামলায় আরও চারজন নিহত হয়েছেন।

রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্র কুলেবা অভিযোগ করেছেন, রাশিয়াকে ড্রোন দিচ্ছে ইরান। তিনি ইরানে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

এএফপির একজন সাংবাদিক কিয়েভের আকাশে কিছুটা নিচ দিয়ে ড্রোন উড়তে দেখেছেন। ইউক্রেনের পুলিশ ওই ড্রোন গুলি করে ভূপতিত করার চেষ্টা করেছে। কিয়েভ শহর সে সময় ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়। কিয়েভের বাসিন্দা তামারা বেরোশভিলি বলেছেন, ‘আমি উজ্জ্বল  কমলা রঙের ধোঁয়া দেখেছি। পুরো বাড়ি কেঁপে উঠেছিল।’

আরও পড়ুন

ইউক্রেনের সেনাবাহিনী সোমবার বলেছে তারা ইরানের আটটি ড্রোন ও রাশিয়ার দুটি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ভূপতিত করেছে। ইরান অস্ত্র রপ্তানির অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তবে কিয়েভে হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, তেহরানের ড্রোন কর্মসূচি নিয়ে যেসব প্রতিষ্ঠান কাজ করতে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গত ১০ অক্টোবর কিয়েভ ও অন্যান্য শহরে রাশিয়া বড় ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চায়। এতে কমপক্ষে ১৯ জন নিহত হয়। আহত হয় ১০৫ জন। এই হামলা নিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিতর্ক শুরু হয়।

কিয়েভের এক ট্যাক্সি চালক সের্গেই প্রিকোদোকো বলেন মনে হচ্ছে প্রতি সোমবার তারা এ রকম হামলা চালাবে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, কামিকেজ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র পুরো ইউক্রেনজুড়ে হামলা চালাচ্ছে। শত্রুরা আমাদের শহরে হামলা চালাতে পারে। তবে তারা আমাদের পরাজিত করতে পারবে না।