সঙ্গীকে খুঁজে পেতে বাঘ পাড়ি দিল ২০০ কিলোমিটার
প্রাণীদের একে অপরের জন্য ভালোবাসার অনেক নজির দেখা যায়। একসঙ্গে থাকে, একসঙ্গে ঘোরাফেরা করে। কিন্তু কাছের সঙ্গী হারিয়ে গেলে তাকে খুঁজে পেতে ২০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেওয়ার নজির মনে হয় বিরল। রাশিয়ার সাইবেরিয়া অঞ্চলের বাঘ বোরিস আর সভেতলায়া বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর আবার একত্র হয়ে এভাবেই নিজেদের ভালোবাসার প্রকাশ ঘটিয়েছে।
২০১২ সালে সিখোত-অ্যালিন পর্বত এলাকা থেকে মা–বাবা ছাড়াই বোরিস ও সভেতলায়াকে উদ্ধার করা হয়। মানুষের ন্যূনতম সংস্পর্শ ছিল, রাশিয়ার বন্য প্রাণীদের জন্য সংরক্ষিত এমন এলাকায় দুজন বেড়ে উঠেছে। সেখানে লালনপালনের উদ্দেশ্য ছিল, ১৮ মাস হলেই তাদের উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০১৪ সালে প্রি-আমুর অঞ্চলে দুজনকে মুক্ত করে দেওয়া হয়। সাইবেরীয় অঞ্চলের বাঘ সাধারণত এই অঞ্চলে বসবাস করে।
রাশিয়ার বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্পের অংশ হিসেবে বাঘ দুটিকে অনুসরণ করার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধির লক্ষ্যে দুজনকে তখন কয়েক শ কিলোমিটার দূরে দূরে মুক্ত করে দেওয়া হয়।
বাঘ সাধারণত একটি নির্দিষ্ট ভূখণ্ডের মধ্যে ঘোরাফেরা করে। কিন্তু বোরিস সোজা পথ ধরে এগিয়ে চলছিল। অবাক করা বিষয় হচ্ছে, বোরিস ৩ বছর ধরে অবিশ্বাস্যভাবে ২০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছে। পরে বোঝা গেল, সভেতলায়াকে খুঁজে পেতে সে এতটা পথ পাড়ি দিয়েছে। তিন বছর পর দুজন মিলিত হয়। এর ছয় মাস পর সভেতলায়া বাঘশাবকের জন্ম দেয়।
প্রাণী সংরক্ষণবিদেরা আশা করছেন, বোরিস ও সভেতলায়ার এই ভালোবাসার গল্প বাঘের সংখ্যাবৃদ্ধিতে ভালো ভূমিকা রাখতে পারে।
ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন সোসাইটির (ডব্লিউসিএস) প্রধান লেখক ডেল মিক্যুয়েল বলেন, মা–বাবার ফেলে যাওয়া বাঘের ছানাকে আবদ্ধ করে লালনপালন করে সময়মতো ছেড়ে দিলে তারা বন্য বাঘের মতো হয়ে যায়। তারাও খাবারের জন্য শিকারি হয়ে উঠতে পারে।
ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচারের (আইইউসিএন) লাল তালিকায় রয়েছে এই প্রজাতির বাঘ।