রাশিয়ার নাগরিকত্ব পেলেন মার্কিন গোয়েন্দাদের নজরদারির তথ্য ফাঁসকারী স্নোডেন
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা-এনএসএ’র সাবেক পরামর্শক এডওয়ার্ড স্নোডেনকে রাশিয়ার নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তাঁর নাগরিকত্ব অনুমোদন করেছেন। খবর রয়টার্সের।
এনএসএ’র কম্পিউটার গোয়েন্দাবৃত্তিসংক্রান্ত পরামর্শক হিসেবে চুক্তিভিত্তিক কাজ করতেন এডওয়ার্ড স্নোডেন। এনএসএ’র নজরদারিসংক্রান্ত একের পর এক গোপন নথি ফাঁস করে আলোচনায় আসেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেপ্তার এড়াতে ২০১৩ সালে রাশিয়ায় আশ্রয় নেন স্নোডেন। ৯ বছর ধরে সেখানেই আছেন তিনি। গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি করতে কয়েক বছর ধরে রাশিয়ার কাছ থেকে স্নোডেনকে ফেরত চাইছে যুক্তরাষ্ট্র।
সোমবার ৭২ জন বিদেশিকে রুশ নাগরিকত্ব দেওয়ার একটি আদেশে স্বাক্ষর করেন পুতিন। এ তালিকায় ৩৯ বছর বয়সী স্নোডেনও আছেন। তবে এ ব্যাপারে স্নোডেন তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি।
ইউক্রেনে সেনা পাঠাতে সম্প্রতি ‘আংশিক সেনানিযুক্তি’ (পারশিয়াল মোবিলাইজেশন) ঘোষণা করেছেন পুতিন। এর আওতায় আপৎকালীন মজুত সেনাদের (রিজার্ভ সেনা) যুদ্ধে বাধ্যতামূলক যোগদানের চিঠি পাঠানো হচ্ছে। এ ঘোষণার পাঁচ দিনের মাথায় স্নোডেনকে নাগরিকত্ব দেওয়ায় রুশ নাগরিকদের কেউ কেউ এ নিয়ে হাসি–ঠাট্টা করছেন। স্নোডেনকেও যুদ্ধে যোগদানের চিঠি পাঠানো হবে কি না, সে প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা।
রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আরটির প্রধান সম্পাদক এবং পুতিনের সমর্থক মারগারিতা সিমোনিয়ান এক টেলিগ্রাম পোস্টে মজা করে লিখেছেন, ‘স্নোডেনকেও কি যুদ্ধে যোগদানের চিঠি দেওয়া হবে?’
স্নোডেনের আইনজীবী আনাতোলি কুচেরেনা বার্তা সংস্থা আরআইএ-কে বলেন, তাঁর মক্কেলকে যুদ্ধে না ডাকা হতে পারে। কারণ, রুশ সেনাবাহিনীতে তাঁর কাজ করার অভিজ্ঞতা নেই।
পুতিনের ঘোষণা অনুযায়ী, যুদ্ধে যোগদানের জন্য শুধু তাঁদেরই ডাকা হবে, যাঁদের সেনাবাহিনীতে কাজের অভিজ্ঞতা কিংবা সামরিক প্রশিক্ষণ আছে।
আইনজীবী বলেছেন, স্নোডেনের স্ত্রী লিন্ডসে মিলও রাশিয়ার নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করবেন। ২০২০ সালে এ দম্পতির এক ছেলেসন্তান হয়েছে।
এর আগে ২০২০ সালে স্নোডেনকে রাশিয়ার স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এর মধ্য দিয়ে তাঁর জন্য রুশ নাগরিকত্ব অর্জনের দুয়ার খুলে যায়।
ওই বছরই যুক্তরাষ্ট্রের আপিল আদালতের এক পর্যবেক্ষণে বলা হয়, স্নোডেন এনএসএ’র যে নজরদারিমূলক কর্মকাণ্ডের তথ্য ফাঁস করেছিলেন সে কর্মকাণ্ডগুলো অবৈধ ছিল। একই সঙ্গে যে মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা প্রকাশ্যে এ ধরনের নজরদারিমূলক কর্মকাণ্ডের পক্ষে যুক্তি দেখাচ্ছিলেন, তাঁরা সত্য বলেননি বলেও ওই পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করা হয়।