ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে চার শতাধিক বন্দী সেনা বিনিময়

রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধবন্দী বিনিময়ের অংশ হিসেবে ইউক্রেনের ২৩০ সৈন্যকে ফেরত দেওয়া হয়। দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এ নিয়ে ৪৯তম বার বন্দী বিনিময় হলো। ইউক্রেন, ৩ জানুয়ারি, ২০২৪ছবি: এএফপি

ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে গত বুধবার চার শতাধিক বন্দী সৈন্য বিনিময় হয়েছে। এই যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এই প্রথম একসঙ্গে এত বেশিসংখ্যক বন্দী বিনিময় হলো।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে মস্কো ইউক্রেনে আগ্রাসন চালানোর পর থেকে দুই পক্ষের মধ্যে বেশ কয়েকবার বন্দী বিনিময় হয়েছে। তবে গত বছরের মাঝামাঝিতে এটি বন্ধ হয়ে যায়।

প্রায় কাছাকাছি সময়ে রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয়ই এ বিষয়ে বিবৃতি দেয়। সেখানে দুই পক্ষই জানিয়েছে যে সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যস্থতায় আলোচনার পর উভয় পক্ষই দুই শতাধিক করে সৈন্য ফিরে পেয়েছে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি টেলিগ্রামে এক ভিডিও পোস্ট করে বলেছেন, রাশিয়ার বন্দিদশা থেকে দুই শতাধিক সেনা ও বেসামরিক মানুষ দেশে ফিরেছে।

গত পাঁচ মাসে কোনো পক্ষই বন্দী বিনিময়ের কোনো ঘোষণা দেয়নি। কিয়েভ বারবারই বলে এসেছে যে মস্কো রাজনৈতিক কারণে ইচ্ছাকৃতভাবে চুক্তি কার্যকরে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

পরে জেলেনস্কি এক বার্তায় বলেন, বন্দী বিনিময় দীর্ঘ সময় ধরে বন্ধ হয়ে আছে। কিন্তু আলোচনায় কোনো বিরতি নেই।

মস্কোর প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, তাদের ১৪৮ জন সেনা ফিরে এসেছে। তাঁদের শারীরিক ও মানসিক চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে।

সংযুক্ত আরব আমিরাত বলছে, এই চুক্তি রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যকার ‘গভীর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের প্রতিফলন’।

তবে কোনো পক্ষই তাদের হাতে কত বন্দী আছে, তা প্রকাশ করেনি।

আরও পড়ুন

ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা চলছে

রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় মধ্য কিয়েভের একটি বহুতল ভবন ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেই ভবন পরিদর্শন করছেন পুলিশ কর্মকর্তারা ও স্থানীয় লোকজন। ৩ জানুয়ারি, ২০২৪
ছবি: এএফপি

বন্দী বিনিময়ের এই ঘোষণা এমন সময় এল, যখন ইউক্রেন ও রাশিয়া উভয়েই পাল্টাপাল্টি হামলা চালিয়েই যাচ্ছে। ইউক্রেনের স্থানীয় এক কর্মকর্তা জানান, নতুন করে হামলার ঘটনায় অন্তত তিনজন নিহত ও একজন আহত হয়েছেন।

দোনেৎস্কের আঞ্চলিক প্রধান ভাদিম ফিলাশকিন এক টেলিগ্রাম বার্তায় বলেন, আজ (বৃহস্পতিবার) বেলা ১১টার দিকে আভদিভকা শহরে রাশিয়া চারটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। এতে ঘটনাস্থলেই ৫১ বছর বয়সী এক ব্যক্তি নিহত হন। আর ৫০ বছর বয়সী এক নারীকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

শহরটি রাশিয়ার নিয়ন্ত্রিত দোনেৎস্কের কাছাকাছি অবস্থিত এবং কয়েক মাস ধরে এটি তীব্র লড়াইয়ের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে।

আরও পড়ুন

অন্যদিকে নিপ্রো নদীরে পশ্চিম তীরে ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণাধীন খেরসনের আঞ্চলিক প্রধান অলেক্সান্ডার প্রকুদিন বলেন, এখানে বেশ কয়েটি গ্রামে রাশিয়ার গোলাবর্ষণে দুজন নিহত হয়েছেন।

যুদ্ধের প্রায় দুই বছর পূর্ণ হতে যাচ্ছে। এ সময় রাশিয়ার তীব্র হামলা মোকাবিলায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি তাঁর দেশের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখতে পশ্চিমা মিত্রদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।