রাশিয়া সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দিচ্ছে ফিনল্যান্ড
সীমান্তে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করতে উদ্যোগ নিয়েছে ফিনল্যান্ড। ফিনল্যান্ডের সরকার রাশিয়ার সঙ্গে ২০০ কিলোমিটার সীমান্তে বেড়া নির্মাণ শুরু করেছে। দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী জানিয়েছে, রাশিয়ার সঙ্গে থাকা তাদের সীমান্তে নির্মাণাধীন এই বেড়া হবে ১০ ফুট উঁচু এবং বেড়ার ওপরে দেওয়া হবে কাঁটাতার।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭ দেশের মধ্যে রাশিয়ার সঙ্গে সবচেয়ে দীর্ঘ সীমান্ত ফিনল্যান্ডের। ১ হাজার ৩৪০ কিলোমিটার এ সীমান্তে বর্তমানে কাঠের বেড়া আছে।
ফিনল্যান্ড বলছে, মস্কো যুদ্ধ করতে যেসব রুশ নাগরিককে জোরপূর্বক ইউক্রেনে পাঠাতে চাইছে, তাঁদের অনেকে দেশ ছেড়ে পালাচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে রাশিয়ার এসব নাগরিক সীমান্ত পার হয়ে ফিনল্যান্ডে ঢুকছেন। সাম্প্রতিক সময়ে এই সংখ্যা বেড়েছে। এ পরিস্থিতিতে তারা সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এদিকে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোতে ফিনল্যান্ডের সদস্য হওয়ার প্রক্রিয়া গতি পেয়েছে। এখন ন্যাটোর সদস্য হওয়ার আরও কাছাকাছি ফিনল্যান্ড। গতকাল মঙ্গলবার দেশটির পার্লামেন্ট ন্যাটোর সদস্য হওয়ার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে বিতর্ক শুরু করেছে। আজ বুধবার এ বিষয়ে পার্লামেন্টে ভোট হবে বলেও জানা গেছে।
ফিনল্যান্ডের বন বিভাগের ছাড়পত্র পাওয়ার পর গতকাল ইমাত্রা সীমান্ত পারাপার এলাকায় বেড়া তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। এ ছাড়া চলতি মাসেই সড়ক ও বেড়া নির্মাণকাজ শুরুর পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে দেশটির সরকার। বেড়ার কিছু অংশে আলো, নাইট ভিশন ক্যামেরা ও লাউডস্পিকার বসানো হবে।
দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী জানিয়েছে, ইমাত্রা সীমান্তে তিন কিলোমিটার বেড়া নির্মাণের যে কাজ শুরু হয়েছে, তা জুন মাসের মধ্যে শেষ করার আশা করছে তারা।
কাঠের পরিবর্তে সীমান্তে আরও শক্তিশালী বেড়া নির্মাণের অনুমতি দিতে গত বছরের জুলাইয়ে সীমান্তরক্ষী বাহিনী আইন সংশোধন করে ফিনল্যান্ডের পার্লামেন্ট। বর্তমানে রাশিয়ার সঙ্গে সীমান্ত এলাকায় ফিনল্যান্ডের যে কাঠের বেড়া আছে, তা মূলত সীমান্ত দিয়ে গবাদিপশু চোরাচালান ঠেকানোর জন্য নির্মাণ করা হয়েছিল।
রুশ বাহিনী ইউক্রেনে হামলা শুরু করার পর থেকে দেশের পূর্বাঞ্চলে রাশিয়ার সঙ্গে থাকা সীমান্তে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদারের চেষ্টা করছে ফিনল্যান্ড। বিশেষ করে গত বছরের সেপ্টেম্বরে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে যুদ্ধ করার রিজার্ভ সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেওয়ার পর সীমান্ত নিয়ে উদ্বেগ বাড়ে ফিনল্যান্ডের।
কারণ, পুতিনের ওই ঘোষণার পর ইউক্রেনে যুদ্ধ করার জন্য নিয়োগ পাওয়া থেকে বাঁচতে অনেক রুশ নাগরিক সীমান্ত পার হয়ে ফিনল্যান্ডে ঢুকতে শুরু করেন।