যুক্তরাজ্যের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে এখন টিকে আছেন লিজ ট্রাস ও ঋষি সুনাক। তাঁরা দুজনই ক্ষমতায় গেলে যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত অবৈধ অভিবাসীদের বিষয়ে কঠোর অবস্থান নেওয়ার কথা জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তাঁরা দুজন অভিবাসীদের নিয়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন সরকারের ‘রুয়ান্ডা নীতি’ বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করেছেন। এই নীতির আওতায় অবৈধ অভিবাসীদের যুক্তরাজ্য থেকে আফ্রিকার দেশ রুয়ান্ডায় স্থানান্তরের চেষ্টা করছে লন্ডন।
স্থানীয় সময় আজ রোববার সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে নিজেদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা জানান ট্রাস–সুনাক। এক বিবৃতিতে ট্রাস বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী হলে আমি অভিবাসনবিষয়ক রুয়ান্ডা নীতি পুরোপুরি বাস্তবায়নের চেষ্টা করব। একই সঙ্গে এই নীতি বাস্তবায়নে রুয়ান্ডার মতো বন্ধুত্বপূর্ণ অংশীদারের সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা করা হবে। আমি আমাদের সীমান্তের সুরক্ষা নিশ্চিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাব।’
যুক্তরাজ্য সরকারের অবৈধ অভিবাসীদের জোরপূর্বক রুয়ান্ডায় পাঠানোর নীতির ঘোর বিরোধী ইউরোপিয়ান কোর্ট অব হিউম্যান রাইটস (ইসিএইচআর)। গত মাসে যুক্তরাজ্য থেকে অভিবাসীদের বহনকারী রুয়ান্ডামুখী প্রথম ফ্লাইট আইনি ঝামেলায় আটকে দেয় ইসিএইচআর। ১৪ জুনের ওই ফ্লাইটে ৪৭ জনের রুয়ান্ডায় যাওয়ার কথা ছিল। প্রতিষ্ঠানটির উদ্দেশে লিজ ট্রাস বলেন, ‘অভিবাসন নীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য ইসিএইচআরের সব প্রচেষ্টা প্রতিহত করা হবে।’
অন্যদিকে দ্য সান পত্রিকায় লেখা এক নিবন্ধে ঋষি সুনাক বলেন, সরকার গঠন করতে পারলে প্রথম ১০০ দিনের কাজের অগ্রাধিকার তালিকায় অভিবাসন নীতি বাস্তবায়নের বিষয়টি থাকবে। যে পাঁচটি সমস্যা জরুরি ভিত্তিতে সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে, তার একটি হবে অভিবাসন, বিশেষত রুয়ান্ডা নীতি। তিনি সতর্ক করে বলেন, যদি কোনো দেশ অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত নিতে সহযোগিতা না করে, তবে সেই দেশের সঙ্গে বৈদেশিক সহায়তা, বাণিজ্য ও ভিসাসংক্রান্ত দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে এর প্রভাব পড়তে পারে।
নানা কেলেঙ্কারির জেরে চলতি মাসের শুরুতে পদত্যাগের ঘোষণা দেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। বরিসের স্থলাভিষিক্ত হতে পার্লামেন্টের প্রাথমিক বাছাইয়ে ১০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। সেখান থেকে চূড়ান্তভাবে টিকে যান ট্রাস ও সুনাক। দলের সদস্যদের ভোটে তাঁদের দুজনের মধ্যে একজনকে নির্বাচিত করা হবে। আগামী সেপ্টেম্বরে জানা যাবে এই দুজনের মধ্য থেকে কে হচ্ছেন বরিসের উত্তরসূরি।
লিজ ট্রাস বর্তমানে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। অন্যদিকে ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি সুনাক ছিলেন বরিস জনসন সরকারের অর্থমন্ত্রী। বরিসের আচরণের সমালোচনা করে সম্প্রতি মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন তিনি। এরপরই প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে শামিল হন। সর্বশেষ বাছাইগুলোয় এগিয়ে রয়েছেন সুনাক। তবে কনজারভেটিভ পার্টির রাজনীতিক ও আইনপ্রণেতাদের ওপর জরিপ চালিয়ে ইউগভ বলছে, ট্রাস সুনাকের থেকে ব্যবধানের ফারাক ক্রমেই কমিয়ে আনছেন। শেষ মুহূর্তের বাছাইয়ে ট্রাস বড় চমক দেখাতে পারেন।