ইউক্রেন যুদ্ধে ভাড়াটে যোদ্ধা সরবরাহকারী ভাগনার প্রাইভেট মিলিটারি কোম্পানির (পিএমসি) ২১ হাজার যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। আহত হন আরও ৮০ হাজার। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এ দাবি করেছেন।
গত শনিবার কিয়েভে সাংবাদিকদের জেলেনস্কি বলেন, পিএমসির ‘ক্ষয়ক্ষতি ব্যাপক’, বিশেষ করে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে। সেখানে এই বেসরকারি বাহিনীটির ‘সবচেয়ে শক্তিশালী গ্রুপটি’ লড়াই করেছিল।
জেলেনস্কি বলেন, ‘আমাদের সেনারা শুধু ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলেই ২১ হাজার ভাগনার সদস্যকে হত্যা করেছে।’ আরও ৮০ হাজার ভাগনার যোদ্ধা আহত হয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ভাগনার পিএমসির জন্য এই ক্ষয়ক্ষতি ব্যাপক।’
স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজের কিয়েভ সফরকালে ঘটনাক্রমে স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি এ দাবি করেন। তাঁর এ দাবির সত্যতা যাচাই করা যায়নি বলে জানিয়েছে সিএনএন।
এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো ইউক্রেন সফরে গেলেন স্পেনের প্রধানমন্ত্রী। পালাক্রমে স্পেন কাউন্সিল অব দ্য ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সভাপতির দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি সফরে গেলেন। সম্প্রতি কিয়েভ সফরে গেছেন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর পরিচালক উইলিয়াম বার্নসও।
সিআইএর জন্য সুযোগ
এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউক্রেন যুদ্ধ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ওপর ‘ধ্বংসাত্মক’ প্রভাব ফেলবে বলে মনে করেন সিআইএর প্রধান বার্নস। তাঁর দাবি, এই যুদ্ধ গোয়েন্দা সংস্থাটির জন্য ‘সুযোগ’ হিসেবে হাজির হয়েছে।
শনিবার যুক্তরাজ্যের ডিচলে ফাউন্ডেশনে বক্তব্য দেওয়ার সময় সিআইএর পরিচালক বলেন, ‘যুদ্ধ নিয়ে এই নাজেহাল অবস্থা রুশ নেতৃত্বকে ক্রমে দুর্বল করবে...আর এটাই সিআইএর জন্য সুযোগ তৈরি করেছে, যা এক প্রজন্মে একবার আসে।’
বার্নস বলেন, ‘একে (এই সুযোগ) আমরা নষ্ট হতে দেব না।’ তিনি বলেন, সম্প্রতি তাঁরা টেলিগ্রামে দেওয়া একটি পোস্টে দেখিয়েছেন, কীভাবে রুশ নাগরিকেরা ডার্ক ওয়েব হয়ে সিআইএর কাছে পৌঁছাতে পারে।
সিআইএর প্রধান দাবি করেন, ইউক্রেন যুদ্ধ মস্কোর জন্য ‘কৌশলগত পরাজয়’। কেননা এর মাধ্যমে তাদের সামরিক দুর্বলতা ফুটে উঠেছে, অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর অন্যদিকে পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটো আরও বিস্তৃত ও শক্তিশালী হয়েছে।
কিয়েভে হামলা
গতকাল রোববার ইউক্রেনের বিমানবাহিনী দাবি করেছে, আগের দিন রাতে রুশ বাহিনীর ছোড়া তিনটি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ও আটটি সশস্ত্র ড্রোন ভূপাতিত করেছে তারা। গত ১২ দিনের মধ্যে এ ধরনের হামলা ছিল প্রথম।
ইউক্রেনের বিমানবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়, আকাশপথে চালানো এ হামলায় ব্যবহৃত আটটি ইরানি ড্রোন ও তিনটি ক্যালিবার ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের সব কটিই ভূপাতিত করা হয়েছে।