১৪ বছর ধরে এক ব্যক্তির টানে ফিরে আসে পাখি
প্রেম, বন্ধুত্ব কিংবা রক্তের টানে মানুষ দূরদূরান্তে পাড়ি জমায়। বারবার ফিরে আসে আপন মানুষের কাছে। মানুষে মানুষে এমন পুনর্মিলন নতুন কিছু নয়; কিন্তু মানুষের টানে পশুপাখি বছরের পর বছর ধরে ফিরে আসে, এমন ঘটনা খুব কমই শোনা যায়।
তুরস্কের উত্তর-পশ্চিমে বুরসা প্রদেশের কারাকাব এলাকা এমনই এক বিস্ময়কর ঘটনার সাক্ষী। সেখানকার স্থানীয় এক মৎস্যজীবীর কাছে ‘ইয়ারেন’ নামের তাঁর প্রিয় সারস পাখিটি এ বছরও ফিরে এসেছে। এ নিয়ে টানা প্রায় ১৪ বছর এই দুই বন্ধুর পুনর্মিলন ঘটল।
টানা ১৩ বছর ধরে প্রতি বসন্তে এস্কিকারাগাচ গ্রামে ফিরে আসে ইয়ারেন। সেখানে অস্থায়ীভাবে বাসা বানায়। এ সময় পাখিটিকে প্রায় প্রতিবছরই ৬৯ বছর বয়সী মৎস্যজীবী আদেম ইলমাজের নৌকায় দেখা যায়।
এ বছর ইয়ারেন ও তার সঙ্গী নাজলির দুই দিন পর ১৫ মার্চ ওই গ্রামে এসে পৌঁছায়। ইলমাজের মাছ ধরার নৌকায় পাখিটি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি সময় কাটায়, যা তাদের পুনর্মিলনকে আরও বেশি আবেগঘন করে তোলে এবং স্থানীয় সম্প্রদায়ের সঙ্গে পাখিটির বন্ধনকে শক্তিশালী করে তোলে।
ইয়ারেনের ফিরে আসায় ইলমাজ স্বস্তি ও আনন্দের মিশ্র অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, ‘ইয়ারেনের আগমনের আশায় ছিলাম আমি। আগের বছরের তুলনায় এবার একটু দেরি করে আসায় আমি অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু অবশেষে তাকে দেখার পর আমি আনন্দে অভিভূত হয়ে পড়েছি। ইয়ারেন আমার কাছে শিশুর মতো। প্রতিদিন সকালে আমি তাকে মাছ খাওয়াই।’
তুরস্কের কৃষি ও বনমন্ত্রী ইব্রাহিম ইয়ুমাকলিও ইয়ারেনের প্রত্যাবর্তন উদ্যাপন করেছেন। তিনি এই জুটির একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করে বলেছেন, ‘বসন্ত এসে গেছে এবং অপেক্ষার অবসান ঘটেছে। এই হৃদয়গ্রাহী পুনর্মিলনের ১৪তম বছর পূর্ণ হলো।’
এই মৎস্যজীবী ও সারস পাখির বন্ধুত্বের অসাধারণ গল্পটি বিশ্বজুড়ে মানুষকে আকৃষ্ট করেছে।