রাশিয়ার সামরিক প্রশিক্ষণকেন্দ্রে হামলাকারীরা তাজিকিস্তানের নাগরিক: ইউক্রেন
রাশিয়ার বেলগোরোদ অঞ্চলের একটি সামরিক প্রশিক্ষণকেন্দ্রে হামলায় জড়িত দুই ব্যক্তি তাজিকিস্তানের নাগরিক বলে দাবি করেছে ইউক্রেন। আজ রোববার ইউটিউবে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ দাবি করেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির উপদেষ্টা ওলেকসি আরেসটোভিচ। খবর আল–জাজিরা ও গার্ডিয়ানের
গতকাল শনিবার বেলগোরোদের একটি সামরিক প্রশিক্ষণকেন্দ্রে ২ বন্দুকধারীর হামলায় ১১ জন নিহত ও ১৫ জন আহত হন বলে জানায় রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। ওই হামলাকে ‘সন্ত্রাসী’ কর্মকাণ্ড আখ্যা দিয়ে মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযানে অংশ নিতে ইচ্ছুক স্বেচ্ছাসেবীদের প্রশিক্ষণ চলাকালে ওই হামলা চালানো হয়।
মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য বলছে, হামলার সঙ্গে জড়িত দুজন। তাঁরা কমনওয়েলথ অব ইনডিপেনডেন্ট স্টেটসভুক্ত (সিআইএস) একটি দেশের নাগরিক। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো নিয়ে সিআইএস জোট গঠিত। হামলার সময় পাল্টা গুলিতে দুজনই নিহত হয়েছেন।
হামলাকারীরা কোন দেশের নাগরিক, তা রাশিয়ার পক্ষ থেকে স্পষ্ট না করা হলেও জেলেনস্কির উপদেষ্টা ওলেকসি আরেসটোভিচ বলেন, বন্দুকধারী দুজন তাজিকিস্তান থেকে এসেছেন। ধর্ম নিয়ে বিতর্কের একপর্যায়ে গুলি চালান তাঁরা। তাজিকিস্তানও সিআইএস জোটের সদস্য দেশ।
গত ২১ সেপ্টেম্বর রাশিয়ায় প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের আংশিক সেনা নিযুক্তির ঘোষণার পর দুই লাখের বেশি মানুষকে বাধ্যতামূলকভাবে রুশ বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ওই ঘোষণার প্রতিবাদে রাশিয়ার বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভও হয়েছে।
সেনা নিযুক্তির ওই ঘোষণার সঙ্গে গতকালের হামলার যোগসূত্র পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান আমেরিকার এন্টারপ্রাইস ইনস্টিটিউটের গবেষক এলিজাবেথ ব্রাউ। তিনি বলেন, সামরিক প্রশিক্ষণকেন্দ্রে হামলা এটাই দেখিয়েছে, পুতিনের সেনা নিযুক্তির ঘোষণায় রশিয়া ও সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত দেশের মানুষ কতটা ক্ষুব্ধ।
৩০টির বেশি স্থাপনায় রুশ হামলা
এদিকে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা চলমান রয়েছে। আজ ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, গতকাল দেশটির ৩০টির বেশি স্থাপনা রাশিয়ার হামলার শিকার হয়েছে। এসব স্থাপনা রাজধানী কিয়েভসহ দোনেৎস্ক, খারকিভ, জাপোরিঝঝিয়া, নিপ্রোপেত্রোভস্ক ও খেরসন অঞ্চলে অবস্থিত। হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়েছে বেসামরিক এলাকাও। অপর দিকে আজ রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, দোনেৎস্ক, খেরসন ও মিকোলাইভ অঞ্চলে ইউক্রেনের সেনাদের অগ্রগতি থামিয়ে দিয়েছে তারা।
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম টুইটারে অপর একটি পোস্টে ইউক্রেনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার অভিযান শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ৬৫ হাজার রুশ সেনাকে হত্যা করা হয়েছে। একই সময় রাশিয়ার ২ হাজার ৫২৯টি ট্যাংক ও ৫ হাজার ১৯৩টি সামরিক যান ধ্বংস করা হয়েছে।