ইসরায়েলের সঙ্গে সব বাণিজ্য স্থগিত করল তুরস্ক

গাজায় ইসরায়েলের হামলার কয়েক সপ্তাহ আগে গত বছরের সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্ক সিটিতে বৈঠক করেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুছবি: এএফপি

গাজায় হামলার কারণে ইসরায়েলের সঙ্গে সব বাণিজ্য স্থগিত করেছে তুরস্ক। গাজায় মানবিক বিপর্যয় হচ্ছে বলেছে দেশটি।

তুরস্কের বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন, গাজায় বাধাহীনভাবে ও যথেষ্ট ত্রাণ ঢোকার অনুমতি না দেওয়া পর্যন্ত ইসরায়েলের সঙ্গে সব বাণিজ্য স্থগিত থাকবে।

গত বছর তুরস্ক ও ইসরায়েলের মধ্যে ৭০০ কোটি ডলারের বাণিজ্য হয়েছে। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট স্বৈরশাসকের মতো আচরণ করছেন বলে অভিযোগ করেছেন ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সামাজিক মাধ্যম এক্সে ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বলেছেন, ‘তুরস্কের জনগণ, ব্যবসায়ীদের চাহিদার অমর্যাদা করছেন এরদোয়ান। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য চুক্তিকেও তিনি উপেক্ষা করছেন।’

ইসরায়েল কাটজ আরও বলেন, তিনি তুরস্কের সঙ্গে বাণিজ্যের বিকল্প খুঁজে বের করতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন। স্থানীয় উৎপাদন ও অন্য দেশ থেকে আমদানির ওপর জোর দিয়েছেন।

এক বিবৃতিতে তুরস্ক বলেছে, সব ধরনের পণ্যে বাণিজ্য স্থগিত করেছে তারা। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, গাজায় বাধাহীন ও যথেষ্ট মানবিক ত্রাণ ঢুকতে দেওয়ার অনুমতি না দেওয়া পর্যন্ত তুরস্ক কঠোরভাবে এই নতুন নিয়ম মেনে চলবে।  

১৯৪৯ সালে তুরস্কই প্রথম মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হিসেবে ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয়। তবে সাম্প্রতিক কয়েক দশকে তুরস্ক ও ইসরায়েলের সম্পর্কের অবনতি হয়েছে।
২০১০ সালে ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে তুরস্ক। তুরস্কের একটি জাহাজে চড়ে গাজায় সমুদ্রপথে ইসরায়েলের অবরোধ ভাঙার চেষ্টার সময় ইসরায়েলি কমান্ডোদের সঙ্গে সংঘর্ষে ১০ জন ফিলিস্তিন সমর্থক তুরস্কের কর্মী নিহত হন। এরপরেই সম্পর্ক ছিন্ন করে দেশটি।

২০১৬ সালে দুই দেশের সম্পর্কের উন্নয়ন হয়। তবে গাজা-ইসরায়েল সীমান্তে বিক্ষোভের সময় ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের হামলা ও নিহতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই বছর পর দুই দেশই শীর্ষ কূটনীতিককে বহিষ্কার করে।

গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের হামলায় এ পর্যন্ত ৩৪ হাজার ৫০০ জন নিহত হয়েছেন। এই হিসাব হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের।

গত বুধবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন যুদ্ধবিরতি চুক্তি ও জিম্মিদের মুক্তির জন্য দুই পক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। হামাসের এই চুক্তিতে সম্মত হওয়া প্রয়োজন বলেন তিনি। মধ্যস্থতাকারীরা এই প্রস্তাবে হামাসের প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন। চুক্তিতে ৪০ দিনের জন্য যুদ্ধবিরতির কথা বলা হয়েছে। বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনি বন্দীর বিনিময়ে ৩০ জনের বেশি ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তির কথা বলা হয়েছে।