আমি কি তোমার আসল বাবা, হ্যারিকে বলেছিলেন চার্লস!
ডিউক অব সাসেক্স প্রিন্স হ্যারির আত্মজীবনী ‘স্পেয়ার’ এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ হয়নি। তবে বিভিন্নভাবে আগেই হাতে আসা বইটির উদ্ধৃতি দিয়ে ইতিমধ্যেই ব্রিটিশ রাজপরিবারের অন্দরের অনেক চমকপ্রদ ঘটনা প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যমগুলো।
আত্মজীবনীতে প্রিন্স হ্যারি দাবি করেছেন, বাবা রাজা তৃতীয় চার্লস তাঁর পিতৃত্ব নিয়ে ‘তেতো স্বাদের’ কৌতুক করেছিলেন। মানসিকভাবে অসুস্থ এক ব্যক্তির সঙ্গে সাক্ষাতের পর তিনি এমন কৌতুক করেছিলেন। ওই ব্যক্তি নিজেকে প্রিন্স অব ওয়েলস দাবি করতেন।
প্রিন্স হ্যারির বহুল প্রত্যাশিত আত্মজীবনী ‘স্পেয়ার’ ১০ জানুয়ারি প্রকাশিত হবে। দ্য ইনডিপেনডেন্ট জানায়, ইতিমধ্যে বইটির একটি কপি হাতে পেয়েছে ডেইলি মেইল। নতুন এই বইতে ডিউক অব সাসেক্স ওই ঘটনা ও তাঁর বাবা চার্লসের গল্প বলার আগ্রহের কথা তুলে ধরেন বলে ডেইলি মেইল জানায়।
আত্মজীবনীতে হ্যারি দাবি করেছেন, তাঁর বাবা চার্লস বিশেষ করে মানসিক রোগীদের একটি আশ্রয়কেন্দ্র পরিদর্শনের গল্প বলতে পছন্দ করতেন। তিনি সেখানে একজন মানসিক রোগীর সঙ্গে দেখা করেন, যিনি নিজেকে প্রিন্স অব ওয়েলস দাবি করতেন। ওই সময় প্রিন্স অব ওয়েলস ছিলেন চার্লস নিজেই।
বাবার গল্পের স্মৃতিচারণা করে হ্যারি আত্মজীবনীতে লেখেন, ‘(চার্লস বলেন,) এমনকি আমি যে তোমার আসল বাবা কি না, কে জানে? প্রিয় বৎস্য, সম্ভবত তোমার বাবা আসলে ব্রডমুরেই আছেন!’
বাবার এমন কথাকে ‘তেতো স্বাদের’ কৌতুক হিসেবেই দেখেছেন হ্যারি। কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, যে সময় এই কৌতুকটি করা হয়েছিল, তখন মেজর জেমস হিউইট তাঁর আসল বাবা বলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছিল।
হ্যারি লেখেন, ‘তিনি (হ্যারির বাবা) হাসি থামাতে পারছিলেন না। যদিও এটা আমুদিত হওয়ার মতো কোনো কৌতুক ছিল না। কারণ, ঠিক তখনই গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছিল আমার প্রকৃত বাবা আমার মায়ের সাবেক প্রেমিকাদের একজন মেজর জেমস হিউইট।’
হিউইট ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর অশ্বারোহী দলের সাবেক কর্মকর্তা ছিলেন। প্রিন্স হ্যারির মায়ের (ডায়ানা) সঙ্গে নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি তাঁর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। পার্টিতে পরিচয়ের সূত্র ধরে ডায়ানাকে ঘোড়ায় চড়া শেখানোর প্রশিক্ষক হন হিউইট।
নিজের ‘প্রিন্সেস ইন লাভ’ বইতে হিউইট বলেছিলেন, দুজনের সম্পর্ক ১৯৮৬ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছর টিকে ছিল। এমনকি চার্লসের স্ত্রী থাকা অবস্থায়ই ডায়ানার সঙ্গে এই প্রেমের সম্পর্ক ছিল।
চার্লস ও ডায়ানা ১৯৮১ সালে বিয়ে করেন। ১৯৮২ সালে প্রিন্স উইলিয়াম আর ১৯৮৪ সালে প্রিন্স হ্যারি জন্মগ্রহণ করেন। চার্লস ও ডায়ানা ১৯৮৬ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচ্ছেদের ঘোষণা দেন।
হ্যারি লেখেন, ‘আমার জন্মের দীর্ঘ সময় পরও মেজর হিউইটের সঙ্গে ডায়ানার দেখা হয়নি।’ এমন বাস্তবতা সত্ত্বেও তাঁর পিতৃত্বের বিষয় নিয়ে গুঞ্জন চাউর হয়েছিল বলে আত্মজীবনীতে উল্লেখ করেন ব্রিটিশ রাজপরিবারের এই সদস্য।
হিউইট নিজেও হ্যারির বাবা হওয়ার সম্ভাবনার কথা নাকচ করে দেন। তিনিও উল্লেখ করেন, হ্যারির জন্মের দুই বছর পর ডায়ানার সঙ্গে তাঁর দেখা হয়। সানডে মিররকে ২০০২ সালে দেওয়া সাক্ষাৎকারে হিউইট বলেন, ডায়ানার সঙ্গে যখন তাঁর দেখা হয়, তখন ইতিমধ্যে হ্যারি হাঁটতে শিখে গেছে।