কেটের ভিডিও বার্তায় গুঞ্জন কী থামবে, কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা
যুক্তরাজ্যের প্রিন্সেস অব ওয়েলস কেট মিডলটন বেশ কিছুদিন ধরে প্রকাশ্যে না আসায় তাঁকে নিয়ে অনেক গুঞ্জন চলছিল। ব্রিটিশ রাজপরিবারের এই সদস্য ইতিমধ্যে জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি ক্যানসারের চিকিৎসা নিচ্ছেন। রাজপরিবার–সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখন কেট মিডলটনকে নিয়ে সব গুঞ্জনের অবসান হওয়া উচিত।
গত জানুয়ারিতে কেট মিডলটনের পেটে অস্ত্রোপচার হয়। তার পর থেকে তাঁকে আর জনসমক্ষে দেখা যাচ্ছিল না। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, বিভিন্ন সংবাদপত্র, এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের কিছু টক শোতেও তাঁকে নিয়ে নানা ধরনের আলোচনা ও গুঞ্জন চলছিল।
গতকাল শুক্রবার প্রচারিত এক ভিডিও বার্তায় কেট জানান, তিনি ক্যানসারের চিকিৎসা নিচ্ছেন।
রাজপরিবার–সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহকারী ক্লদিয়া জোসেফ এক সাক্ষাৎকারে বলেন, তিনি আশা করেন, এর মধ্য দিয়ে গুঞ্জনের অবসান হবে। তবে আদৌ গুঞ্জনের অবসান হবে কি না, তা নিয়ে সন্দিহান তিনি।
জোসেফ বলেন, অবশ্যই তাঁরা আশা করতে পারেন যে গুঞ্জনের অবসান হবে। তবে বাস্তবতা হলো, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো এবং মানুষেরা তাদের চারপাশের মানুষদের নিয়ে অনেক বেশি ট্রল করে, ভিডিও ভাইরাল করে...তারা গুঞ্জন ছড়ায় এবং আজেবাজে কথা বলে।
জানুয়ারিতে অস্ত্রোপচারের পর কেটের কার্যালয় কেনসিংটন প্রাসাদ থেকে বলা হয়েছিল, ইস্টার (৩১ মার্চ) পর্যন্ত কেট তাঁর কাজে ফিরতে পারবেন না। সে অনুযায়ী, এমনিতেই কেট মিডলটনের ৩১ মার্চের আগে কাজে ফেরার কথা নয়। তারপরও তাঁকে নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে গুঞ্জন চলছিল।
কেটের স্বামী এবং ব্রিটিশ রাজসিংহাসনের উত্তরাধিকারী প্রিন্স উইলিয়াম ‘ব্যক্তিগত কারণ’ দেখিয়ে উইন্ডসর ক্যাসেলে তাঁর ধর্মপিতা গ্রিসের প্রয়াত রাজা দ্বিতীয় কনস্ট্যানটাইনের স্মরণে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে না যাওয়ায় এ গুঞ্জন আরও জোরালো হয়ে ওঠে।
মার্চের শুরুর দিকে তিন সন্তান প্রিন্স জর্জ, প্রিন্স লুইস, প্রিন্সেস শার্লটসহ কেটের একটি ছবি কেনসিংটন প্রাসাদ প্রকাশ করে। তবে সে ছবি সম্পাদিত হওয়ায় তা নিয়ে গুঞ্জন আরও ডালপালা গজাতে থাকে।
এমনকি সম্প্রতি উইলিয়ামের সঙ্গে কেট একটি পার্শ্ববর্তী দোকানে গেছেন—এমন একটি ভিডিও প্রকাশের পরও ষড়যন্ত্রতত্ত্ব থামেনি।
কেনসিংটন প্রাসাদ বলছে, প্রিন্সেস চেয়েছিলেন পারিবারিকভাবে তিনি ও প্রিন্সের যখন মনে হবে এখন এ তথ্য জানানো দরকার, তখন তা জানাতে।
কেটের স্বামী প্রিন্স উইলিয়াম তাঁর পারিবারিক গোপনীয়তা বজায় রাখার ক্ষেত্রে সচেতন থাকেন। ২০১২ সালে একটি ফরাসি সাময়িকীতে কেটের কিছু টপলেস ছবি প্রকাশের পর উইলিয়াম খুব ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন। অনেক দূর থেকে ছবিগুলো তোলা হয়েছিল।
রাজপরিবার–সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কেট যে কায়দায় ভিডিও বার্তাটি দিয়েছেন, তা যেমন সাম্প্রতিক গুঞ্জনগুলোকে প্রতিফলিত করেছে, তেমনি তা বন্ধ করার প্রয়োজনকে জোরালো করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পিপল সাময়িকীতে রাজপরিবারের খবরসংক্রান্ত জ্যেষ্ঠ সম্পাদক এরিন হিল বলেন, ‘এমন কিছু দেখে আমরা অভ্যস্ত নই। আমি মনে করি, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের যে উন্মাদনা এবং যেসব গুঞ্জন তিনি মোকাবিলা করছেন, সেগুলোর প্রতি সরাসরি জবাব ও প্রতিক্রিয়া এটি। আমি মনে করি, কেট চাইছিলেন না তিনি কী করছেন, তা নিয়ে আর কোনো গুঞ্জন থাকুক। এ জন্য তিনি সশরীর ক্যামেরার সামনে এসেছেন, একেবারে নিজেই এ ঘোষণা দিয়েছেন।’
কয়েক বছর ধরে ব্রিটিশ রাজপরিবারের সদস্যরা কঠিন সময় পার করছেন। কেটের ক্যানসারের চিকিৎসা চলার খবরটি এমন সময়ে প্রকাশিত হলো, যখন কিনা তাঁর শ্বশুর রাজা তৃতীয় চার্লসও ক্যানসারে ভুগছেন। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে মা রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুর পর ব্রিটিশ রাজসিংহাসনে বসেন চার্লস। এর ১৮ মাসেরও কম সময় পর তিনি ক্যানসারে আক্রান্ত হন।
তা ছাড়া উইলিয়ামের ছোট ভাই হ্যারি ও তাঁর স্ত্রী মেগান ২০২০ সালে ক্যালিফোর্নিয়ায় চলে যাওয়ার পর থেকে তাঁদের সঙ্গে রাজপরিবারের নানা বিরোধের খবর সামনে এসেছে।