মস্কোয় গিয়ে পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রীর, কী নিয়ে আলাপ
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকো।
গতকাল রোববার রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর ক্রেমলিনে দুই নেতার মধ্যে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোনো নেতার মস্কো সফর বিরল।
রাশিয়ার গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল স্লোভাকিয়া। ইউক্রেনের ভেতর দিয়ে গ্যাস স্লোভাকিয়ায় পৌঁছায়। কিন্তু ইউক্রেনের ভেতর দিয়ে রাশিয়ার গ্যাস পরিবহন-সংক্রান্ত চুক্তির মেয়াদ প্রায় শেষ হয়ে আসছে। এই চুক্তির মেয়াদ বাড়াতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তাঁর এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করছে স্লোভাকিয়া। এমন প্রেক্ষাপটে রাশিয়ায় গিয়ে পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী।
চুক্তিটির মেয়াদ চলতি বছরই শেষ হবে। এই পথ দিয়ে গ্যাসের প্রবাহ বজায় রাখার লক্ষ্যে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে স্লোভাকিয়া।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরু করে রাশিয়া। এই যুদ্ধ শুরুর পর ইউরোপীয় ইউনিয়নের তৃতীয় কোনো সরকারপ্রধান রাশিয়া সফরে গেলেন।
স্লোভাকিয়ার বিরোধী রাজনীতিকেরা দেশটির প্রধানমন্ত্রী ফিকোর রাশিয়া সফরকে লজ্জাজনক বলে অভিহিত করেছেন।
পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের পর ফিকো ফেসবুকে বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের কর্মকর্তাদের গত শুক্রবারই তাঁর মস্কো সফরের বিষয়ে জানানো হয়েছিল।
ফিকো আরও বলেন, গত সপ্তাহে জেলেনস্কির সঙ্গে আলোচনার জেরে তিনি পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।
ফিকোর ভাষ্যমতে, ইউক্রেনের ভেতর দিয়ে রাশিয়ার গ্যাস স্লোভাকিয়ায় পরিবহনের বিরোধিতা করেছেন জেলেনস্কি।
ফিকো বলেন, রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন নিশ্চিত করেছেন যে স্লোভাকিয়া ও পশ্চিমা দেশগুলোতে গ্যাস সরবরাহে তাঁর দেশ প্রস্তুত। তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের বর্তমান অবস্থানের কারণে কার্যত আগামী বছরের ১ জানুয়ারি থেকে তা সম্ভব হবে না।
ফিকো ২০২৩ সালে স্লোভাকিয়ার ক্ষমতায় আসেন। তিনি তাঁর দেশের পররাষ্ট্রনীতিতে পরিবর্তন আনেন। ক্ষমতায় আসার পরপরই তিনি ইউক্রেনে সরকারি সামরিক সহায়তা বন্ধ করে দেন।
ফিকো বলেন, রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে কোনো সামরিক সমাধান নেই। এ ছাড়া তিনি মস্কোর ওপর দেওয়া পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞারও সমালোচনা করেন।
রাশিয়ার টেলিভিশনে দেখা গেছে, বৈঠক শুরুর আগে করমর্দন করছেন পুতিন ও ফিকো।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, কয়েক দিন আগেই এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল।
ফিকো বলেছেন, বৈঠকে তিনি ও পুতিন ইউক্রেনের সামরিক পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময় করেছেন। এই যুদ্ধ কীভাবে শান্তিপূর্ণভাবে শেষ করা যায়, তা নিয়েও তাঁরা কথা বলেছেন। এ ছাড়া রাশিয়া ও স্লোভাকিয়ার মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা হয়েছে।