প্রিগোশিনের লাশ প্রাথমিকভাবে শনাক্ত, বলছে রুশ টিভি
ভাড়াটে যোদ্ধা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ভাগনারের প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোশিনের মৃত্যু নিয়ে চলমান ধোঁয়াশার মধ্যে ক্রেমলিনপন্থী রুশ সংবাদমাধ্যম সারগ্রাদ টিভি নতুন একটি তথ্য প্রকাশ করেছে। সংবাদমাধ্যমটি তাদের নিজস্ব সূত্রের বরাতে বলছে, প্রিগোশিনের মৃতদেহ প্রাথমিকভাবে শনাক্ত হয়েছে, তবে ডিএনএ বিশ্লেষণের কাজ এখনো বাকি।
রাশিয়ায় উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে প্রিগোশিন নিহত হয়েছেন, আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো শুরুতে এমন খবর দেয়। তবে পরে বলা হয়, বিধ্বস্ত হওয়া উড়োজাহাজের যাত্রীদের তালিকায় প্রিগোশিনের নাম রয়েছে। প্রিগোশিনের ভাগ্যে কী ঘটেছে, সেটা ক্রেমলিন বা রুশ প্রতিরক্ষা দপ্তর থেকে নিশ্চিত করে কিছু বলা হয়নি।
প্রিগোশিনের ভাগনার বাহিনীর টেলিগ্রাম চ্যানেল গ্রে জোন বলেছে, উড়োজাহাজটি ভূপাতিত করা হয়েছে, তবে নিজেদের দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেনি তারা। এমন অবস্থায় প্রিগোশিনের মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। বলা হচ্ছে, ভাগনারের শীর্ষ কমান্ডার দিমিত্রি উতকিনও ওই উড়োজাহাজে ছিলেন।
রাশিয়ার উড়োজাহাজ চলাচল কর্তৃপক্ষ রোসাভিয়াৎসিয়া বলেছে, উড়োজাহাজটি মস্কো থেকে সেন্ট পিটার্সবার্গের দিকে যাচ্ছিল। উড়োজাহাজের ১০ আরোহীর মধ্যে প্রিগোশিন ছিলেন।
রোসাভিয়াৎসিয়া কর্তৃপক্ষ আরও বলেছে, উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হওয়ার কারণ জানতে তদন্ত চলছে। উড়োজাহাজটি কীভাবে বিধ্বস্ত হলো, তা নিয়ে প্রাথমিক কোনো ধারণার কথা উল্লেখ করেনি তারা।
রাশিয়ার জরুরি পরিস্থিতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় বলেছে, গতকাল বুধবার তিভের অঞ্চলে কুঝেঙ্কিনো গ্রামের কাছে উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয়।
ভাগনারের সঙ্গে সম্পৃক্ত একটি টেলিগ্রাম চ্যানেলে প্রিগোশিনের মৃত্যুর জন্য ‘বিশ্বাসঘাতক’দের দায়ী করা হয়েছে।
গ্রে জোন চ্যানেলে দেওয়া এক পোস্টে বলা হয়, রাশিয়ার প্রতি বিশ্বাসঘাতকদের কর্মকাণ্ডের কারণে ভাগনারের প্রধান, রাশিয়ার বীর, নিজের মাতৃভূমির সত্যিকারের দেশপ্রেমিক-ইয়েভগেনি প্রিগোশিন মারা গেছেন।
ইন্টারন্যাশনাল এভিয়েশন এইচকিউ–এর ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, যে উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয়েছে, সেটি ব্রাজিলের এমব্রায়ের কোম্পানির তৈরি। কোম্পানিটি রয়টার্সকে বলেছে, রাশিয়ায় তাদের তৈরি লিগ্যাসি ৬০০ মডেলের উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হওয়ার খবর তারা জানতে পেরেছে, তবে এর চেয়ে বেশি তথ্য তাদের কাছে নেই।
ইন্টারন্যাশনাল এভিয়েশন এইচকিউয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০০২ সাল থেকে লিগ্যাসি ৬০০ মডেলের উড়োজাহাজের যাত্রা শুরু হয়েছিল। ২০২০ সাল পর্যন্ত এ মডেলের প্রায় ৩০০টি উড়োজাহাজ তৈরি হয়েছে। ২০২০ সালে এ উড়োজাহাজের উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়।
গতকালের ঘটনার আগপর্যন্ত লিগ্যাসি মডেলের উড়োজাহাজের শুধু একটি দুর্ঘটনা ঘটেছিল। ২০০৬ সালে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ব্রাজিলের এমব্রায়ের কোম্পানির কারখানা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার পথে মাঝ আকাশে একটি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ উড়োজাহাজের সঙ্গে এটির ধাক্কা লেগেছিল। এতে উড়োজাহাজটি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও পাইলট এটিকে নিরাপদে অবতরণ করিয়েছিলেন। এ ঘটনায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। পরে তদন্তে উড়োজাহাজটির কোনো যান্ত্রিক ত্রুটি পাওয়া যায়নি।