ইউক্রেন যুদ্ধ স্থগিত (ফ্রিজ) করা দরকার, ন্যাটো ক্রমেই এই ধারণার দিকে ঝুঁকছে। ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীগুলোর যুদ্ধ করার সক্ষমতা পুনর্গঠিত করে রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে সামরিক জোটটি এমন চিন্তাভাবনা করছে। ন্যাটোর এমন পরিকল্পনা নিয়ে আজ শুক্রবার এক বিবৃতিতে হুঁশিয়ারি দিয়েছে রাশিয়ার বৈদেশিক গোয়েন্দা সংস্থা (এসভিআর)।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘এসভিআরের কাছে থাকা তথ্যমতে, রণক্ষেত্রে রাশিয়াকে কৌশলগতভাবে পরাজিত করার সম্ভাবনায় স্পষ্ট ঘাটতি রয়েছে। তাই ন্যাটো ক্রমেই ইউক্রেন সংঘাতকে স্থগিত করার পরিকল্পনার দিকে ঝুঁকছে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নকে পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীগুলোর যুদ্ধ করার সক্ষমতা পুনর্গঠিত এবং কিয়েভকে সম্ভাব্য প্রতিশোধ নিতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত করার সুযোগ হিসেবে দেখছে। ন্যাটো এরই মধ্যে ইউক্রেনে প্রশিক্ষণকেন্দ্র স্থাপন করেছে। এসব প্রশিক্ষণকেন্দ্রে তারা ইউক্রেনের অন্তত ১০ লাখ সেনাকে প্রশিক্ষণ দিতে চায়।’
রাশিয়ার গোয়েন্দা সংস্থাটি আরও জানাচ্ছে, নিজেদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ন্যাটো পশ্চিমা সামরিক-শিল্প সংস্থাগুলোর সঙ্গে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। উদাহরণ হিসেবে জার্মানির অস্ত্র প্রস্তুতকারী কোম্পানি রাইনমেটালের কথা বলা যায়। ন্যাটো এসব সামরিক-শিল্প সংস্থাগুলোকে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানাচ্ছে। এসব কিছুর পাশাপাশি সামরিক জোটটি ইউক্রেনে বিশেষজ্ঞ ও সরঞ্জাম পাঠাচ্ছে। যুদ্ধবিরতির (স্থগিত) সময়ে ইউক্রেনের সামরিক-শিল্প সংস্থা পুনর্গঠনের দিকে মনোযোগ দেওয়ার আশা করছে ন্যাটো।
পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেনে প্রায় এক লাখ শক্তিশালী ‘শান্তিরক্ষী বাহিনীর সদস্য’ মোতায়েন করতে পারে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে এসভিআরের বিবৃতিতে।
এসভিআরের তথ্যমতে, ইউক্রেনের ভূখণ্ডকে কয়েকটি ‘দখলদার’ দেশের মধ্যে ভাগবাঁটোয়ারা করারও প্রস্তাব করেছে ন্যাটো। ইউক্রেনের কৃষ্ণ সাগর তীরবর্তী অঞ্চলে মোতায়েন করা হবে রোমানিয়ার ‘শান্তিরক্ষীদের’। পশ্চিমাঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করবে পোল্যান্ড। মধ্যাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলের অংশগুলো হস্তান্তর করা হবে জার্মানির হাতে; আর রাজধানী কিয়েভসহ উত্তর দিকের অঞ্চলগুলো থাকবে যুক্তরাজ্যের হাতে।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। তখন থেকে পশ্চিমা দেশগুলো কিয়েভকে বিপুল পরিমাণে সামরিক ও আর্থিক সহায়তা দিয়ে আসছে। রাশিয়া বারবার বলে আসছে, পশ্চিমাদের সামরিক অস্ত্র সরবরাহের কারণে ইউক্রেন সংঘাতের অবসান ব্যাহত হচ্ছে। অস্ত্র সরবরাহ করে ন্যাটোভুক্ত দেশগুলো সংঘাতে সরাসরি জড়িয়ে পড়ছে বলেও দাবি করছে মস্কো।